ট্রাম্পকে নিয়ে রিপাবলিকান দলে আবারও বিভক্তি

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে এক নজিরবিহীন সংকটে পড়েছে তাঁর দল রিপাবলিকান পার্টি। দলের একটা বড় অংশ ট্রাম্পকে এই নির্বাচনে দেখতে চায় না। আর এই না চাওয়াদের দল ভারী হচ্ছে প্রতি পলে। গত সোমবার মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের রিপাবলিকান স্পিকার পল রায়ান জানিয়েছেন, ট্রাম্পের হয়ে আর প্রচারে নামছেন না তিনি। বরং হাউসে দলের সদস্যদের জন্য কাজ করতে চান তিনি। এ ঘোষণা আসামাত্র দলের কট্টর রক্ষণশীল অংশ প্রবল প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। তাদের মতে, ট্রাম্পকে ‘ডাম্প’ করার সময় এখনো আসেনি। আর ট্রাম্প এর প্রতিক্রিয়ায় রায়ানকে ‘দুর্বল’ ও ‘অকার্যকর’ নেতা হিসেবে অভিহিত করেন।

 

 

এদিকে এনবিসি নিউজ-ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পরিচালিত জরিপে দুই অঙ্কের সংখ্যায় এগিয়ে আছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন। বিতর্কেও তাঁরই জয় হয়েছে বলে মত দিয়েছে বেশির ভাগ জরিপ। যদিও প্রথম  বিতর্কের মতো এবারও ট্রাম্প নিজেই দাবি করেছেন যে বিতর্কে জয় তাঁর হয়েছে। শুধু জয় নয়, বিশাল জয় পেয়েছেন তিনি।

 

 

ট্রাম্পের প্রার্থিতার পথে রায়ানের এই সিদ্ধান্তকে একটি বড় আঘাত হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে। ট্রাম্পকে নিয়ে দলে শুরু থেকেই অসন্তোষ আছে। বিকল্প প্রার্থী পাওয়া যায়নি বলেই গোড়াতে বাদ পড়েননি তিনি। তবে এখন, গত শুক্রবারের ভিডিও, আয়কর সমস্যা, লাগামহীন এলোমেলো বক্তব্যের কারণে দলের ঐক্যের দোহাই দিয়ে এত দিন পর্যন্ত যাঁরা তাঁর সঙ্গে ছিলেন তাঁরাও পালানোর পথ খুঁজছেন।

 

 

রায়ান তাঁর সিদ্ধান্ত জানানোর পরপরই টুইট করে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ট্রাম্প, ‘রিপাবলিকান দলের মনোনীত প্রার্থীর জন্য তাঁকে লড়াই করতে হবে না। তিনি তাঁর হাউসের কাজই মন দিয়ে করুন।’ এখানেই থেমে যাননি তিনি। পরে আরো কয়েকটি টুইটে তিনি বলেন, ‘পল রায়ান একজন দুর্বল ও অকার্যকর নেতা। ভালোই হলো, রায়ানের শিকল থেকে মুক্তি পেলাম। এখন দেশের জন্য আমার মতো করে কাজ করা যাবে।’

 

 

দলীয় এক সম্মেলনে এ অবস্থানের কথা জানান রায়ান। দলের প্রার্থী পরাজিত হবেন—এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, হাউসে দলের সদস্যদের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে চান তিনি। ট্রাম্পের প্রচারসভায় তিনি আর যাবেন না। তবে প্রার্থীর ওপর থেকে অনুমোদনও তুলে নিচ্ছেন না।

 

 

তাঁর এই বক্তব্যের এক ঘণ্টার মধ্যেই দলের ভেতর প্রবল প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। হাউসের রিপাবলিকান সদস্য ডান রোরাবাচার বলেন, ট্রাম্পকে ফেলে রিপাবলিকানদের এভাবে পালানোর সিদ্ধান্ত কাপুরুষোচিত। অ্যারিজোনার রিপ্রেজেন্টেটিভ টেন্ট ফ্রাংকস বলেন, সময়ের আগেই সম্ভাবনা নষ্ট করছেন তাঁরা।

 

 

রায়ানের সঙ্গে ট্রাম্পের সুসম্পর্ক কখনোই ছিল না। পাঁচ মাস ধরে কাজ করার মতো একটা সম্পর্ক তৈরি হয় তাঁদের মধ্যে। এবার সেটিও উধাও হলো।

 

 

ট্রাম্পকে ছেড়ে যাওয়া রিপাবলিকান নেতাদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এ পর্যন্ত প্রথম সারির ১৬০ রিপাবলিকান নেতা নির্বাচনে আর ট্রাম্পকে সমর্থন করবেন না বলে জানিয়েছেন।

 

 

তবে রায়ানের সমর্থন প্রত্যাহারের আগেই যে ট্রাম্পের প্রচার পরিস্থিতি খুব ভালো ছিল এমন নয়। অন্তত জরিপ সেই কথাই বলছে। এনবিসি-ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল পরিচালিত বিতর্ক-পরবর্তী এ জরিপে দেখা যায়, অংশগ্রহণকারীদের ৪৬ শতাংশ হিলারি এবং ৩৫ শতাংশ ট্রাম্পের পক্ষে।

 

 

এদিকে প্রার্থীদের দ্বিতীয় বিতর্কের আগেই প্রায় সাড়ে চার লাখ আগাম ভোট দেওয়া হয়ে গিয়েছে বলে জানা গেছে।

সূত্র: কালের কন্ঠ