জয়পুরহাট আদালত চত্বরে সাংবাদিকের উপর সন্ত্রাসী হামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, জয়পুরহাট:
জয়পুরহাটে আদালত চত্বরে হত্যা মামলার আসামীদের ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে এক সাংবাদিকের উপর সন্ত্রাসী হামলা করেছে আসামীদের লোকজন। বুধবার দুপুরে আসামীদের আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দ্দেশ দেন।

সেখানে নেওয়ার পথে দৈনিক জয়পুরহাট খবরের বিশেষ প্রতিনিধি মিনহাজুর রহমান ছোটন আসামীদের ছবি তুলতে যায়। এ সময় আদালত চত্বরে অবস্থানরত আসামীদের লোকজন ওই সাংবাদিককে মারপিট করে ক্যামেরা, মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে ওই সাংবাদিককে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করেছে। ওই ঘটনায় সদর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

জয়পুরহাট সদর থানা অফিসার ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে সাংবাদিকদের জানান, বুধবার দুপুরে কালাই থানার আলোচিত দুটি হত্যা মামলার আসামী কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউপির চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা আ ন ম শকওত হাবিব তালুকদার লজিক এবং একই উপজেলার উদয়পুর ইউপির চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা ওয়াজেদ আলীসহ হাজতী ৫০ জনের হাজিরার তারিখ ছিল। আসামীদের জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় আদালত থেকে কারাগারে আনার সময় আদালত চত্বরে ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে আসামীদের লোকজন ওই সাংবাদিকের উপর হামলা করে।

তিনি আরও জানান, ছিনতাই হওয়া ক্যামেরা, মোবাইল ফোন, নগদ টাকা, উদ্ধার করতে এবং জড়িতদের গ্রেফতার করতে পুলিশ কাজ করছে।

আহত সাংবাদিক মিনহাজুর রহমান ছোটন বলেন, আসামী লজিক ও ওয়াজেদের ইশারাতেই তাদের স্বজনরা আমার উপর এ হামলা করেছে। তারা ক্যামেরা, মোবাইল ফোন ও টাকা নিয়ে গেছে। ওরা আসলেই সন্ত্রাসী। এ সময় পুলিশ সহযোগীতা না করলে হয়তো ওরা আমাকে মেরে ফেলতো। ওদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবী করছি।
এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন জয়পুরহাট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস.এম সোলায়মান আলী ও সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক। তারা ক্যামেরা ও নগদ টাকা উদ্ধারসহ দোষীদের আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবী জানান। এদিকে জয়পুরহাটের সকল সাংবাদিকেরাও এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, জয়পুরহাটের কালাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পর আওয়ামীলীগের দু-গ্রুপের সংঘর্ষে ২ জন নিহত ও ১০ জন আহত হওয়ার ঘটনায় মামলার পর গত ৭ এপ্রিল ৪৫ জন আসামী নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন নিতে গেলে বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল-হাজতে প্রেরণের নির্দ্দেশ দিয়েছিলেন। তখন থেকে হত্যার মামলার দুই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ মোট ৫০ জন আসামী বর্তমানে কারাগারে আছেন। বুধবার ছিল ওই মামলার ধায্য তারিখ। সে অনুযায়ী আসামীদের কারাগার থেকে আদালতে উপস্থিত করা হয়েছিল। পরে তাদেরকে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পথে এ ঘটনা ঘটায় আসামীদের স্বজনরা।

স/অ