চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে শিক্ষক সঙ্কট: পাঠদান ব্যাহত

কামাল হোসেন:
দীর্ঘদিন ধরে প্রকট শিক্ষক সঙ্কটের মধ্য দিয়ে চলছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের পাঠদান কার্যক্রম। এমনিতেই কলেজে প্রয়োজনের তুলনায় শিক্ষক পদের সংখ্যা কম। তারওপর বর্তমানে ছয়টি বিভাগে কোনো শিক্ষকই নেই। জেলার একমাত্র সরকারি এই মহিলা কলেজে ছাত্রীদের জন্য নেই কোনো কোন আবাসন ব্যবস্থা।

 
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শহরের কাঁঠালবাগিচা এলাকায় ১৯৬৯ সালে এক একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হয় এই মহিলা কলেজটি। এরপর ১৯৯৭ সালে কলেজটিকে সরকারিকরণ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাটিতে লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া। নানামুখি সঙ্কটে পড়ে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম।

 
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক (পাস) ও স্নাতক (সম্মান) বিভাগে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। মাত্র একটি বিষয়ে চালু রয়েছে অনার্স কোর্স। কিন্তু শিক্ষক সঙ্কটের কারণে চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে পাঠদান। প্রতিষ্ঠানটিতে ৩১টি শিক্ষকের পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ১৩ জন শিক্ষক। এছাড়া দীর্ঘদিন থেকে গণিত, উদ্ভিদবিদ্যা, অর্থনীতি, দর্শন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বিভাগে কোন শিক্ষক নেই। ফলে পাঠগ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

 
কলেজের সহকারী অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বর্তমানে শিক্ষক সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করেছে। মাত্র ১২-১৩ জন শিক্ষক নিয়ে ছাত্রী পাঠদান, পরীক্ষা গ্রহণ, দাফতরিক কাজকর্ম করতে আমাদের খুব সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে।

 
স্নাতক (পাস) কোর্সের ছাত্রী ফাহিমা খাতুন জানান, তিনি এই কলেজ থেকেই উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন। তখন থেকেই কলেজে প্রয়োজনীয় শিক্ষক না থাকায় নিয়মিত ক্লাস হয় না। মাঝে মধ্যে কোন ক্লাস ছাড়ায় বাড়ি ফিরে যেতে হয়।

 
একাদশ শ্রেণির ছাত্রী বিপাসা নাজনিন জানায়, কলেজে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই শিক্ষক সঙ্কটের কারণে নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে না। এর ফলে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ফলাফলে প্রভাব পড়তে পারে বলে জানায় সে।

 
একাদশ শ্রেণির আরেক ছাত্রী মরিয়ম খাতুন জানায়, শুধু শিক্ষক সঙ্কটই নয়, জেলার একমাত্র সরকারি মহিলা কলেজ হলেও এখানে নেই ছাত্রী হোস্টেল। কম্পিউটার ল্যাব ও লাইব্রেরি থাকলেও নেই পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা।

 
শিক্ষক সঙ্কটের কথা স্বীকার করে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম সিল্কসিটি নিউজকে বলেন, শিক্ষক সঙ্কটের কারণে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। প্রতি মাসেই শিক্ষকদের শূন্যপদের লিখিত বিবরণ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা দফতরে পাঠানো হয়। কিন্তু দীর্ঘদিনেও নতুন কোন শিক্ষকের পদায়ন হচ্ছে না এই কলেজে।
স/শ