জেনারেলরা : ভূরাজনীতির ফাঁদ

সংসদীয় নির্বাচন কতটা শক্তিশালী যে তার ফল নস্যাৎ করতে একটা বিরাট সেনাবাহিনীকে নামতে হয়। বলা হয়, একচেটিয়া জয়ের ফল সব সময় ভালো হয় না। মিয়ানমারের গত নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচন আর দশটা সাধারণ নির্বাচন থেকে ভিন্ন। ভোটাররা সু চির জোটকে নিরঙ্কুশ জয় দিয়ে শক্তিশালী সরকার গঠনের আকাঙ্ক্ষা জানিয়েছে। সেনাবাহিনীর সমর্থিত দল ও প্রার্থীদের প্রত্যাখ্যান মানে নতুন সরকারের হাতে এমন ক্ষমতা তুলে দেওয়া, যা সেনাবাহিনীর একচেটিয়া ক্ষমতাকে সংযত করবে। আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার আসামির সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে নির্বাচনের ফল পর্যন্ত মিয়ানমারের শাসক জাতির মধ্যে সু চির এই পুনরুত্থানকে জেনারেলরা হুমকি মনে করছে। তাই যুদ্ধকালীন জরুরি অবস্থা ও সামরিক আইন জারি করে জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

করপোরেট সেনাতন্ত্রের আত্মরক্ষা
মিয়ানমারের শীর্ষ জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের ভয়টা বেশি। তাঁর চাকরির মেয়াদ মাত্র আর ৫ মাস, একই সময়ে সু চি আরও শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ালেন। মিয়ানমারের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর এই ব্যক্তি নিজেকে জাতীয়তাবাদী, দেশপ্রেমিক ও রক্ষকের ভূমিকায় দেখাতে চাইতেন। কিন্তু তাঁর উর্দির পকেট থেকে উঁকি দেয় দুর্নীতির চিহ্ন। রোহিঙ্গা গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত। যুক্তরাষ্ট্রে তিনি সরকারিভাবে নিষিদ্ধ। গত ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র জেনারেল মিনের সম্পত্তি জব্দ করে দেয়। সম্ভবত এ রকম কোনো আশঙ্কার কথা তারা ভেবেছিল। রাজধানী নেপিডোতে গুজব ছিল, শক্তিশালী ম্যান্ডেট নিয়ে আসা সু চি অবসরে যাওয়ার পর জেনারেল মিনকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন। অভ্যুত্থানের পরপরই তড়িঘড়ি করে সু চিকে অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার মামলায় ঢোকানোর তাই অন্য মানেও আছে।

দেশের ভেতরে দুর্নীতির অভিযোগ আর বিদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচারের খাঁড়া তাঁর সামনে। তাঁকে বাঁচাতে হবে মিয়ানমারের শীর্ষ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সেনা মালিকানাধীন মিয়ানমার ইকোনমিক হোল্ডিংস লিমিটেড (এমইএইচএল) মূল মালিকানা, তিনি বসেন এমইএইচএল চালানো মূল প্রতিষ্ঠানের দপ্তরে। তাঁর সন্তানেরাও একেকজন অঢেল সম্পদ আর বিপুল ব্যবসার মালিক। পুত্র সোনে এবং কন্যা খিন থিরির মালিকানার মধ্যে রয়েছে দেশটির অন্যতম প্রধান সিনেমা কোম্পানি সেভেন্থ সেন্স ক্রিয়েশনে। পুত্রবধূ অন্য আরেকটি বিনোদনে কোম্পানি চালান। এঁদের সব ব্যবসাই আমেরিকার অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার অধীন।

রাষ্ট্রটাকে হাতে নিয়ে মিয়ানমারের সামরিক এলিটতন্ত্র দেশটার সম্পদের একচেটিয়া দখল নিয়েছে। গণতন্ত্র জোরদার হওয়া মানে বেসামরিক অর্থনৈতিক শক্তিরা হিস্যা বাড়াতে চাইবে। তাই তাদের বঞ্চিত অংশ রাজনৈতিক নেতৃত্ব, তথা সু চির পক্ষে থাকবে। সু চি চান পশ্চিমা গণতন্ত্র ও বাজার অর্থনীতির মধ্যে নিজেদের ভবিষ্যৎ দেখেন। স্বাভাবিকভাবেই পাশ্চাত্যের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের সমর্থন তিনি পাবেন। কিন্তু উদারীকরণের এই চাপ সেনা সাম্রাজ্যকে ক্রমেই দুর্বল করবে। তারা সেটা হতে দেবে কেন?

