জরিমানা পরিশোধ করতে হবে : অর্থমন্ত্রী

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘মুদ্রা পাচার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশের সোনালী ব্যাংক যুক্তরাজ্য (ইউকে) শাখাকে ৩৩ লাখ পাউন্ড জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার এ অর্থ অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে। কারণ তারা যে অভিযোগে এ জরিমানা করেছে তাতে আমাদের কিছু করার নেই।’

 

বৃহস্পতিবার বিকেলে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয় থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

 

এর আগে এফসিএর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ কার্যক্রমের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে সোনালী ব্যাংক যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে।

 

যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের সেবা দেওয়া এবং রেমিট্যান্স পাঠানোর লক্ষ্যে সোনালী ব্যাংক ইউকে প্রতিষ্ঠা করা হয়। ব্যাংকটির ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা বাংলাদেশ সরকারের। জরিমানা করলেও ব্যাংকটির রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে সংবাদ সংস্থা বিবিসি জানিয়েছে। তবে ব্যাংকটি নতুন কোনো গ্রাহকের সঙ্গে কোনো ধরনের লেনদেন করতে পারবে না।

 

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আজ পত্রিকার মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরেছি। এমন ঘটনা দুঃখজনক। বিষয়টি আমি ভালোভাবে খোঁজ নিয়ে দেখবো। এর আগে তারা কোর্টে গিয়েছে সেখান থেকে ফলপ্রসূ কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। জরিমানার টাকা দিতেই হবে। যুক্তরাজ্য শাখা সোনালী ব্যাংকে যে বোর্ড আছে সেখানে ওই দেশের লোকও আছে। সুতরাং দায় শুধু আমাদের একার নয়।

 

গুরুতর অনিয়মের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটি আমাদের বিষয়। অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের লোকদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে। আগে পুরো ঘটনাটি জানতে হবে। তারপর ব্যবস্থা নেবো।

 

প্রসঙ্গত, মুদ্রা পাচার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশের সোনালী ব্যাংক যুক্তরাজ্য (ইউকে) শাখাকে ৩৩ লাখ পাউন্ড জরিমানা দিতে হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের আর্থিক খাত তদারককারী কর্তৃপক্ষ ফিন্যান্সিয়াল কনডাক্ট অথরিটি (এফসিএ) বুধবার সোনালী ব্যাংককে জরিমানা করার এ তথ্য একটি বিদেশি সংবাদ সংস্থা প্রকাশ করে। জরিমানার এই অঙ্ক বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৩ কোটি টাকার বেশি। যুক্তরাজ্য সোনালী ব্যাংককে জরিমানার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির মুদ্রা পাচার নিয়ন্ত্রণ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা স্টিভেন স্মিথকে ব্যাংক খাতের এই ধরনের চাকরিতে নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি তাকে ব্যক্তিগতভাবে ১৮ হাজার পাউন্ড জরিমানা করা হয়েছে।

 

বিশ্বে সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা মুদ্রা পাচারের বড় ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে গত কয়েক বছর ধরে ব্যাংকগুলোর মুদ্রা পাচার প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদারের তাগিদ দিয়ে আসছে। এরপরও সোনালী ব্যাংক ইউকে শাখা সে ধরনের কোনো পদেক্ষপ না নেওয়ায় ব্যাংটিকে জরিমানা দিকে হবে।

 

চীনের প্রেসিডেন্টের সফর প্রসঙ্গ :  চীনের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর চীনের কোনো প্রেসিডেন্ট এই প্রথম বাংলাদেশে সফরে আসছেন। এর আগে তিনি যখন চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন তখন একবার সফরে এসেছিলেন। তার আগে পাকিস্তান আমলে চৌ এন লাই সফর করেছেন।

 

তিনি বলেন, চীনের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর অবশ্যই আমাদের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে তার সফর আমাদের অর্থনীতিতে একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

 

চীনের প্রেসিডেন্টের সফরকালে কি পরিমাণ বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া যেতে পারে বা বাংলাদেশ সরকার কি পরিমাণ অর্থ চাইতে পারে। এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, চাওয়া-পাওয়ার বিষয় নয়। আমি একটি তালিকা করেছি তাতে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হতে পারে। এ ছাড়া আরো একটি তালিকা হয়েছে আমি জানি তার জন্য ২০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। তবে কতটা পাওয়া যাবে তা এ মূহুর্তে বলা যাচ্ছেনা। হ্যাঁ, বেশ কয়টি এমওইউ স্বাক্ষর হবে। দেখা যাক কি হয়।

সূত্র: রাইজিংবিডি