টিসিবি কার্ডের আওতাভুক্ত নয় এমন স্বল্প আয়ের পরিবারের মানুষদের জন্য ভর্তুকি মূল্যে আলু,পেঁয়াজ, ডাল ও সয়াবিন তেল বিক্রির কার্যক্রম শুরু করেছে সরকার। আর তাই উচ্চমূল্যের বাজারে অর্ধেক দামে ট্রাকসেল থেকে পণ্য কিনতে জড়ো হয়েছেন অনেকে। তবে লম্বা সারিতে দীর্ঘসময় অপেক্ষা করেও মিলছে না টিসিবির টোকেন নামক ‘সোনার হরিণ’।
সরেজমিনে দেখা যায়, টোকেনের মাধ্যমে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থেকেও টিসিবির পণ্য সংগ্রহের টোকেন পাচ্ছেন না অনেকে। ট্রাক থেকে ১০-২০টি করে টোকেন সরবরাহ করা হলেও সেটি অপ্রতুল। টোকেন পেতে সেখানে অপেক্ষায় আছেন শত শত মানুষ। সেখানে মাঝেমাঝেই হুড়োহুড়ি আর হইহুল্লোড় দেখা যায়। এতসব শুধু ‘সোনার হরিণ’ নামক একটি টিসিবি টোকেনের জন্য।
এরশাদুল হক নামের আরেকজন বলেন, রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি এক ঘণ্টা। টোকেন পাইছি অনেক কষ্টে কিন্তু মালামাল শেষ প্রায়। পাব কি না জানি না। আমাগো মতো গরিবগে কপালে কি আর এসব জিনিস আছে?
এর আগে টিসিবির ভ্রাম্যমাণ ট্রাকসেলের উদ্বোধনের করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ভোক্তা অধিকারের পরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান ও টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান।
তার আগে সোমবার (১৩ নভেম্বর) সচিবালয়ে বাণিজ্য সচিব এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আগামীকাল (মঙ্গলবার) থেকে রাজধানী ঢাকাতে ‘ট্রাকসেল’ শুরু হবে। ২৫ থেকে ৩০টি স্থানে এই ট্রাকসেল হবে। সেখান থেকে যে কেউ দুই কেজি ডাল, আলু, পেঁয়াজ, সয়াবিন তেল নিতে পারবেন।
তিনি বলেন, এই মুহূর্তে চিনি দেওয়া যাচ্ছে না। চিনি পাওয়া গেলে দেওয়া হবে। এখন প্রতি কেজি ডাল ৬০ টাকা, সয়াবিন তেল ১০০ টাকা লিটার, পেঁয়াজ ৫০ টাকা, আলু ৩০ টাকা কেজি দরে দেওয়া হবে।
নতুন করে এই ট্রাকসেল কতদিন চলবে– এমন প্রশ্নের জবাবে তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আগে টিসিবি যে ট্রাকসেল করত, সেখান থেকে আমরা কিন্তু বেশি মানুষকে দিতে পারতাম না। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে দেশে দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেল। সেটা সামাল দেওয়ার জন্য তখন এক কোটি পরিবারকে টিসিবির মাধ্যমে কার্ড করে দেওয়া হয়। আমরা এখনও সেভাবে তাদের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। এখন সারা দেশের মানুষ এই সুবিধাটা পাচ্ছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি জেলায় ডিজিটাল কার্ড দেওয়া হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে সব জেলায় এই কার্ড বিতরণ করা হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে দ্রব্যমূল্য আমরা কমাতে পারিনি। আসলে আমরা কমাতে চাই। ঢাকা শহরে কিছু ভাসমান মানুষ আছে যাদের টিসিবির কার্ডের আওতায় আনতে পারিনি। সেজন্য ঢাকা শহরে ট্রাকসেল দিতে যাচ্ছি। আশা করি, এটা ভালোভাবে ব্যবস্থাপনা করা যাবে। কাল (মঙ্গলবার) থেকে ২৫ থেকে ৩০ ট্রাকে সেল শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে খাদ্যসামগ্রী যদি বেশি সংগ্রহ করতে পারি, তাহলে ট্রাকসেলের সংখ্যা আরও বাড়বে। কতদিন চলবে সেটা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। এটার সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। আমি আশা করি, জানুয়ারি থেকে এসব পণ্যের দাম কমে আসবে। যদি যথেষ্ট পরিমাণ কমে আসে তাহলে ট্রাক সেল থাকবে না। যদি আমরা মনে করি চালানো দরকার তখন চলবে।