জয়পুরহাটে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে তৈরি করা তালিকা সংশোধন,বিত্তবানেরা বাদ

জয়পুরহাট প্রতিনিধি:
জয়পুরহাটে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে তৈরি করা তালিকা সংশোধন করা হয়েছে। ৩৬ হাজার ২৮২ জনের মধ্যে থেকে সাত হাজার ২১২টি কার্ড বাতিল করা হয়েছে। সরকারের অন্য সুবিধা পাওয়ার কারণে কিছু নাম বাদ পড়লেও বেশির ভাগ ছিল বিত্তবান। অনিয়ম যাচাই-বাছাইয়ের পর সংশোধিত তালিকা অনুযায়ী চলতি মাসের আগামী সপ্তাহ থেকে ১০ টাকার চাল বিক্রির সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে জেলা খাদ্য বিভাগ।

 
জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বরে এ কর্মসূচির আওতায় তালিকা তৈরি করা হয়। নীতিমালা অনুযায়ী তালিকা প্রণয়ন না হওয়ায় চাল বিক্রি নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে মাঠ পর্যায়ে। তালিকায় নাম ওঠে বিত্তবানদের। বাদ পড়েনি নাশকতার একাধিক মামলার বিত্তবান আসামিরাও। অনিয়মের অভিযোগে পাঁচবিবি থানা পুলিশ আঁওলাই ইউনিয়নের এক ইউপি সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।

 
একইভাবে হতদরিদ্রদের কার্ড রেখে চাল বিক্রি করার অভিযোগে জয়পুরহাট সদর উপজেলার চকবরকত ইউনিয়নের জয়নাল আবেদিনের ডিলারশিপ বাতিল করা হয়।

 

এ নিয়ে মামলাও হয় তাঁর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া চাল বিতরণের দিন আমদই ও সোনামুখী ইউনিয়নে হতদরিদ্রদের কাছ থেকে চাল কেনার অভিযোগে মামলা হয় সদর ও আক্কেলপুর থানায়।

 
এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে টনক নড়ে প্রশাসনের। ৩২টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মেম্বার, ইউপি সচিব, ডিলার, খাদ্য কর্মকর্তা ও ট্যাগ কর্মকর্তাদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেন জেলা প্রশাসক। সভায় তালিকা প্রণয়নে অনিয়মের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইউপি চেয়ারম্যানরা। তাঁদের দাবি, ২০১১ সালের তালিকা দিয়ে এই চাল বিতরণ করা হচ্ছিল।

 
পাশাপাশি নতুন করে তালিকা প্রণয়নের সুযোগ না দেওয়া ও সঠিক নীতিমালা না পাওয়ার অভিযোগ ওঠে। সম্মিলিত মতামতের ভিত্তিতে সভায় তালিকা সংশোধনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে চেয়ারম্যানরা নির্ধারিত কমিটির মাধ্যমে নতুন করে যাচাই-বাছাই করে তালিকায় বিত্তবানদের নাম বাদ দিয়ে হতদরিদ্রদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেন।

 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান জানান, এসব কর্মসূচিতে নাম তালিকাভুক্ত করতে গিয়ে তাঁদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। দলসহ নিজেদের পক্ষের ভোটারদের চাপে বিপাকে পড়তে হয়। ক্ষেতলাল উপজেলার আলমপুর ইউপির চেয়ারম্যান আনোয়ারুজ্জামান তালুকদার নাদিম বলেন, ‘প্রায় ৩০০ জনের নাম সংশোধন করে তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে।’

 
ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, ‘আগের তালিকা থেকে এক হাজার ৮২০ জনের ত্রুটিযুক্ত নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। আশা করি, এবার এ উপজেলায় প্রকৃত হতদরিদ্ররা সরকার গৃহীত খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুফল ভোগ করবেন।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, ‘কর্মসূচি সফলতা অর্জনে প্রশাসন তৎপর রয়েছে। তালিকা সংশোধনের এ প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।’
স/শ