চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৩ জনের নমুনা রিপোর্ট না আসায় চরম উৎকণ্ঠা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:

চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া শিশুর নমুনা রিপোর্ট না পাওয়াসহ গত সাত দিনে পাঠানো ৩৩ জনের নমুনা পাঠানোর পরও রিপোর্ট না আসায় চরম উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে জনমনে । মেশিনে ত্র“টি দেখা দেয়ায় বিলম্বের কারন বলে মনে করছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্বাস্থ্য বিভাগ ,তবে ত্রুটির কথা অস্বীকার করেন রাজশাহী স্বাস্থ্য বিভাগ।

১২ এপ্রিল রবিবার রাত আটটার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুর বাঘরপাড়া গ্রামে করোনার উপসর্গ নিয়ে এক শিশুর মৃত্যুর পর নমুনা সংগ্রহ করা হলেও রিপোর্ট এখনও না পাওয়ায় চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠাসহ আতঙ্কে বিরাজ করছে এলাকাবাসীর মনে। তাৎক্ষনিক সেখানে প্রায় ১০০ টি বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করা হলেও সোমবার দুপুর থেকেই তেমন আমলে নিচ্ছেনা এলাকাবাসী। মানছে না কেউই কোন লকডাউন। শিবগঞ্জের অনেকেই মনে করছেন যদি রিপোর্টে পজিটিভ আসে তবে লকডাউন ভেঙ্গে পড়াই মারাত্বক বিপর্যায়ে পড়তে হবে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত লকডাউন যেন ঠিকমত হয় তার জন্য প্রশাসনের নজরদারী কামনা করেন এলাকাবাসী।

রবিবার রাতে পূর্ব শ্যামপুর বাঘারপাড়া গ্রামের ১৪ বছর বয়সী শিশুটি মারা যায়। এ ঘটনায় গ্রামটির আশেপাশের পরিবারগুলোকে সাবধানে চলাফেরার আহবান জানানো হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। সংগ্রহ করা হয় নমুনা। ঘোষণা করা হয় ঐ গ্রাম লকডাউনের।

শ্যামপুরে রবিবার মারা যাওয়া শিশুটি রাজশাহীর শাহীন ক্যাডেট স্কুলে ৮ম শ্রেনীতে পড়তো । তার বাবা জাহাঙ্গীর আলম নর্থসাউথ ভার্সিটিতে চাকরি করায় ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। ১৫ মার্চ তারা দেশের বাড়ি শিবগঞ্জে আসলে শিশুটিও বাড়ি আসে। গত ৩/৪ দিন যাবত তার মধ্যে করোনার উপস্বর্গ দেখা দিলে শিশুটি রবিবার রাতে নিজ বাড়িতে মারা যায়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন জাহিদ নজরুল চৌধুরি রবিবার রাতে জানিয়েছিলেন , করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ১৪ বছরের এক শিশু মারা যাবার খবর পেয়ে শিশুটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়। নমুনার ফলাফল প্রাপ্তি সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন জাহিদ নজরুল চৌধুরি মঙ্গলবার বিকেলে জানান শ্যামপুরে নিহতের রিপোর্ট পেতে আরো ২/৩ দিন লাগতে পারে,বিলম্বের কারন হিসেবে তিনি জানান মেশিনে ত্র“টির কারণে রিপোর্ট পেতে দেরী হচ্ছে,গত সাত দিনে শ্যামপুরের একজনসহ ৩৩ জনের নমুনা পাঠানো হলেও কারোরই টেস্ট রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। এর আগে পাঠানো ১৯ জনের রিপোর্ট আসে নেগেটিভ।

এর আগে গত ৬ এপ্রিল সোমবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার চৌডলা ইউনিয়নের সাহেবগ্রামে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে এক জনের মৃত্যু হয়। ওই ব্যক্তির বয়স ছিল ৪৫ বছর। ঐ ঘটনায় পর ওই এলাকায় লকডাউন ঘোষণা করে উপজেলা প্রশাসন। নিহতের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানোর পর টেস্ট রিপোর্ট আসে নেগেটিভ।

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডাঃ নওসাদ আলী জানান, মঙ্গলবার ৮২ জন ও ১৫ এপ্রিল বুধবার ৭৪ জনের নমুনা টেস্টসহ গত ১ এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০০ জনের নমুনা টেস্ট করা হয়েছে। দিনে অন্তত ৯৪নের টেস্ট করা হচ্ছে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভাইরোলজি বিভাগ ল্যাব থেকে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন জাহিদ নজরুল চৌধুরি বুধবার দুপুরে জানান রাজশাহী পরীক্ষ কেন্দ্রে চাপ বেশী হবার কারণে রিপোর্ট আসতে বিলম্ব হচ্ছে। বুধবার রাতে আগে পাঠানো ৩৩ জনেরই রিপোর্ট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগের দিনের বক্তব্য মেশিনে ত্র“টি থাকায় বিলম্ব বিষয় বুধবার অস্বীকার করেননি।

স/অ