জামালপুরে শেখ হাসিনা নকশী পল্লী প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি

একনেকে পাস হওয়া প্রস্তাবিত শেখ হাসিনা নকশী পল্লী প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে জামালপুরে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে প্রকল্প এলাকার পাশে জামালপুর শহরের কম্পপুর মোড়ে জামালপুর জেলা হস্তশিল্প ব্যবসায়ী সমিতি এ সভার আয়োজন করেন।

জামালপুর জেলা হস্তশিল্প ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বিজন কুমার চন্দের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপি। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য জামালপুর সদরের এমপি প্রকৌশলী মো. মোজাফফর হোসেন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ তাঁতবোর্ডের চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম, জেলা প্রশাসক মুর্শেদা জামান ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক আহাম্মেদ চৌধুরী প্রমুখ।

বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল মান্নান জামালপুরের শেখ হাসিনা নকশী পল্লী সম্পর্কে তার বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিনি নিজে একনেকে এই প্রকল্পের প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় ফেজে এই নকশীপল্লী প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা লেগে যাবে। পর্যায়ক্রমে পূর্ণাঙ্গভাবে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে গেলে ব্যয় প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা লাগতে পারে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেহেতু এইগুলোকে অনুপ্রাণিত করেন, উৎসাহিত করেন, সেহেতু এই প্রকল্প এখানে হবেই। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা গেলে এই জেলার লক্ষাধিক মানুষ কর্মসংস্থান ও ব্যবসাবাণিজ্যে কোনোনা কোনোভাবে উপকৃত হবেন। দেশের অর্থনীতিতেও ভালো প্রভাব রাখবে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে বলেও তিনি আশা ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, মাদারীপুরের শিবপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে ১২০ একর জমিতে এরকম একটি নকশী পল্লীর কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। যেহেতু পদ্মা সেতু হয়ে যাচ্ছে। পদ্মাসেতু পার হলেই সেই নকশীপল্লীর কাজ দেখতে পাবো। আর এই জামালপুরে কিন্তু তারচেয়েও দ্বিগুণ প্রায় ৩০০ একর জমিতে শেখ হাসিনা নকশী পল্লী প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, তাঁতশিল্প, নকশীশিল্প এগুলো আমাদের বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ। এগুলো সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে। ১৭১ বছর আগে যে মসলিন শিল্পকে বৃটিশরা একেবারে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল। আঙুল কেটে দিয়ে গিয়েছিল। সেই মসলিনকে আমরা উদ্ধার করেছি। ঢাকায় মসলিন পল্লী নামে ঢাকার ডেমরাতে মসলিন হাউস প্রতিষ্ঠা করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান বাঙালির ঐতিহ্য, কৃষ্টিকে তুলে ধরতে। আমরা চাই আমাদের ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার করে আধুনিকরূপে কাজে লাগাতে।

কম্পপুর মোড়ে আয়োজিত এই মতবিনিময় সভায় জামালপুর জেলা হস্তশিল্প ব্যবসায়ী সমিতির আওতাভুক্ত বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী ও হস্তশিল্পের নারী কর্মীরা অংশ নেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাবেক প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপি তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে শেখ হাসিনা নকশী পল্লী প্রকল্প দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়ার জন্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল মান্নানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এর আগে সকালে মির্জা আজম এমপি এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহ আলম ও বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাসচিব মো. নুরুজ্জামান জামালপুর শহরের কম্পপুরে শেখ হাসিনা নকশী পল্লী প্রকল্প এলাকা এবং মাদারগঞ্জের বালিজুড়ী ইউনিয়নের চরকামারিয়া এলাকায় বাস্তবায়নাধীন শেখ হাসিনা বিশেষায়িত জুট মিল ও শেখ রাসেল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন। তারা সেখানে মাদারগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায়ও বক্তব্য রাখেন।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