ঢাবিকে রাতে ৩ ছাত্রী হলে বিক্ষোভ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও গ্রেফতার নেতাদের মুক্তির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রী হলে বুধবার রাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সাধারণ ছাত্রীরা।

বেগম রোকেয়া হলে রাত সাড়ে ১০টা, শামসুন্নাহার হলে রাত সাড়ে ১১টা এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।

রাতে বিক্ষোভকারী ছাত্রীরা জানান, নিরাপদ ক্যাম্পাস ও ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে তারা বিক্ষোভ করছেন। একই দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় টিএসসিতে অবস্থান নেবেন তারা।

এদিকে, হলে হলে বিক্ষোভের খবর পেয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা টিএসসি ও ভিসির বাসভবন চত্বরসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে রাতেই সতর্কাবস্থান নেয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রোকেয়া হলের এক ছাত্রী বলেন, ছাত্রলীগ আমাদের নিরপরাধ ভাই-বোনদের ওপর হামলা করেছে। আমরা এর বিচার চাই। একই সঙ্গে মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় আটক রাশেদসহ সবার মুক্তি চাই।

তিনি বলেন, রাশেদকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে। অবিলম্বে তার মুক্তি চাই। আমরা নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই। আমাদের আন্দোলনকে রাজনৈতিক ইস্যু বানানোর চেষ্টা হচ্ছে। আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলছি।

বিক্ষোভে ‘আর নয় ভয়, এবার হবে জয়’, আমার ভাই নিখোঁজ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, হামলা-মামলা হুলিয়া, নিতে হবে তুলিয়া’, ‘রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন রুখ দাঁড়াও ছাত্র সমাজ’ স্লোগান দেন ছাত্রীরা।

এর আগে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মানববন্ধন করেন। এ সময় দেয়া বক্তৃতায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটা ‘মৃত্যুপুরী’তে পরিণত হয়েছে। এ ‘মৃত্যুপুরী’র অবসান কে ঘটাবে। এখন আর সময় নেই। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এখন আর মানববন্ধন, বিবৃতি- এগুলোর সময় নেই। এখন আমাদের সরাসরি কর্মসূচিতে যেতে হবে। একজন হোক, দুজন হোক তাদের নিয়ে মাঠে থাকতে হবে।

দুপুরে বিক্ষোভকারীরা অনেকগুলো প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের প্রশ্নগুলোর মধ্যে রয়েছে- কেন যৌক্তিক দাবির জন্য নিরপরাধ ছাত্র রাশেদকে রিমান্ডে নেয়া হবে? কেন আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা হবে? যাদের জেলে নেয়া হয়েছে এখনও কেন তাদের ছেড়ে দেয়া হচ্ছে না? আন্দোলনকারী মেয়ের গায়ে কেন হাত তোলা হবে?

কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে পুলিশের হাতে লাঞ্ছিত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হক।

এর প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনের আয়োজন করেন।

এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন।

এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতাদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছে ৭টি বাম ছাত্র সংগঠনের মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্র জোট।

এছাড়া এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকদের সাদা দল।

অপরদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা সোমবার থেকে তারা ক্লাস বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন।