জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানেরা মঙ্গলবার মরক্কোর রাজকীয় শহর মারাকাসে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২২) যোগ দিয়েছেন।

 

মরক্কোর বাদশাহ ৬ষ্ঠ মোহাম্মদের আমন্ত্রণে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানেরা তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনের বিভিন্ন পর্বে বক্তব্য দেবেন। উন্নত দেশের অতিমাত্রায় কার্বন নিঃসরণের ফলে গ্রীন হাউজ ইফেক্টে সৃষ্ট বৈশ্বিক জলবায়ুর হুমকি মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণে নিজস্ব মতামত উপস্থাপন করবেন।

 

এর আগে, মরক্কোর বাদশাহ ৬ষ্ঠ মোহাম্মদ, জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন, জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত রূপরেখা সনদের (ইউএনএফসিসি) নির্বাহী সচিব পেট্রিসিয়া এপিনোসা এবং ‘কপ-২২’ প্রেসিডেন্ট সালাহেদ্দিন মিজোয়ার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সম্মেলনে যোগ দিতে আসা অন্য রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মেলন ভেন্যুতে স্বাগত জানান।

 

গত ডিসেম্বরে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ‘কপ-২১’ এ গৃহীত ঐতিহাসিক চুক্তির পর এটাই হচ্ছে প্রথম সম্মেলন।

 

এদিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনে প্রদত্ত বক্তৃতায় জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজ দেশের অবস্থান তুলে ধরবেন এবং এ বিরাট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জাতীয় ও সমন্বিত প্রয়াস এগিয়ে নিতে এক প্রচারাভিযান জোরদার করতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

 

এ বছর ৭ নভেম্বর থেকে মারাকাসে শুরু হওয়া ‘কপ-২২’ সম্মেলন ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।

 

এদিকে, বিশ্ব জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় করণীয় বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের অভিমতকে বাস্তবে প্রতিফলিত করে লক্ষ্য অর্জনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে শনিবার ‘কপ-২২’ সম্মেলনের প্রাথমিক আলোচনা শেষ হয়েছে।

 

আলোচনায় ৮০টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধান এবং ১১৫টি দেশের সিনিয়র মন্ত্রীরা অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে রয়েছেন- কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল আহমাদ আল জাবের আল সাবাহ, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাংকোয়িস হল্যান্ডে, পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী এন্টোনিও কস্টা, সেনেগালের প্রেসিডেন্ট ম্যাকি সল, চিলির প্রেসিডেন্ট মিচেল ব্যাচলেট, জিবুতির প্রেসিডেন্ট ইসমাইল ওমর গুইল্লা, আইভিরিকোস্টের প্রেসিডেন্ট অ্যালিসানি কোয়েত্তারে, মেসিডোনিয়ার প্রেসিডেন্ট জর্জ ইভানভ।

 

সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি, গ্যাবনের প্রেসিডেন্ট আলী বঙ্গো ওদিবা, লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইলেন জনসন স্যারলীফ, ইরাকের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ফুয়াদ মাদুম, সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর হাসান আহমদ আল বশির, তিউনিসিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইউসেফ চাহেদ, ফিলিস্তিনির প্রধানমন্ত্রী রামি হামদুল্লাহ্ উপস্থিত ছিলেন।

 

উদ্বোধনী অধিবেশন শেষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং অন্যান্য রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা মরক্কোর বাদশাহ’র দেওয়া মধ্যাহ্ন ভোজে যোগ দেন।

 

২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে গৃহীত জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি গৃহীত হয়। এই সম্মেলনে ১৯০টির বেশি দেশ অংশ নেয়। এই চুক্তি ছিল বিভিন্ন দেশ, ইউএন সংস্থা, বিজ্ঞানী, বেসরকারি সেক্টর এবং সিভিল সোসাইটির কঠোর পরিশ্রমের ফসল। জিরো কার্বন, প্রাণবন্ত এবং টেকসই বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে তারা কাজ করেন।

 

সম্মেলনের পাশাপাশি বিভিন্ন বৈঠকে বৈশ্বিক সিভিল সোসাইটির নেতারা  জলবায়ুজনিত কারণে গৃহচ্যুত মানুষের মানবাধিকার রক্ষায় নতুন রাজনৈতিক নীতি প্রণয়নের আহ্বান জানান। বিশেষজ্ঞরা আফ্রিকার কয়েকটি সমীক্ষার উল্লেখ করে উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা সত্ত্বেও জলবায়ুজনিত কারণে গৃহহারা মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গ্রীনহাউস গ্যাস নিঃসরন হ্রাসে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ১৯৯৪ সালে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জাতিসংঘ ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিওপি-২২ তে যোগ দিতে তিনদিনের সরকারি সফরে সোমবার এখানে পৌঁছেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, পরিবেশ ও বন উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবসহ ৫৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

সূত্র: রাউজিংবিডি