জেলেদের জালে ইলিশ কম, বেড়ে গেছে দাম

আগে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে বড় আকারের রূপালী ইলিশ ধরা পড়লেও হঠাৎ করে তা কমে গেছে; যে কারণে সেই প্রভাব পড়েছে ইলিশের দামেও।

গত দুই দিনের ব্যবধানে প্রতি মণ গ্রেডের (বড় সাইজের) ইলিশের দাম ১০ হাজার টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে বরিশাল মোকামে প্রতিদিন গড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার মণ ইলিশ এলেও এখন আসছে মাত্র ১ থেকে দেড় হাজার মণ। এ কারণে দামেও এমন হেরফের পরিলক্ষিত হচ্ছে।

বরিশাল জেলা মৎস্য অফিসার (হিলসা) বিমল চন্দ্র দাস এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পূর্ণিমার জো কেটে যাওয়ায় এখন তেমন একটা মাছ পড়ছে না। তবে আবার অমাবস্যা এলেই ইলিশ ধরা পড়বে। দু’দিন আগেও ইলিশের দাম কম ছিল। কিন্তু সরবরাহ অপেক্ষা চাহিদা বেশি হওয়ায় এখন ইলিশের দাম বেড়ে গেছে।

গত শনিবার বরিশালের ইলিশ মোকামের পাইকারি বাজারে ২২ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে কেজি ওজনের ইলিশ। এ হিসাবে প্রতি কেজি ইলিশের দাম পড়েছে ৫শ’ থেকে সাড়ে ৫শ’ টাকা। গত কয়েক বছরের মধ্যে এটিই ছিল ইলিশের সর্বনিম্ন বাজারদর। সাগরে ধরা পড়া বিপুল পরিমাণ ইলিশ মোকামে আসার পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে ক্রেতার অভাব আর ভারতে ইলিশ পাচার বন্ধ থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল; যা গত বুধবার পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। কিন্তু গত দুই দিনের এই কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে মণপ্রতি ৩২ হাজার টাকা দরে।

কারণ হিসেবে জানা গেছে, আগের মতো ইলিশ ধরা পড়ছে না জেলেদের জালে। যার কারণে সরবরাহ অপেক্ষা চাহিদা কমে গেছে।

সরেজমিন শুক্রবার নগরীর পোর্টরোড ইলিশ মোকামে গিয়ে দেখা যায়, এক কেজি সাইজের ইলিশ পাইকারি প্রতি মণ ৩২ হাজার টাকা, যা আগে প্রতি মণ বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকায়। ৫শ’ থেকে ৮শ’ গ্রামের প্রতি মণ ২৮ হাজার, যা আগে বিক্রি হয়েছে ১৮ হাজার টাকায়। প্রতি মণ জাটকা (৩শ’ থেকে ৪শ’ গ্রাম পর্যন্ত) ১৬ হাজার টাকা; যা আগে বিক্রি হয়েছে মাত্র ১০ হাজার টাকা দরে।

পোর্ট রোডের আড়তদার তালুকদার এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. কবির হোসেন বলেন, গত দুই দিন মোকামে সাগরের ইলিশের আমদানি কমে গেছে। তাই দাম অনেক বেড়ে গেছে।

মহিপুর মৎস্য বন্দরে ইলিশ বিক্রি করতে আসা কলাপাড়ার ধানখালী ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের জেলে আবদুল আজিজ বলেন, আলীপুর-মহিপুর মৎস্য বন্দর গত এক সপ্তাহ জমজমাট ছিল। প্রচুর পরিমাণের ইলিশ নিয়ে অনেক ট্রলার ভিড়ত। কিন্তু গত দুই দিন ধরে মাছ পড়ছে না। তাই ট্রলারের সংখ্যাও কমে গেছে।

মহিপুর মোকামের বেশ কয়েকজন আড়তদার জানান, আগের মতো ইলিশ জালে ধরা পড়ছে না। যার কারণে ইলিশের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। দামও কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। তবে খুব শিগগিরই অনেক ইলিশ ধরা পড়বে। তখন আবার দাম কমে যাবে।

বরিশাল নগরীর পোর্টরোড ইলিশ মোকামের কয়েকজন আড়তদার জানালেন ইলিশ কম ধরা পড়ায় দাম বেড়েছে।

 

সূত্রঃ যুগান্তর