চোরাই তিন গরু নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে আরএমপি পুলিশ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় গেলে চোখে পড়বে থানার আঙিনায় একটি গাভী, একটি ষাঁড় ও একটি বাছুরকে বেঁধে রাখা হয়েছে।

থানার প্রধান ফটকের কাছে খোলা আকাশের নিচে প্রায় ৪ সপ্তাহ ধরে বাঁধা রয়েছে গরু তিনটি। যার দুটি বাদামী রঙা এবং একটি কালো।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই দুটো গরুর মালিক থানার কেউ নয়। বরং থানায় গরু চুরি মামলার খপ্পরে পড়া দুই আসামীর কাছ থেকে পাওয়া।

সম্প্রতি গরু চুরির অভিযোগে তাদের আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়।

আসামীদের কারাগারে পাঠানো হলেও তাদের এই চোরাই গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছে বোয়ালিয়া মডেল থানার পুলিশরা।

এ অবস্থায় থানার বাইরেই তাদের পরিচর্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বাধ্য হয়ে নিজের পকেটের টাকা খরচ করে এই অবলা তিন প্রাণীকে খাবার কিনে দিতে বাধ্য হচ্ছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগরীর উপশহর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই মাহফুজুল ইসলাম।

বোয়ালিয়া থানায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৭ এপ্রিল সকালে গোরহাঙ্গা থেকে নওগাঁগামী রাস্তায় ওই তিনটি গরুকে ট্রাক থেকে নামাতে দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। এসময় তারা গরুর মালিকানার বৈধ কাগজপত্র দেখতে চান।

তখন ধরা পড়ার ভয়ে তিন-চারজন ট্রাক থেকে নেমে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে তাদের মধ্যে থেকে দুজনকে আটক করতে সক্ষম হন।

সেই ফাঁকে রাস্তায় গরু রেখে ট্রাক নিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায় চালকও।

এরপর আটক দুই সন্দেহভাজন গরু চোরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। কিন্তু তারা কোন কাগজপত্র দেখাতে না পারায় উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম মোস্তফা তাদের বিরুদ্ধে গরু চুরির অভিযোগ এনে থানায় মামলা করেন।

এরপর আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে গরুগুলোর প্রকৃত মালিক পাওয়া না যাওয়ায় এবং এক্ষেত্রে গরুগুলোর দায়িত্ব কারা নেবে সে বিষয়ে আদালতের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় গরুগুলোকে নিয়মানুযায়ী থানাতেই রাখতে হচ্ছে।

এখন যারাই থানায় আসেন দেখতে পান গরুগুলো আঙিনা জুড়ে ছড়িয়ে রাখা সামান্য খড়কুটো খাওয়ার চেষ্টা করছে।

এ বিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার এসআই মাহফুজুল ইসলাম কাছে খবর নিয়ে জানা গেছে গরুগুলো গত ২৬ দিন ধরে থানার বাইরেই বাঁধা অবস্থায় আছে। এবং এগুলোকে প্রতিদিন খড়, ভুশি ও ভাতের মাড় খাওয়ানো হয়। যার জন্য প্রতিদিন খরচ পড়ে প্রায় ৭শ থেকে ৮শ টাকা। তিনি নিজেই এই খরচ দিয়ে থাকেন।

তবে এই খাবার ওই তিনটি গরুর দৈনিক চাহিদার জন্য পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এসআই মাহফুজুল এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি নিয়মিত গরুগুলোর পরিচর্যা করেন।

এছাড়া বৃষ্টি বাদলের সময় গরুগুলো কোথায় থাকে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে এসআই মাহফুজুল বলেন, ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে গরুগুলোকে পাশের একটি ছাউনিতে নিয়ে যাওয়া হয়।