জিএস ও এজিএসের অসহযোগিতায় ছাত্রী হলে কর্মসূচি করতে পারিনি: আখতার

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

পণ্ড হয়ে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের হলগুলোতে ‘অ্যাওয়ারনেস ক্যাম্পেইন অন সাইবার সেফটি অ্যান্ড ৯৯৯’ শীর্ষক কর্মশালার আয়োজন।

আর এ কর্মশালা পণ্ড হওয়ার জন্য ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী ও সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) সাদ্দাম হোসেনের ওপর অভিযোগ আনা হয়েছে।

গতকাল বুধবার (১৭ জুলাই) রাতে ডাকসু ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে করে এই অভিযোগ করেন ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন।

তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে ও পরদিন (বুধবার) বেগম রোকেয়া হলে ‘অ্যাওয়ারনেস ক্যাম্পেইন অন সাইবার সেফটি অ্যান্ড ৯৯৯’ শীর্ষক কর্মশালাটির আয়োজন করার কথা ছিল। কিন্তু ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক ও সহসাধারণ সম্পাদকের অসহযোগিতায় তা আর হয়ে উঠল না।

সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেনের এমন অভিযোগ করার সময় উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর।

এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন শামসুন্নাহার হলের ভিপি শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি, কুয়েত মৈত্রী হলের জিএস সাগুফতা ইয়াসমিন মিশমা ও এজিএস মুন্নী আক্তার।

সংবাদ সম্মেলনে আখতার হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ‘সপ্তাহব্যাপী এ কর্মশালার ১৬ জুলাই মঙ্গলবার হতে ২২ জুলাই পর্যন্ত চলার কথা ছিল। গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের কর্মশালার সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন ছিল। এ বিষয়ে আগে থেকেই হল সংসদ ও হল প্রশাসনের সঙ্গে কয়েক দফায় আলোচনাও করেছি আমরা। কিন্তু কর্মশালা শুরুর কিছুক্ষণ আগে হল প্রাধ্যক্ষ মাহবুবা নাসরিন ব্যক্তিগত কারণে কর্মশালায় উপস্থিত থাকতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন।’

এ সময় অন্য কোনো শিক্ষিকা দিয়ে কর্মশালা চালিয়ে নেয়ার কথা বললে প্রাধ্যক্ষ মাহবুবা নাসরিন বলেন ‘কর্মশালা হচ্ছে না। আভ্যন্তরিন সমস্যা আছে।’

কারণ জানতে চাইলে প্রাধ্যক্ষ উল্টো প্রশ্ন করেন ডাকসুর জিএস এজিএসের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়েছে কি না!

তার এ প্রশ্নের পর জিএস গোলাম রাব্বানীকে ফোন দেন আখতার হোসেন। গোলাম রাব্বানী জবাবে এজিএস সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে বিষয়টি সমন্বয় করতে বলেন।

কিন্তু এজিএসকে বারবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি বলে অভিযোগ করেন আখতার হোসেন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছ থেকেও ‘কার্যকরী সমাধান পাননি বলে জানান তিনি।

আখতার হোসেন বলেন, কর্মশালা আয়োজনে এ পর্যন্ত ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করতে না পারলে এই টাকা পাব কিনা আশঙ্কা করছি।

সংবাদ সম্মেলনে ভিপি নুরুল হক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হল কর্তৃপক্ষ বলে ছাত্রলীগের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রোগ্রাম করতে। ছাত্রলীগ কে? বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কি তাহলে ছাত্রলীগের ওপর সব দায়িত্ব দিয়ে বসে আছে?

তিনি আরও বলেন, ‘যখন ছাত্রলীগের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে বলা হয়। তখন আর বলার অবকাশ থাকে না যে প্রশাসন কী পরিমাণে তাদের হাতে জিম্মি হয়ে পরেছে এবং নির্ভরশীল হয়ে পরেছে।’

আজ বুধবার রোকেয়া হলের প্রোগ্রাম করতে গেলে একই সমস্যার মুখোমুখি হন আখতার হোসেন।

তিনি বলেন, আজ দুপুর রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষকে ফোন দিলে তিনি ও হলের ভিপি, জিএস ‘বিভিন্ন কারণে উপস্থিত থাকতে পারছেন না’ বলে জানান। এই কারণে প্রোগ্রামটি করতে পারিনি।

এর পর এজিএস সাদ্দাম হোসেনকে ফোন দিলে তিনি বলেন, ‘মেয়েদের হলে প্রোগ্রামে কিছু সমস্যা আছে। এটা মেনে নেওয়া যায়না।’

ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনের এমন সব অভিযোগের বিষয়ে ডাকসুর এজিএস এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে রোকেয়া হল প্রাধ্যক্ষ জিনাত হুদাকে একাধিকবার ফোন করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।