থুসিডাইডিসের ফাঁদ: জেনারেলরা ও সু চি
মীমাংসার আরেকটা পথ হলো ক্ষমতা ভাগাভাগি করা। কেবল সেভাবেই জেনারেল মিন নিজেকে এবং তাঁর সাম্রাজ্যের সুবিধাভোগীদের বাঁচাতে পারতেন। প্রেসিডেন্ট হওয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক বর্ম খাড়া করে। এভাবে তিনি ও তাঁর অনুচরেরা দেশে ও বিদেশে সুরক্ষিত থাকবেন। সংগত কারণেই সু চি এই প্রস্তাবে রাজি হননি। একসঙ্গে দুজনই ক্ষমতায় থাকা না গেলে একজন থাকবে! সেটা কে হবেন? এই অস্তিত্বের সংকট থেকে তাঁরা পড়ে যান থুসিডাইডিসের ফাঁদে। উত্থিত ক্ষমতা কায়েমি ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ জানাবে, নিজের হিস্যা, সম্মান ও ইচ্ছা কায়েম করতে চাইবে।

কায়েমি ক্ষমতা নতুন ক্ষমতার প্রতি ভয় থেকে তার সঙ্গে সংঘাতে জড়াবে। মিয়ানমারের জেনারেলরা নির্বাচিত সরকারকে উচ্ছেদ করে থুসিডাইডিসের সেই ফাঁদেই পা দিলেন। শীতের শেষে সাপ তার খোলস ফেলে যায়, সংকটে পড়া করপোরেট সামরিকতন্ত্রও নির্বাচনী গণতন্ত্রের খোলস ফেলে দেয়। একবার খোলস ফেলে দেওয়ার পর আর সেটা পরার উপায় নেই। তাই কারোরই পিছিয়ে যাওয়ার উপায়ও থাকল না। মিয়ানমারে বাড়তে থাকা জনবিক্ষোভেও সেই উত্তেজনা দেখা যায়।

থুসিডাইডিসের ফাঁদ: চীন ও আমেরিকা
মিয়ানমারের সামরিক ও রাজনৈতিক শক্তির দ্বন্দ্ব হয়তো বিস্ফোরিত হতো না, যদি তা বৈশ্বিক থুসিডাইসীয় দ্বন্দ্বের অংশ হয়ে পড়ত। বর্তমান বিশ্বনেতা আমেরিকা চীনকে নিয়ে ভীত। গ্রিক এখেনীয় ইতিহাসবিদ থুসিডাইডিস ২ হাজার ৪০০ বছরের বেশি আগে অসাধারণ অন্তর্দৃষ্টি নিয়ে এথেন্সের উত্থানে স্পার্টার ভয়ই তাদের তাড়িত করল, আর সেটাই যুদ্ধকে অনিবার্য করে তুলল। এটাকেই বলে থুসিডাইডিসের ফাঁদ। নগর রাষ্ট্র এথেন্স যুদ্ধরাষ্ট্র স্পার্টাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল। কিন্তু তার পরিণতি হয়েছিল ট্র্যাজিক। যেমন জার্মানি চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল ব্রিটেনকে। প্রাচীন গ্রিসের ওই যুদ্ধটা ছিল তখনকার বিশ্বযুদ্ধ। সমগ্র ভূমধ্যসাগরের পাড়ের দেশগুলো জড়িয়ে গিয়েছিল। তারপর তো ১৯১৪ সালে সভ্যতা অভূতপূর্ব বিভীষিকার মাধ্যমে নতুন শব্দের সঙ্গে পরিচিত হলো: বিশ্বযুদ্ধ।

দক্ষিণ চীন সাগর সম্প্রতি এবং আগামীতে একুশ শতকের বিরোধী বৈশ্বিক পরাশক্তিদের দ্বন্দ্বের প্রধান জ্বালামুখ হয়ে থাকবে। চীনের আমদানি-রপ্তানির তথা অর্থনীতির জীবননালি এই সমুদ্রপথ। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র জাপান-তাইওয়ান-ফিলিপাইন এবং কিছুটা দক্ষিণ কোরিয়া এই পথটাকে আটকাতে চায়। ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনামের স্বার্থও এখানে নিহিত। তাইওয়ান ও ফিলিপাইন দখল করে একসময় দক্ষিণ চীন সাগরকে জাপান তার বাড়ির সামনের লেক বানিয়ে ফেলেছিল। এখন চীনও সেভাবেই এই সাগরকে দেখতে চায়। কিন্তু তাহলে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনামের সামুদ্রিক সীমা বলে কিছু থাকে না। অতীতে সাগরপাড়ের সব জাতিরই এই সাগরে বাণিজ্যের অধিকার ছিল, সীমান্ত জিনিসটা তখনো পশ্চিম থেকে আমদানি হয়নি।

দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে উত্তেজনার প্রভাব
দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের বিমানবাহী জাহাজ অবস্থান নিয়েছে, নিয়মিতভাবে তাইওয়ানের আকাশে উড়ছে চীনা যুদ্ধবিমান। মার্কিন নৌবহরও কাছাকাছি রয়েছে। চীনের হিসাবে তাইওয়ানকে আবার অঙ্গীভূত করার সুযোগও হয় এখন, নয়তো কখনো নয় অবস্থায় চলে যাচ্ছে। তাইওয়ান যেভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠছে, জাপান যেভাবে আবার সামরিকায়নের দিকে যাত্রা করছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসনও যেভাবে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনকে কোণঠাসা করতে বদ্ধপরিকর, সেহেতু আটঘাট বাঁধার এখনই সময়। তাইওয়ানের ওপর আক্রমণ আমেরিকার ওপর আক্রমণ বলে গণ্য হবে, এমন চুক্তিতে দেশ দুটি আবদ্ধ।

যুদ্ধ না লাগুক, মার্কিন নৌবহর যদি জিব্রাল্টার প্রণালি বন্ধ করে দেয়, তাহলে চীনের সিংহভাগ আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাবে, জ্বালানি–সংকটে পড়ে যাবে। এই অবস্থায় মিয়ানমারের ভেতর দিয়ে ভারত মহাসাগরে বের হওয়ার রাস্তা পরিষ্কার রাখা না গেলে চীনের উত্থান থমকে যাবে। এ পথেই মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার তেল আনা সস্তাতর। আর গত এক দশকে মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকাই হয়ে উঠেছে চীনা বিনিয়োগের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোডের জন্যও এই সমুদ্রপথ মুক্তার মালার মতো।

এ অবস্থায় মিয়ানমারের মতো বাড়ির উঠান পরিষ্কার রাখা ছাড়া চীনের উপায় নেই। সু চির পশ্চিমাঘেঁষা সরকার সেখানে অনাকাঙ্ক্ষিত ঝোপঝাড় মাত্র।

করপোরেট সামরিকতন্ত্রের গোলকধাঁধায় মিয়ানমার একাই ঢুকল, নাকি তা দক্ষিণ এশিয়াকেও টেনে নেবে, সেটাই এখন বোঝার বিষয়। রোহিঙ্গা গণহত্যা–পরবর্তী শরণার্থীদের ঢলের সামনে যেমন আমরা অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়েছিলাম, সে রকম অপ্রস্তুতি যেন এবার দেখতে না হয়।

পরাশক্তির উঠানতত্ত্ব
মিয়ানমার অভ্যন্তরীণ ভাগ–বাঁটোয়ারার পাশাপাশি বৈশ্বিক ভাগ–বাঁটোয়ারার কারণেও বিভক্ত। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি এই বিভক্তিকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে পারে এবং পেরেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসন গা ঝাড়া দেওয়ার আগেই এশীয় দমকা বাতাসের মুখে পড়ল। প্রতিপক্ষ চীন এ ক্ষেত্রে এগিয়ে। চীন যদি এই সামরিক অভ্যুত্থানের সুফলভোগী ও সমর্থক হয়, তাহলে অবশ্যই আমেরিকাকে এশিয়ায় দুর্বল করাই এর উদ্দেশ্য।

চীন চাইবে না এই ক্রান্তিকালে সু চির মতো দোদুল্যমান পশ্চিমমুখী মিত্র মিয়ানমারের চালকের আসনে থাকেন। বরং চীনের সঙ্গে স্বার্থে বাধা সেনাতন্ত্রই বাড়ির পেছনের উঠানের প্রহরী হিসেবে নিরাপদ। চীন মিয়ানমারকে তার বাড়ির পেছনের উঠান মনে করে। পরাশক্তিদের এই উঠানতত্ত্ব অনেক দেশের দুর্ভাগ্যের কারণ।

