ডেমরায় অর্ধশতাধিক পরিবারের ওপর হামলা, আহত ১০

রাজধানী ঢাকার ডেমরা শুকুরশী এলাকায় নব্য জয়নাল হাজারী বাহিনী তাণ্ডব চালিয়ে অর্ধশতাধিক পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়ে কমপক্ষে ১০ জনকে আহত করে জমি ছাড়ার হুকুম দিয়েছেন। এতে ওই নিরীহ পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন। শনিবার বিকেলে ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী হাজারী বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য শতাধিক ভুক্তভোগী একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা জানান, ডেমরা শুকুরশী গ্রামের মৃত আব্দুল জাব্বারের ছেলে ও সারুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি জয়নাল হাজারী ওরফে নব্য হাজারী আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য সদ্য প্রয়াত হাবিবুর রহমান মোল্লা ও বর্তমান সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মনুর নাম ভাঙিয়ে এলাকায় জমি দখল, জুট ব্যবসা নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছেন। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে তার সখ্যতা থাকায় কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না।

শুকুরশী গ্রামের ভুক্তভোগী সালাহ উদ্দিন জানান, আমরা ১০০ বছর যাবৎ বাপ-দাদার পৈতৃক সম্পত্তিতে বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছি। সম্প্রতি সন্ত্রাসী ভূমিদস্যূ নব্য জয়নাল হাজারীর চোখ পড়ে আমাদের জমির ওপর। শনিবার জয়নাল হাজারী ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী বাহিনী দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালিয়ে হাসিনা বেগম, খোরশেদা বেগম, হেলেনা বেগম, কুলসুম আক্তার, মৌমিতা বেগম, লাকি চাঁন, হোসনে আরা, পারভিন আক্তার, রহিমা বেগমসহ কমপক্ষে ১০ জনকে পিটিয়ে আহত করে।

এ সময় ডেমরা থানা পুলিশের সদস্য শাহজাহান মিয়া ও বিজয় কুমার তাদের সঙ্গে ছিলেন। তিনি বলেন, আমরা গরিব বলে আমাদের শেষ সম্বল ভিটে-মাটিটুকু দখল করার জন্য হাজারী ও তার বাহিনীর সদস্যরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

আহত হাসিনা বেগম বলেন, আমাদের সম্পত্তি দখল করার জন্য জয়নাল হাজারীর লোকজন কয়েক দিন পর পর আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে জায়গা দখল করার চেষ্টা চালায়। তাদের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি।

ফরিদা বেগম বলেন, জয়নাল হাজারীর নির্দেশে বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী বাহিনী পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আমাদের বাড়িঘরে হামলা চলিয়ে কমপক্ষে ১০ জনকে আহত করেছে। আমরা থানা পুলিশকে বারবার অবহিত করার পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

কুলসুম বেগম বলেন, আমরা আমাদের জীবন দিয়ে হলেও আমাদের শেষ সম্বল পৈতৃক সম্পতি রক্ষা করব। সন্ত্রাসীরা যতই অত্যাচার করুক আমরা ভিটেমাটি ছাড়ব না।

মমিনা বেগম বলেন, জয়নাল হাজারী ও তার লোকজন এলাকায় অত্যন্ত প্রভাবশালী হওয়ায় আমরা তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাই না। তার সঙ্গে বড় বড় নেতাদের সম্পর্ক থাকায় এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে গরিব অসহায় ও নিরীহ লোকদের জায়গা জমি দখল করে অল্প সময়ে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সারুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি জয়নাল হাজারী  জানান, আমি কারো জায়গা দখল করতে যায়নি ও কারো ‌ওপর হামলা করিনি। আমাকে ছোট করার জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

সারুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সহিদুল ইসলাম কন্ট্রাক্টর  জানান, আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে কেউ অপকর্ম করলে তার দায়ভার আমরা নেব না। অন্যায়ের শাস্তি তাকেই পেতে হবে।

ডেমরা থানা পরিদর্শক (ওসি) সিদ্দিকুর রহমান  জানান, আমাদের থানা পুলিশ ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নয়।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