চেয়ারম্যানের ছেলেকে হত্যা: ভাবি-ভাতিজিসহ ৬ জন কারাগারে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার গাজীরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জুয়েল মিয়ার শিশুপুত্র আবির হত্যার মামলায় তার ভাবি, ভাতিজি ও ইউপি মেম্বারসহ ছয়জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

রোববার কিশোরগঞ্জ আদালতে তাদের সোপর্দ করা হয়। বিজ্ঞ আদালত আসামিদের কারাগারে পাঠান। এ ছাড়া প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে বলে জানান বাজিতপুর থানার ওসি (তদন্ত) মো. সারোয়ার জাহান।

গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছেন– ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জুয়েল মিয়ার বড় ভাই নজরুল ইসলামের স্ত্রী রুনি আক্তার (৪০), রুনি বেগমের মেয়ে নদী আক্তার (১৫), পার্শ্ববর্তী বাড়ির আশরাফ মিয়ার ছেলে নয়ন (১৯), আক্কাস মিয়ার ছেলে মোতালেব (২০) এবং ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আলাল উদ্দিন (৫০) ও তার ছেলে সাকিল মিয়া (২৫)।

মো. সারোয়ার জাহান জানান, গ্রেফতারকৃতদের রোববার কিশোরগঞ্জের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আটক ছয় নারী-পুরুষকে রিমান্ড আবেদনপ্রাপ্তি সাপেক্ষে শুনানির নির্দেশ দিয়ে বিজ্ঞ আদালত তাদের কারাগারে পাঠান।

তদন্তের স্বার্থে ওই ছয় সন্দেহভাজন আসামিকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজনে প্রত্যেককে ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হবে।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রতিদিনের মতো গাজীরচর ইউনিয়নের বড় ঘাগটিয়া গ্রামের নিজ বাড়ি সাইকেল দৌড়াতে এবং বন্ধুদের সঙ্গে খেলা করতে বাড়ির সামনে যায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জুয়েল মিয়ার পাঁচ বছরের শিশুপুত্র আবির।

তার পর দীর্ঘক্ষণ বাড়িতে না ফেরায় তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। একপর্যায়ে কয়েকশ গজ দূরে চেয়ারম্যান জুয়েলের বড় ভাই নজরুল ইসলামের বাড়ির উঠানে আবিরের সাইকেল পড়ে থাকতে দেখে লোকজন এগিয়ে যায়।

সেখানে আবিরকে নাম ধরে ডাকাডাকি ও খোঁজাখুঁজির সময় নজরুল ইসলামের বসতঘরসংলগ্ন রান্নাঘরের মাটিতে ছোপ ছোপ রক্তের ফোঁটা দেখা যায়।

লোকজন রক্তের সূত্র ধরে বাড়ির পেছনের জঙ্গলে তল্লাশি চালিয়ে আবিরকে গলাকাটা অবস্থায় মরণ যন্ত্রণায় ছটফট করতে দেখে। সেখান থেকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় শনিবার শিশু আবিরের বাবা গাজীরচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জুয়েল মিয়া বাদী হয়ে বাজিতপুর থানায় মামলা করেন।

এ মামলায় তিনি গাজীরচর ইউনিয়ন পরিষদের তিন মেম্বার আনার মিয়া, আলাল উদ্দিন ও রিটন মিয়াসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের কয়েকজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে উল্লেখ করেন।

তবে পুলিশ এ নৃশংস ও বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করে প্রকৃত আসামিদের আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে সন্দেহভাজন আসামিসহ চেয়ারম্যান জুয়েলের নিকটাত্মীয়দেরও অনুসন্ধান ও তদন্তজালের অন্তর্ভুক্ত করেছে।