অথচ এই খোলসটাকেই পাশ্চাত্য শক্তি ভালোবেসে ভেতরের সেনাতন্ত্র বিষয়ে ছিল নিষ্ক্রিয়। বরং তারা একে পুষ্ট করেছে। ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের মতো দেশ তাদের সঙ্গে ব্যবসা করেছে। রাশিয়ারও দরকার ছিল অস্ত্র ব্যবসার মওকা এবং ন্যাটোর বাইরের এই বিরাট সমরযন্ত্রকে ভূরাজনীতির কৌশলগত অংশীদার বানানো। পাকিস্তান বিক্রি করেছে অস্ত্র। অস্ত্র ব্যবসা ও সামরিক মৈত্রী ছাড়াও মিয়ানমারের উগ্র বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদের মুসলিমবিরোধী নীতির সঙ্গে ইসরায়েল আদর্শিকভাবে ঐক্যবদ্ধ।

এ জন্য রোহিঙ্গা গণহত্যার পরও পাশ্চাত্যের প্রতিক্রিয়ার ঝড় জেনারেলদের মাথার ওপর দিয়েই গেছে, গায়ে লাগতে পারেনি। ভারত মনে করেছে, চীনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমরাও যদি বঙ্গোপসাগরে একটি বন্দর, অর্থনৈতিক অঞ্চল, কয়েকটা খনি প্রভৃতির বখরা পাই, তাহলে ক্ষতি কি? মিয়ানমার তো ভারতের কাছে প্রতিবেশীর উঠানের মতো। তবে চীনের পদ্ধতি বেশি কার্যকর। তারা ব্যবহার করেছে লাঠি ও গাজর পদ্ধতি। তারা ক্ষমতা ও বৈদেশিক পুঁজির গাজর ঝুলিয়ে সেনা শাসকদের কাছে যেমন টেনেছে, তেমনি বিদ্রোহী বাহিনীদের অস্ত্র দিয়ে সামরিক বাহিনীকে চাপেও রেখেছে। সরকার ও বিরোধীদের মধ্যে তারাই আবার মধ্যস্থতাকারী।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে ক্রয় ও ব্যবহার করার বেলায় সবাই প্রতিযোগিতা করেছে, তাদের দুর্বল করতে চায়নি। কূটনৈতিক বকাবাদ্যের তলায় সবাই মিয়ানমারের মূল পাওয়ার হাউসের সঙ্গে ‘এনগেইজমেন্ট’ চেয়েছে। ভাবেনি, উন্নয়নশীল দুনিয়ার দুর্বল রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের সুযোগে সেনাতন্ত্র নিজেই রাষ্ট্র হয়ে ওঠে। যেভাবে সাদ্দাম হোসেন, গাদ্দাফি, মুবারক রাষ্ট্র হয়ে উঠেছিলেন, সেভাবে জেনারেলরাই মিয়ানমার রাষ্ট্র। মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক মানে জেনারেলদের হাতকেই শক্তিশালী করা। এ বছরও মিয়ানমারের কাছ থেকে বিপুল চাল আমদানি বাবদ অর্থ পরিশোধের মাধ্যমে তাঁদের হাতকেই শক্তিশালী করা হলো। অথচ পৃথিবীতে আরও অনেক দেশ বাংলাদেশে চাল রপ্তানিতে আগ্রহী ছিল।

বিদেশি শত্রু ছাড়া সামরিকতন্ত্র দেশপ্রেম দেখাতে কমই পারে। জনগণের নজর ঘোরাতে বাইরে শত্রু আবিষ্কার করা তাদের গাইডবুকের অংশ। সেনাতন্ত্রের মদদে মুসলিমবিদ্বেষী উগ্র বর্মি জাতীয়তাবাদ এখন বিপুল শক্তিশালী। ধর্ম, টাকা আর সমরযন্ত্র এক কাতারে চলে আসা মানে আগ্রাসী জাতীয়তাবাদের উত্থান।

সেনা শাসকেরা উগ্র বৌদ্ধবাদী হাওয়া ব্যবহার করে গণ-আন্দোলনকে বিভক্ত করার চেষ্টা করবেন। যখন ভারত, চীন ও থাইল্যান্ড তাদের মিত্র, তখন সেই শত্রু বাংলাদেশ ছাড়া আর কে হতে পারে? করপোরেট সামরিকতন্ত্রের গোলকধাঁধায় মিয়ানমার একাই ঢুকল, নাকি তা দক্ষিণ এশিয়াকেও টেনে নেবে, সেটাই এখন বোঝার বিষয়। রোহিঙ্গা গণহত্যা–পরবর্তী শরণার্থীদের ঢলের সামনে যেমন আমরা অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়েছিলাম, সে রকম অপ্রস্তুতি যেন এবার দেখতে না হয়। বাংলাদেশ কারও সমস্যা খালাসের উঠান নয়।

ফারুক ওয়াসিফ: লেখক ও সাংবাদিক
rotnopahar@gmail.com

 

সুত্রঃ প্রথম আলো