চিরকুটে মৃত্যুর জন্য ৪ জনকে দায়ী করেছে কলেজছাত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নতুন মোবাইলফোন; কেমন হবে- তাই বন্ধুদের দেখাতে যান মারুফ হোসেন আকাশ (২২)। দেখার সময় বন্ধু রবিন, হৃদয়, সজল ও জুয়েলরা কেড়ে নেয় মোবাইল ফোনটি। এমন ঘটনা সন্ধ্যায় হলেও রাত ১০টা পর্যন্ত দুইটি মোটরসাইকেলে তুলে চারবন্ধু ঘুরিয়েছে আকাশকে। এসময় আকাশের পুরানো ফোনটিও কেড়ে নেন তারা।

সর্বশেষ রাত সাড়ে ১০ টার দিকে আকাশকে খুঁজতে বের হন- বড় ভাই আল-আমিন ও মামা আলম। পবা উপজেলার মোসলিমের মোড়ে দেখা হয় আকাশের সাথে। এসময় বিষয়টি ভাইকে ও মামাকে জানান আকাশ। এরপরে ওই চারজনের কাছে যান তারা। মোবাইল ফেরত দেওয়ার নামে শুরু হয় তালবাহানা। ওই চারজন এক পর্যায়ে আকাশ ও আলমকে মোটরসাইকেলে তুলে নেন। দূরে গিয়ে মারধর করে তাদের ছেড়ে দেয়। এর পরে তারা আকাশ, আল-আমিন ও মামা আলমকে জানান- এবিষয়ে শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) সকালে কথা হবে। আপনারা চলে যান। আর শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে নিজ কক্ষে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে আকাশ।

নিহত আকাশের ভাই আল-আমিন এই ভাবে বর্ননা করছিলেন ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনা। তিনি দাবি করেন- মোবাইল কেড়ে নেওয়ার কারণে টাকা পরিশোধের একটা চাপ ছিল। এছাড়া তাকে (আকাশ) ও মামাকে মারধর করেছে। বিভিন্ন চিন্তাভাবনায় সে আত্মহত্যা করেছে।’ শুক্রবার সন্ধ্যায় ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। আজ শনিবার ময়নাতদন্ত হবে।

আত্মহত্যার আগে আকাশ চিরকুটে লেখা ‘রবিন, হৃদয়, সজল ও জুয়েল নামে চারজনের নাম লিখে গেছেন। আমার মৃত্যুর জন্য এরা দায়ী’। মারুফ ওই চিরকুটে আরও লিখে গেছেন, ‘মা আমাকে মাফ করে দিস। মুন্নি আমি তোকে অনেক ভালবাসি। ভালো থাকিস তুই সুখে থাকিস। ’

রাজশাহীর কাটাখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিদ্দিকুর রহমান বলেন, চিরকুট পাওয়া গেছে।  পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতে চার যুবক মারুফের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। পরে তাদের কাছে ওই মোবাইল ফেরত চাইতে গেলে না দিয়ে উল্টো তাকে ধরে পেটায় ওরা। বাইরে থেকে বিমর্ষ অবস্থায় বাড়ি ফিরে মারুফ তার ঘরে ঢুকে যান। এরপর কোনো এক সময় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।

শুক্রবার সকালে অনেকক্ষণ তারা কোনো সাড়া না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা বেলা ১১টার দিকে মারুফকে ডাকতে যান। এ সময় দরজার ফাঁক দিয়ে ঘরের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ দেখতে পান। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

স/আ