ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতিগতি কোন দিকে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

সিল্কসিটি নিউজ ডেস্কঃ

সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়াদ এখন ৩০ দিনেরও কম। নির্বাচনে হেরে গেলেও ট্রাম্পকে নিয়ে উদ্বেগ বিরাজ করছে আমেরিকার রাজনৈতিক মহলে। শেষ দিনগুলো নিয়ে তাঁর মতিগতি ভালো না। আবার নতুন করে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে ট্রাম্প শিবির। ট্রাম্পের আইনজীবী আবার হুমকি দিয়েছেন, লড়াই নাকি সবে শুরু হয়েছে!

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঘিরে বেশ কিছু সন্দেহভাজন লোকজনের সমাগম ঘটেছে এখন। তাঁদের নিয়ে হোয়াইট হাউসে টানা সভা করছেন ট্রাম্প। এসব সভায় যোগ দিচ্ছেন আইনজীবী সিন্ডি পাওয়েল, আদালতে দণ্ডিত এবং সাধারণ ক্ষমায় মুক্ত হওয়া সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন, রক্ষণশীল কৌশলবিদ স্টিভ ব্যানন প্রমুখ। সভার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা সিএনএন বলেছে, শেষ দিনগুলো নিয়ে ট্রাম্পের কিছু উপদেষ্টাও এখন শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

আইনজীবী সিন্ডি পাওয়েলকে সম্প্রতি ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। সংবাদ বেরিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিন্ডি পাওয়েলকে স্পেশাল কাউন্সেল হিসেবে নিয়োগ দিতে পারেন। এ নিয়ে বিচার বিভাগকে চাপ দিচ্ছেন। পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া অ্যাটর্নি জেনারেল উলিয়াম বার বলেছেন, ভোট কাচুপি নিয়ে এমন স্পেশাল কাউন্সিল নিয়োগের কোনো প্রয়োজন নেই। এ সপ্তাহই উইলিয়াম বার হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নিচ্ছেন। পরবর্তী সময়ে ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেলকে দিয়ে এমন কিছু করার প্রয়াস নিতে পারেন ট্রাম্প।

ট্রাম্পের আইনজীবী রুডি জুলিয়ানি গতকাল সোমবার বলেছেন, পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের আদালতের রায় পাল্টে দেওয়ার প্রয়াসের মাধ্যমে তাঁদের নতুন লড়াই শুরু হচ্ছে। ট্রাম্প শিবির থেকে ইউএস সুপ্রিম কোর্টে নতুন আবেদন জানানো হয়েছে। পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের আদালতে ডাক ভোট বাতিলের তিনটি মামলা খারিজ করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টে এ মামলাগুলোর রায়ের আপিল করা হয়েছে। মামলায় সুবিধা পেলে দ্রুততার সঙ্গে অন্য কয়েকটি রাজ্যের এমন খারিজ হওয়া মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাবেন বলে রুডি জুলিয়ানি বলেছেন।

উল্লেখ্য, গত ৩ নভেম্বরের নির্বাচনের পর ট্রাম্প শিবির থেকে ভোট জালিয়াতির ভুয়া অভিযোগ এনে অর্ধশতাধিক মামলা করা হয়। অধিকাংশ মামলাই আদালতে খারিজ হয়ে গেছে। কোথাও জালিয়াতির কোনো প্রমাণ তাঁর পক্ষে উপস্থাপন করা সম্ভব হয়নি।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে এখন মূলত কোনো রাষ্ট্রীয় কাজকর্মে নেই। সভা করছেন এবং বলে চলেছেন, তিনি ভূমিধস বিজয় পেয়েছেন নির্বাচনে। এ নির্বাচন ডেমোক্র্যাটরা চুরি করে নিয়ে গেছে বলে ট্রাম্প বলছেন। গতকাল নিজের দলের লোকজনের সঙ্গে এক টেলিকনফারেন্সে ট্রাম্প বলেছেন, ‘নির্বাচনে আমরাই জয়ী হয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমাদের কিছু সাহসী কংগ্রেসম্যান দরকার।’ এ ছাড়া বিচার বিভাগের সহযোগিতা হলেই নির্বাচনে তাঁর জয় ফিরে পাবেন বলে ট্রাম্প বলেছেন।

৬ জানুয়ারি কংগ্রেসে শতাধিক রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ইলেক্টোরাল ভোটের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আপত্তি উপস্থাপন করবেন। এসব আপত্তি শোনার জন্য কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনের সভাপতি ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স সময় দেবেন। দীর্ঘ বিতর্কের মাধ্যমে দিন গড়ানোর পর এ–সংক্রান্ত কোনো বিরোধ নিয়েও ট্রাম্প শিবির থেকে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার প্রয়াস রয়েছে।

বড়দিনের ছুটিতে এ সপ্তাহেই ডোনাল্ড ট্রাম্প ফ্লোরিডার ‘মার এ লাগো’ যাচ্ছেন। অবকাশ থেকে তিনি ফিরে আসবেন বলে জানানো হয়েছে। ২০ জানুয়ারি মার্কিন সংবিধানবর্ণিত দিনে নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন। তখনো পরাজয় না মেনে নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে অভিযোগ করে হোয়াইট হাউস ত্যাগ না করলে কী করা হবে, এ নিয়ে ভেতরে-ভেতরে প্রস্তুতি রয়েছে বলে সিএনএন প্রতিবেদন করেছে।

২০ জানুয়ারি দুপুর পর্যন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্প কতটা আগ্রাসী হয়ে কী কী করতে পারেন, এ নিয়ে নানা আলোচনা চলছে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বত্র। সে পর্যন্ত ওয়াশিংটন নিয়ে উৎকণ্ঠা আর উত্তেজনা চলমান থাকছে বলেই মনে করা হচ্ছে।

সুত্রঃপ্রথম আলো