জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধি ভোলাহাটের বাইরুল

কামাল হোসেন:
শারীরিক প্রতিবন্ধি হয়েই জন্ম চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার জামবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের বড়গাছী গ্রামের দরিদ্র রবুর ছেলে বাইরুল ইসলাম। তার বয়স এখন ৩০ বছর। আর ১০জন মানুষের চাইতে সে আলাদা। সে ক্ষুদ্রাকৃতির মানুষ। হাত পা দিয়ে অন্যদের মত কাজ করার শক্তি নাই। হাত ও পাগুলো খুব ছোট ছোট। কথা বলতে পারে। প্রসাব পায়খানার জন্য বাবা- মাকে সহযোগিতা করতে হয়। এ প্রতিবন্ধি র্দীঘ ৩০ বছর ধরে বাবা-মার বোঝা হয়ে চলাফেরা করেন।
প্রতিবন্ধি বাইরুল ২ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে সবার বড়। বাবা অন্যের কামলা দিয়ে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ। সম্প্রতি বাইরুলের সাথে দেখা উপজেলার মেডিকেল মোড়ে অটোভ্যানে শুয়ে থাকা অবস্থায়। তাকে দেখতে ভীড় করেছে শতাধীক মানুষ। কৌতুহলি মানুষের কাছে মনে হচ্ছে সে একজন ম্যাজিসিয়ান(জাদুকর)। সবার ভীড় ঠেলে গিয়ে দেখা যায় মাত্র দেড় ফুটের প্রতিবন্ধি বাইরুলকে। সে ভ্যানের উপর শুয়ে শুয়ে অপলক তাকাচ্ছে সবার দিকে। মানুষের ভীড়টা যেন তার কাছেও লজ্জার। তাই তাড়াতাড়ি সেখান থেকে ভ্যানের চালককে স্থান পরিবর্তনের তাগিদ দেয়। তাকে দাঁড়াতে অনুরোধ করলেও কথায় কান না দিয়ে ভ্যানচালককে যেতে বলেন। শত অনুরোধ করার পর দাঁড়ায়।
তার সাথে  আলাপচারীতা শুরু হলো। প্রথমে কিছুটা উপরওয়ালার উপর আক্ষেপ। তারপর নিজের কষ্টের কথা। সে আজ ৩০ বছর ধরে অন্যের উপর ভরসা করে জীবন-যাপন করছেন। কিন্তু তাকে দেখার কেউ নাই। সরকার প্রতিবন্ধি ভাতা করেছে। কিন্তু আর কোন সুযোগ তার জন্য নাই। চেয়ারম্যান মেম্বার তার জন্য কোন সহায়তা করছে না। ভ্যানে উঠে জীবন জীবিকার জন্য ভিক্ষাবৃত্তি করতে হয় বাইরুলকে। সারাদিনের ভিক্ষার আয় দিয়ে তার ও পরিবারের দিন চলে।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার সবাইকে অনেক সুযোগ দিচ্ছে। কিন্তু তার মত প্রতিবন্ধিন জন্য প্রতিবন্ধির ক’টা টাকা তাও আবার ৬মাস পর পর পায়। আবেগ ভরা কন্ঠে ‘আল্লাহই তো তাকে এমন প্রতিবন্ধি করেছেন কার উপর আর ভরসা’ রাখবেন বলে কেঁদে ফেলেন।
বাইরুল তারপরও বেঁচে থাকতে চান হাজার বছর। সে সহযোগিতা চেয়েছেন সকলের কাছে। আর ১০জনের মত না হোক যেন সে খেয়ে দেয়ে বেঁচে থাকেন। শারীরিক এ প্রতিবন্ধি বেঁচে থাকার জন্য সহায়তা চেয়েছেন কোটিপতি হওয়ার জন্য নই।
এ ব্যাপারে জামবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান মুসফিকুল ইসলাম তারার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তিনি বাইরুলকে সহায়তা করার চেষ্টা করেছি। তবে তাকে স্বাবলম্বী করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন বলে জানান।
এদিকে ভোলাহাট উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নাসিম উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বাইরুলের নামে প্রতিবন্ধী কার্ড ইস্যু করা হয়েছে। সরকারি সহায়তায় সে নিয়মিত প্রতিবন্ধী ভাতা পায়।
এ ছাড়াও সরকারের সহায়তার পাশাপাশি বৃত্তবানদের এগিয়ে অাসার অনুরোধ জানিয়েছেন বাইরুলের পিতা রবু।
প্রতিবন্ধি বাইরুলের বাবা রবুর মোবাইল নং-০১৭২৩-৭৬৩৮০৯।
স/শ