তানোরের ৮ জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড মঞ্জুর

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রাজশাহীর তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের ডাঙাপাড়া গ্রামের ‘জঙ্গি বাড়িতে’ অভিযানের ঘটনায় গ্রেফতার আট জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৩ জুন) বেলা ৩ টার দিকে তাদের রাজশাহীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে (৩) হাজির করে ১৫ দিনের রিমান্ডের আবেদ চাই তানোর থানা পুলিশ।

পরে শুনানি শেষে আদালতের বিচারক সাইফুল ইসলাম তাদের ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এছাড়া অন্য দুজন নারীর কোলে শিশু থাকায় তাদের জন্য পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে তাদের কোর্ট হাজতে নেওয়া হয়। আজ থেকেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরুর কথা রয়েছে। রাজশাহীর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক খুরশিদা বানু কনা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বাড়ির মালিক ও উপজেলার গৌরাঙ্গপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রমজান আলী (৫৪), তার স্ত্রী আয়েশা বেগম (৫০), তাদের দুই ছেলে ইব্রাহীম হোসেন (৩৫) ও ইসরাফিল হোসেন (২৬), রমজানের মেয়ে হাওয়া খাতুন (২০) এবং তার স্বামী রবিউল ইসলামের (২৮) জন্য ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। আর ইব্রাহীমের স্ত্রী মর্জিনা খাতুন (২৮) ও ই¯্রাফিলের স্ত্রী হারেছা খাতুনের (২১) কোলে শিশু সন্তান আছে বিবেচনায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে এই ৮ জনকে আসামি করে রাজশাহীর তানোর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। তানোর থানার পিএসআই জাহিদুল ইসলাম খন্দকার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তানোর থানায় মামলাটি দায়েরের পর ওই এতে গ্রেফতার দেখিয়ে দুপুরে তাদের আদালতে পাঠানো হয়।
রাজশাহীর তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম জানান, থানার পিএসআই জাহিদুল ইসলাম খন্দকার বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন। আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে ১৫ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছি। কিন্তু শুনানি শেষে আদালতের বিচারক ৬ জনের বিরুদ্ধে ১০ দিন করে এবং দুজন নারী বিরুদ্ধে ৫দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। বিকেলের মধ্যেই তাদের থানায় আনা হবে।
ওসি জানান, পুলিশের প্রথম দফার অভিযানে মর্জিনার তিন মেয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তামান্না খাতুন (০৮), তাসকিরা খাতুন (০৪), ছয় মাসের শিশু তানসিরা এবং হাওয়া খাতুনের তিন মাস বয়সী এক শিশুকেও উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে এই চার শিশুর মধ্যে তাসকিরা ও তামান্নাকে তাদের স্বজনদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। অন্য দুই শিশু তাদের মায়ের সাথে থাকবে।
এর আগে গত রোববার (১১ জুন) গভীর রাতে বগুড়া গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও রাজশাহী জেলা পুলিশ রমজানের বাড়ি ঘিরে অভিযান চালায়। সেখান থেকে চার শিশুসহ ১২ জনকে আটক করে পুলিশ। পরে ওই বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৫ রাউন্ড গুলিসহ একটি পিস্তল উদ্ধার করা হয়। সোমবার (১২ জুন) রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল বাড়িটি দ্বিতীয় দফায় অভিযান চালায়।
এ সময় অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন রিভার্ট’। অভিযানে বাড়ি থেকে তিনটি সুইসাইডাল ভেস্ট উদ্ধার করে নিষ্ক্রিয় করা হয়। এছাড়া বাড়ি থেকে কিছু জিহাদি বই, সিডি, নগদ প্রায় দুই লাখ টাকা, একটি ল্যাপটপ, পাঁচটি মোবাইল ফোন ও দুটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
স/আর