টুকটুকে লাল দুপুরমণি

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

অরুণ রঙের অনিন্দ্য সুন্দর ফুল দুপুরমণি। ফুলটি বড্ড নিয়মে বাঁধা। ফোটে দুপুরে, ঠিক ১২টায়। এ জন্য এর নাম দুপুরমণি। এটি এক বুনো প্রকৃতির অনাদৃত গাছ। তবে রক্তরাঙা ফুলগুলো যখন ফোটে তখন কিন্তু এর সৌন্দর্যকে আর উপেক্ষা করা যায় না। টুকটুকে লাল। পিরিচের আকৃতিতে ছোট ছোট ফুল ফুটে গাছ আলো করে।

এ ফুল দুপুরে ফোটে বিকেল হলেই ধীরে ধীরে নেতিয়ে পড়ে। ফুলপ্রেমীরা বাগানের শোভাবর্ধনে এটি বাড়ির আঙিনায় বা বাগানে বুনে থাকেন।

ভেষজ চিকিৎসায় এ গাছের ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে। একে কেউ বলেন দুপুরচণ্ডি। কেউ ডাকেন দুপুর মালতি নামে। এ ছাড়াও এ ফুল অঞ্চলভেদে বহুনামে পরিচিত।

এ ছাড়াও প্রচলিত বন্ধুক, কটলতা বন্ধুলী, দুপুরচণ্ডি বহুনামে পরিচিত। তার মধ্যে Middaz Flower, Scarlet Mallow, Copper Cups, Florimpia, Noon Flower, Scarlet Pentapetes, Scarlet phoenician নামগুলো উল্লেখযোগ্য।

বাংলাদেশ প্ল্যান্ট ট্যাক্সোনোমিস্ট সমিতির সাধারণ সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, দুপুরমণি গাছের বৈজ্ঞানিক নাম Pentapetes phoenicea যা Malvaceae পরিবারের একবর্ষজীবী গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। এর আদিনিবাস দক্ষিণ এশিয়া; পরে এটি সমগ্র দুনিয়ায় বিস্তার লাভ করেছে। একহারা লম্বা গাছ, কোমর সমান উঁচু, ডালপালা কম, কিনার কাটাকাটা, আগা সরু। পাতাগুলো ৬ থেকে ১০ সেমি. হয়। ফুল দুই সেন্টিমিটার চওড়া. পাঁচটি চ্যাপ্টা পাপড়ি, সিঁদুরে লাল, কখনও হালকা গোলাপি বা সাদা। কোনো গন্ধ নেই। পাঁচ প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট গোলাকৃতি ফল হয়, প্রতিটি প্রকোষ্ঠে ৮- ১২টি করে বীজ থাকে।

শৌখিন ফুলপ্রেমী নাহিদা জেনী জানান, পাপড়ির সাথে চিকন ফিতার মতো লকলকে কয়েকটি উপাঙ্গ দুপুরমণি ফুলের শোভা বাড়ায়। এর কাণ্ড সাধারণত এক মিটার পর্যন্ত উচ্চতাবিশিষ্ট হয়। শাখাগুলো লম্বা এবং বেশ ছড়ানো। ফুলগুলো দুপুরে ফোটে আবার বিকেলেই ঝরে পড়ে। বাগানের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এ ফুলের জুড়ি মেলা ভার।

পথের ধারে, পরিত্যক্ত জঙ্গলে শুষ্ক স্থানে অনেকটা অবহেলায় গাছটি বেড়ে উঠতে দেখা যায়। এ গাছ পানি জমে থাকে এমন স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় কিংবা খুব ছায়াযুক্ত স্থানে বেশি দিন বাঁচতে পারে না। সাধারণত বীজ রোপণের মাধ্যমে এর বংশবৃদ্ধি হয়ে থাকে। তবে শৌখিন ফুলপ্রেমীরা নিজেদের বাগানে, ছাদে, টবে কিংবা পার্কে এ ফুল গাছ লাগান।