ট্রাম্পের পক্ষে নেই দলেরও অনেকে

মাকির্ন কংগ্রেসের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে দুবার অভিসংশিত হয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের জন্য, দেশের জন্য নেতিবাচক ইতিহাসের জন্ম দিয়েছেন। আর সেই সঙ্গে দলে সৃষ্টি করেছেন এক অপ্রত্যাশিত বিভক্তি। সেই বিভক্তি ট্রাম্পকে সরানো নিয়ে নয়, বরং তা অভিশংসনপ্রক্রিয়ার গতি নিয়ে। কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে গত বুধবার ট্রাম্পকে অভিশংসন করার জন্য ডেমোক্র্যাট শিবিরের পক্ষ নেন ১০ রিপাবলিকান। আর না করার পক্ষে পক্ষে ছিলেন ১৯৭ রিপাবলিকান।

অভিশংসনের পক্ষে থাকা রিপাবলিকানদের মধ্যে ছিলেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির মেয়ে লিজ চেনি, অ্যান্থনি গনজালেজ, পিটার মেইজার, ড্যান নিউহাউস, অ্যাডাম কিনজিনজার, জন ক্যাটকো, ফ্রেড আপটন, জেইমি হেরেরা বিউটলার, টম রাইস ও ডেভিড ভেলাডো। তাঁরা ট্রাম্পকে বিশ্বাসভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত করেছেন।

বিতর্কে চেনি অভিযোগ করেন, দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প যে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, তেমনটা আগে কেউ কখনো করেনি। গনজালেজের অভিযোগ—ক্যাপিটল ভবনে সহিংসতার সময় দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর কর্মকাণ্ড দেশের গণতন্ত্রের জন্য ‘মৌলিক হুমকি’, এই মন্তব্যও করেন এই রিপাবলিকান নেতা। ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডকে ‘গণতন্ত্রের ভবিষ্যতের জন্য হুমকি’ অভিহিত করা আরেক রিপাবলিকান হলেন ক্যাটকো। কোনোভাবেই ট্রাম্পকে ছাড় দেওয়া যাবে না বলে তিনি মনে করেন।

হাউসের বয়োজ্যেষ্ঠ রিপাবলিকান নেতা নিউহাউসও বলেন, ‘ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডের কোনো ক্ষমা হয় না।’

ট্রাম্পকে অভিশংসন করার পক্ষে টম রাইসের ভোট সবচেয়ে বেশি বিস্মিত করেছে পর্যবেক্ষকদের। কারণ তাঁর অঙ্গরাজ্য সাউথ ক্যারোলাইনা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকালে ট্রাম্পকে সবচেয়ে জোরালো সমর্থন দিয়েছে। সেই রাইস বলেন, গত চার বছরে সব সময় ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়ে এলেও ক্যাপিটল ভবনে হামলা রোধে প্রেসিডেন্টের ব্যর্থতা কোনোভাবেই মানতে পারছি না। ট্রাম্পের এই ব্যর্থতা ‘ক্ষমার অযোগ্য’ বলেই তিনি অভিশংসনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।

১৯৭ রিপাবলিকান ট্রাম্পের পক্ষে ভোট দিলেও বেশির ভাগই কিন্তু তাঁকে অভিশংসন থেকে বাঁচানোর জন্য কথা বলেননি। তাঁদের আপত্তি অভিশংসনে তাড়াহুড়া নিয়ে। তাঁদের মতে, অভিশংসনের মতো এত গুরুতর সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ডেমোক্র্যাটদের তাড়াহুড়া করা ঠিক হয়নি। দেশের ঐক্য রক্ষার স্বার্থে এ ব্যাপারে রয়েসয়ে তাঁদের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

অভিশংসনসংক্রান্ত ভোটাভুটির আগে বিতর্কে হাউসের শীর্ষ রিপাবলিকান নেতা কেভিন ম্যাককার্থি বলেন, ‘এত অল্প সময়ে প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করা ভুল হবে।’ তিনি এটাও বলেন, ‘এর মানে এই নয় যে প্রেসিডেন্ট দায়মুক্তি পেয়ে গেলেন। কংগ্রেসে বুধবার (গত ৬ জানুয়ারি) দাঙ্গাকারীদের হামলার দায় প্রেসিডেন্টের ওপরই বর্তায়।’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষ না নিয়েই আরেক রিপাবলিকান জিম জর্ডান অভিযোগ করেন, স্রেফ প্রেসিডেন্টকে বাগে আনতে গিয়ে ডেমোক্র্যাটরা আগপিছ না ভেবে অভিশংসনের পথ বেছে নিয়েছে। ওহাইওর এই রিপাবলিকান নেতা মনে করেন, ডেমোক্র্যাটরা ‘রাজনৈতিক প্রতিশোধপরায়ণতার’ কারণেই অন্য কোনো সমাধানের পথে না গিয়ে সরাসরি ট্রাম্পকে অভিশংসন করার পথে গেছে।

 

সূত্র : কালের কণ্ঠ