এ যেন রাজার হাতির চাঁদাবাজি!

নিজস্ব প্রতিবেদক, জয়পুরহাট:

এক কালে ছিল রাজা। সাথে ছিল রাজ্য। আরও ছিল হাতিশাল। কালের বিবর্তনে এখন আর প্রচলন নেই রাজা, রাজ্য ও হাতিশাল। কালের বিবর্তনের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়েছে সবকিছুর। তাইতো এখন ব্যবসা ও চাঁদাবাজি করে অর্থ উর্পাজনের পথ হিসেবে সমাজের কিছু লোক রাজার হাতিকে ব্যবহার করছেন। গত সোমবার এমন এক দৃশ্য চোখে পড়েছে জয়পুরহাট-বগুড়া মহাসড়কের কালাই বাসস্ট্যান্ডে। হাতির চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পথচারী, সড়কের দু’পাশের ব্যবসায়ী ও যানবাহনের চালকরা। কেউ রেহাই পাচ্ছেনা এর হাত থেকে। প্রতিনিয়ত এ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে গিয়ে ক্ষমতাধর প্রাণি হাতি দিয়ে অভিনব কায়দা চাঁদাবাজি অব্যাহত রেখেছেন মালিকরা।

দেখা গেছে, হাতির পিঠে বসে আছে ২৮ বছর বয়সের এক যুবক। তিনিই হাতির মালিক। সোমবার দুপুরে জয়পুরহাট-বগুড়া মহসড়কে যানবাহনের সাথে সাথে মালিককে পিঠে নিয়ে হেলে-দুলে রাস্তার মাঝ দিয়ে চলছে একটি বড় আকৃতির হাতি। সামনে যাকেই পাচ্ছে তাকেই শুঁড় উচু করে থামিয়ে দিচ্ছে। মহাসড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনকে যত্রতত্র ভাবে দাঁড় করে টাকা আদায় করার কারণে বিড়ম্বনায় পড়ছেন পথচারী, চালক ও ব্যবসায়ীরা। এ ভাবে সড়কে বাধাঁসৃষ্টি করে টাকা আদায় করাকে অনেকেই এক ধরনের চাঁদাবাজি বলে অভিযোগ করেন। কিন্তু হাতির মালিক শরিফুল আলম বলেন, এ হাতিটি সার্কাসের কাজে ব্যবহার করা হতো। এখন ইন্টারনেটের যুগ, তেমন আর চলে না। তাই চাঁদাবাজি নয়, হাতিটিকে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদেই সকলের সাহায্য নেওয়া হয়।

কালাই বাসস্ট্যান্ডে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকরা অভিযোগ করে বলেন, সপ্তাহে ২/৩ দিন আমাদের দোকানের সামনে এসে শুঁড় উচু করে দাড়িয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে টাকা আদায় করেন। হাতি দোকানে সামনে এসে দাঁড়ালে ক্রেতারা ভয়ে সরে যায়। বিড়ম্বনা এড়াতে বাধ্য হয়ে টাকা দিতে হয় হাতির মালিককে। এটা চাঁদাবাজি ছাড়া আর কি হতে পারে।

জয়পুরহাট-বগুড়া মহসড়কের বাস চালক মিনারুল অভিযোগ করে বলেন, সড়কের উপর প্রায়ই সময় হাতি দিয়ে বাস থামিয়ে আমাদের কাছ থেকে জোর করে টাকা আদায় করে। টাকা দিতে না চাইলে শুঁড় দিয়ে বাসে আঘাত করে। এতে ভয়ও লাগে। বাধ্য হয়েই টাকা দিই।

কালাই থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুল লতিফ খান বলেন, সড়কে হাতি দিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে এই বিষয়ে আমি অবগত নই। যদি এমনটাই হয়, পরবর্তীতে হাতির মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স/শা