চুক্তি স্বাক্ষরের পর ফ্রান্সবিরোধী বিক্ষোভের অবসান পাকিস্তানে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

 

দাবি মেনে নিতে সম্মত হওয়ায় ফ্রান্সে হযরত মোহম্মদ (সা.) কে নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ করার কারণে পাকিস্তানে চলমান বিক্ষোভ বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে পাকিস্তানি ইসলামিক পার্টি তেহরিক ই লাব্বাইক টিএলপি।

ফরাসী রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার ও ইউরোপীয় এই দেশটির সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক অবসানের দাবিতে ধর্মীয় নেতা খাদিম হুসেন রিজভীর নেতৃত্বে তেহরিক-ই-লাব্বাইকের হাজারো বিক্ষোভকারী সোমবার রাতে ইসলামাবাদের একটি প্রধান সড়ক অবরোধ করে। পরে তেহরিক-ই-লাব্বাইকের সদস্যরা জানায়, ফরাসী পণ্য বর্জন ও ফরাসী রাষ্ট্রদূতকে বহিস্কার এই দুইটি বিষয় নিয়ে মঙ্গলবার সকালে পাক সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

চুক্তিতে চারটি শর্ত রয়েছে। প্রথমত, স্থানীয় সরকার সংসদে ফরাসী রাষ্ট্রদূতকে দুই বা তিন মাসের মধ্য বহিষ্কার করার প্রশ্ন রাখবে সেই সাথে নতুন করে ফরাসী রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেওয়া হবে না। তৃতীয় শর্ত হলো ফরাসি পণ্য বয়কট সম্পর্কিত,যা পাকিস্তান এবং অন্যান্য দেশগুলোতেও দেখা গিয়েছে। অনেক ইসলামিক দেশে ম্যাখোঁকে ইসলামফোবিক হিসেবে বিবেচিত করে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হয়েছে।

এই চুক্তি থেকে বোঝা যায় পাকিস্তান আজীবনের জন্য ফ্রান্সের পণ্য বয়কট করতে যাচ্ছে। আর এই চুক্তির মাধ্যমে রোববার থেকে চলমান পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের অবসান ঘটেছে। এই বিক্ষোভে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাদের ক্ষমা চাওয়ারও একটি সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইজাজ শাহ এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী পীর নূর উল হক কাদেরী। ইসলামের বিরুদ্ধে নিন্দা নিয়ে পাক সরকারের বিরুদ্ধে প্রায় সরব হয় টিএলপি। তাদের মতে ইসলামের বিরুদ্ধে নিন্দার শাস্তি মৃত্যুদন্ড হওয়া উচিত এবং এই নিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

গেল অক্টোবরে চেচেন বংশোদ্ভূত এক কিশোর ক্লাসে ইসলামের নবী মুহাম্মদের কার্টুন  দেখানোর জন্য ফরাসি শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটির শিরশ্ছেদ করার পরে। ম্যাখোঁ ওই শিক্ষককে “শান্ত নায়ক” হিসাবে আখ্যা দেন। ম্যাখোঁ বলেন, স্যামুয়েল প্যাটিকে হত্যা করা হয়েছিল কারণ ইসলামপন্থীরা আমাদের ভবিষ্যতকে কেড়ে  নিতে চায় এবং তারা জানে “শান্ত নায়ক” যা পারে তারা তা পারবে না।

ম্যাখোঁর এই মন্তব্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ানসহ একাধিক বিশ্বনেতাদের মনে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।  এর জের ধরে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ফরাসী রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বাসে আক্রমণ করার অভিযোগ করেছেন এবং ইউরোপে ক্রমবর্ধমান দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ইসলামিক দেশগুলিকে একত্র হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

 

সূত্র: কালেরকন্ঠ