জয়পুরহাটে শেষ মহুর্তে জমে উঠেছে কোরবানির হাট

জয়পুরহাট প্রতিনিধিঃ
জয়পুরহাটের বিভিন্ন কোরবানির হাটগুলোতে শেষ মহুর্তে জমে উঠেছে । এবার দেশি গরুর আমদানি বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের তুলনায় গরুর দাম বেশ কম। জেলার বিভিন্ন কোরবানির হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে।

 

জেলা পশুপালন অফিস সূত্রে জানা গেছে, কোরবানি ঈদ সামনে রেখে জেলায় এবার বিপুল সংখ্যক গরু লালন-পালন করেছে কৃষক ও খামারিরা। তাদের হিসাব মতে, গত বছর জেলায় ২২ হাজার গরু লালন-পালন হলেও এবার এ সংখ্যা ৩০ হাজারের বেশি। ছাগলের পরিমাণ প্রায় ৭০ হাজার। তা ছাড়া ঈদের হাটে অন্য জেলা থেকেও অনেক গরু আসছে। এ অবস্থায় গত বছরের তুলনায় এবার গরুর দাম অনেক কম।

 

জয়পুরহাট শহরের নতুনহাট ও পাঁচবিবির কোরবানির হাট ঘুরে দেখা গেছে, গত বছরের তুলনায় এবার গরু প্রতি দাম পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকা কম। ওই সব হাটের ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাটে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী দেশি গরুর আমদানি অনেক বেশি। ফলে বিক্রেতারা তাদের চাহিদা অনুযায়ী দাম পাচ্ছে না।

 

সরেজমিনে জয়পুরহাটের নতুন হাটে কথা হয় নওগাঁর গয়েশপুর গ্রাম থেকে আসা গরু বিক্রেতা মহসিন আলীর সঙ্গে। তিনি জানান, বাড়ি থেকে ভটভটি ভাড়া দিয়ে ঈদের জন্য প্রতিপালন করা তিনটি গরু বিক্রির জন্য জয়পুরহাটের নতুন হাটে নিয়ে এসেছিলেন। এর একটি গরু ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি করলেও চাহিদা অনুযায়ী দাম না পেয়ে অন্য দুটি ফেরত নিয়ে যাচ্ছেন। ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি করা গরুটি বাড়িতেই এক ক্রেতা ৬০ হাজার টাকায় কিনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অধিক দামে বিক্রির আশায় হাটে নিয়ে এসেছিলেন।

 

নতুন হাটে গরু কিনতে আসা ফেনী জেলা সদরের মৌসুমি গরু ব্যবসায়ী ইব্রাহিম হোসেন জানান, তিনি ১৯টি গরু কিনেছেন। যার দাম পড়েছে ১৪ লাখ ৮২ হাজার টাকা। গত বছর প্রায় একই আকারের গরু কিনতে লেগেছিল প্রায় ১৬ লাখ টাকা।
গরু ব্যবসায়ী ক্ষেতলালের বেলগাড়ি গ্রামের আমির আলী জানান, এবার হাটে দেশি গরু আমদানির তুলনায় ক্রেতা কম। সে কারণে গরুর দাম অনেকটা স্বাভাবিক।

 

জয়পুরহাট পৌর সদরের ধানমন্ডি মহল্লার খামারি আব্দুল মতিন জানান, ঈদ সামনে রেখে খামারে তিনি ১০টি গরু লালন-পালন করেছেন। কিন্তু দাম কম হওয়ায় তিনি লোকসানের আশঙ্কা করছেন। তিনি বলেন, শুরুতে দাম ভালো থাকলেও বর্তমান বাজার হতাশাজনক।

 

জয়পুরহাট সদর উপজেলার দোগাছি ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম জানান, গত শনিবার জয়পুরহাট পৌর এলাকার নতুন হাট থেকে তাঁরা সাড়ে তিন হাজার গরুর জমা আদায় করেছেন। ওই হাটে প্রায় ১০ হাজার দেশি গরু এসেছিল। দাম কম হওয়ায় বেশির ভাগ গরু ফেরত গেছে।

 

জয়পুরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইসমাইল হক সিল্কসিটি নিউজকে জানান, ভারতীয় গরু না আসায় গত বছর কৃষক ও খামারিরা গরু বিক্রি করে লাভবান হয়েছিল। এ বছর জেলায় দেশি গরু অনেক বেশি প্রতিপালন করেছে কৃষক ও খামারিরা।
স/শ