জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছেন ট্রাম্প?

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণা করা হলে “পরিণাম গুরুতর” হতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছেন জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

আয়মান সাফাদি বলেছেন, এমন সিদ্ধান্তে আরব ও মুসলিম বিশ্বে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়বে। এবিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট রেক্স টিলারসনের সাথে আগেই কথা হয়েছে তাঁর।

ডোনাল্ড ট্রাম্প কিছুদিনের মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে ছিল এ বিষয়টি।

এক টুইটে মি. সাফাদি উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণা করা হলে তা শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।

মি. ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার বলেছেন এবিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এবিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

মি. ট্রাম্পকে এমন ঘোষণা থেকে বিরত রাখতে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।

তাঁর অফিসের এক বিবৃতিতে বলা হয় রবিবার ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ আর তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়েপ এরদোয়ানসহ অন্যান্য বিশ্বনেতাদের ফোন করেছেন তিনি।

তিনি “জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিলে বা সেখানে আমেরিকান দূতাবাস স্থাপন করলে সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে ধারণা দিতে” আান্তর্জাতিক নেতাদের সাথে কথা বলেছেন বলে এএফপি’কে জানিয়েছেন মি. আব্বাসের উপদেষ্টা মাজদি আল-খালিদি।

জেরুসালেম, আল-আকসা মসজিদ, ইসরায়েল, ফিলিস্তিন

এমন সিদ্ধান্ত ইসরায়েল আর ফিলিস্তিনকে দুটি আলাদা রাষ্ট্র হওয়ার পথে আরো বাধা সৃষ্টি করবে বলে ফিলিস্তিনের নেতারা আগেই সতর্ক করেছেন।

১৯৬৭ র মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের সময় থেকে পূর্ব জেরুজালেম দখল করে রেখেছে ইসরায়েল। ১৯৮০’তে তারা এই এলাকা আত্মসাৎ করে ও নিজেদের এলাকা বলে দাবী করে। আন্তর্জাতিক আইনে এই এলাকাকে দখল হওয়া অঞ্চল বলে অভিহিত করা হয়।

অবিভক্ত জেরুজালেমকে স্থায়ী রাজধানী হিসেবে চায় ইসরায়েল। আর পূর্ব জেরুজালেমকে তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে চায় ফিলিস্তিনিরা।

১৯৪৮ এর পর থেকে আলোচনার মাধ্যমে জেরুজালেম দ্বন্দ্বের সমাধানের কথা বলে এসেছে সব আমেরিকান প্রশাসন। তারা এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়ার পক্ষপাতী নন যাতে আলোচনার সিদ্ধান্তে প্রভাব পড়তে পারে।

গত বছরের নির্বাচনী প্রচারণার সময় ইসরায়েলের প্রতি স্পষ্ট সমর্থন প্রকাশ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম দিনেই তেল আভিভ থেকে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেবেন তিনি।

ইসরায়েলের আমেরিকান দূতাবাস, তেল আভিভ

তারপর থেকে এবিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না হলেও ধারণা করা হচ্ছে বুধবার বক্তব্যে তিনিএই ঘোষণা দেবেন।

রোববার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের নেতাদের এক সভায় মি. ট্রাম্পের অন্যতম উপদেষ্টা মি. কুশনার বলেন, প্রেসিডেন্ট যথাযথ সময়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন।

তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট বিষয়টির খুঁটিনাটি যাচাই করছেন। সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে তিনিই আপনাদের জানাবেন। ” বিবিসি বাংলা