জীবনেও ‘প্যারা’ শব্দ শুনিনি, এ কেমন শব্দ: বিচারপতি

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

কোমল পানীয় কোকা-কোলা কম্পানি তার বিজ্ঞাপনচিত্রে কী ধরনের শব্দ ব্যবহার করেছে, সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট।

কোকা-কোলার বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে বাংলা ভাষার বিকৃত শব্দ ব্যবহার বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানিতে এ প্রশ্ন তোলা হয়।

এসময় হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের বিচারপতি বলেন, জীবনেও ‘প্যারা’ শব্দ শুনিনি, এ শব্দের ব্যবহার করিনি বা করতেও দেখিনি। এ কী ধরনের শব্দের ব্যবহার?

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি কোমল পানীয় কোম্পানি কোকা-কোলার বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে বাংলা ভাষার বিকৃত শব্দ কেন ব্যবহার করা হচ্ছে তা জানতে চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনিরুজ্জামান রানা।

সেই সঙ্গে বাংলা ভাষার বিকৃতি বন্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে রুল জারিরও আর্জি জানানো হয়।

আজ দুপুরে হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে সেই রিটের শুনানি শুরু হয়।

এদিন রিটকারী আইনজীবী মনিরুজ্জামান রানা কোকা-কোলার বোতল বিচারপতির সামনে হাজির করেন।

কোকা-কোলা প্রতিষ্ঠানটি এসব শব্দ ব্যবহারে ভাষার বিকৃতি করছে অভিযোগ করে রিটকারীর আইনজীবী আদালতকে বলেন, ‘অবিলম্বে বিজ্ঞাপনে ভাষার বিকৃতি বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হোক।’

অন্যদিকে কোকা-কোলার আইনজীবী ব্যারিস্টার তানজীব-উল আলম বলেন, ‘রিটটি গ্রহণযোগ্য নয়। দেশের প্রচলিত আইনে বাংলা ভাষার ব্যবহার কোনো অপরাধ নয়।’

কোকা-কোলার বোতলের গায়ে অস্থির, ফাঁপর, মাথা নষ্ট, জটিল, আগুন, পিছলা, আলু, জিনিস, গাব, সেই, ব্যাপক, জিরো, বাবা, আলপিন, আরকি ইত্যাদি শব্দে নামকরণ করে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে।

এ বিষয়টিকে বাংলা ভাষার বিকৃতির শামিল বলে মনে করছেন রিটকারী।

তিনি যুক্তি দেখান, একটা শিশু দোকানে গিয়ে বলছে, ‘আমাকে একটা প্যারা দেন’, ‘একটা মাথা নষ্ট দেন।’ আর এতে সামাজিকভাবে ও শিশুর ওপর মানসিকভাবেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

তাই এসব শব্দ ব্যবহার বন্ধ করতে রিট আবেদন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার জানান, ‘টেলিভিশন ও প্রিন্টমিডিয়ায় কোকা-কোলা বেভারেজ কোম্পানির বিজ্ঞাপনে কয়েকটি বাক্য ব্যবহার করা হয়েছে যা বাংলা ভাষার বিকৃতি ও শ্রীহীন মনে হয়। এটা কুরুচির বহিপ্রকাশ।’

তবে রিট আবেদনে ত্রুটি থাকায় রিটকারীর আইনজীবীকে সেটি সংশোধন করে আবারও আদালতে আসতে বলা হয়েছে।