জিহ্বায় কালো দাগ

জিহ্বায় কালো দাগ থাকলে একদিকে যেমন খারাপ দেখা যায়, তেমনি অন্যদিকে রোগী এক বিড়ম্বনাকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে থাকে। বিশেষ করে বিয়ের পাত্রপাত্রীদের জিহ্বায় কালো দাগ থাকলে বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি হওয়াটাই স্বাভাবিক।

দেখতে হবে জিহ্বার কালো দাগ কোথায় হয়েছে। কালো দাগের আকৃতি কি একই ধরনের না ভিন্ন ধরনের? জিহ্বার কালো দাগ বিস্তৃতি লাভ করছে কিনা? এসব তথ্যের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে।

হেয়ারি ব্ল্যাক টাং বা কালো জিহ্বা হয়ে থাকে ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধির কারণে বা জিহ্বার ছত্রাক সংক্রমণের কারণে। অনেক সময় জিহ্বার পাশের অংশ কালচে দেখা যায়।

সিলভার এমালগাম ফিলিং সরিয়ে ফেললে অনেক সময় এ ধরনের কালোভাব চলে যায়। জিহ্বার যেখানে টেস্ট বাড রয়েছে সে স্থানের রং অনেক সময় একটু বেশি লাল হতে পারে, আবার কালচেও হতে পারে।

জিহ্বার টেস্ট বাড অনেকের ক্ষেত্রে জিহ্বার স্পট বা দাগের মতো দেখা যায়। জিহ্বার কালো দাগকে সাধারণ ভাষায় পিগমেন্টেশন বলা হয়। কালো দাগ থাকার জন্য জিহ্বার স্বাদের কোনো পরিবর্তন হয় না। কালো হেয়ারি টাং বা জিহ্বা কিছু ওষুধের কারণে হয়ে থাকে, যেমন এন্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ।

এ ছাড়া ভিটামিন স্বল্পতা ও ধূমপানের জন্যও জিহ্বা কালো হতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো এন্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ গ্রহণ করা ঠিক নয়।

অ্যান্টাসিড জাতীয় ওষুধের মাঝে যদি বিসমাথ থাকে তাহলে বিসমাথ ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে যা পাকস্থলীতে আলসার সৃষ্টি করে থাকে। মৃত ব্যাকটেরিয়ার কারণে জিহ্বায় কালো দাগ দেখা যেতে পারে। পেপটো বিসমল ওষুধ সেবন করলে জিহ্বা কালো হয়ে যেতে পারে। তবে মাড়ির পাশে যদি কালো দাগ দেখা যায় তাহলে গাম বা মাড়ির ক্যান্সারের সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না।

ক্রমাগত ছত্রাক সংক্রমণের কারণেও জিহ্বায় কালো দাগ দেখা যেতে পারে। অনিয়মিত বা ভুল এন্টিবায়োটিক সেবনের কারণেও এমনটি হতে পারে। ক্লোরোহেক্সিডিন জাতীয় মাউথ ওয়াশও জিহ্বায় কালো দাগ ফেলতে পারে।

জিহ্বার কালো দাগ যে কারণেই হোক না কেন তা গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় আনতে হবে। পিগমেন্ট রিডিউসিং কমপ্লেক্স যথার্থ প্রয়োগের মাধ্যমে জিহ্বার কালো দাগ দূর করা যায়।

এছাড়া গ্যানোডার্মা লুসিডাম প্রজাতির মাশরুম বিশেষ পদ্ধতিতে প্রয়োগ করে রোগ নিরাময় করা সম্ভব। তবে জিহ্বার কালো দাগ দূর করা সময়সাপেক্ষ হতে পারে।

লেখক : মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
dr.faruqu@gmail.com

 

সুত্রঃ যুগান্তর