চাঁপাইনবাবগঞ্জে জমে উঠেছে কোরবানীর পশু হাট

কামাল হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
যত দিন পার হচ্ছে ততই ঘনিয়ে আসছে ঈদুল আযহার দিন। ঈদুল আযহার অন্যতম ইবাদত পশু কোরবানি করা। তাই কোরাবানির পশু কেনার জন্য হাটমুখী হচ্ছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।

ইতোমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাটগুলোতে ক্রেতাদের ভিড়ে সরগরম হয়ে উঠেছে। জমে উঠেছে বেচা- কেনাও। যতদিন যাচ্ছে বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়ও। সাপ্তাহিক হাট ছাড়াও বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে বেচা কেনা হচ্ছে কোরবানির পশু। হাটে হাটে ভারতীয় গরুর উপস্থিতি থাকলেও দেশী গরুর পরিমাণই বেশি।

শিবগঞ্জ উপজেলার তর্তিপুর, আড়গাড়াহাট, খাসেরহাট, মনাকষা, নাচোলের সোনাইচণ্ডি, মলি¬কপুর, গোমস্তাপুরের রহনপুর, ভোলাহাটের গোহালবাড়ি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের বটতলাহাট ও রামচন্দ্রপুরহাট সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বটতলা হাটে ভারতীয় গরুর চাইতে দেশি গরুর সরবরাহ বেশী। অন্যদিকে ভারতের সীমান্ত পেরিয়ে বিভিন্ন করিডোর দিয়ে আসা ভারতীয় গরু রামচন্দ্রপুর হাটে বেশি। এর কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, বটতলা হাটে সদর উপজেলা ও পৌর এলাকার লোকজন দেশি গরু কিনে তাই এখানে দেশি গরুর সমাগম বেশি। আর জেলার বিভিন্ন সীমান্তের বিট-খাটাল দিয়ে হাজার হাজার গরু এসে বাখের আলী ও রামচন্দ্রপুরে জমা হচ্ছে সেখানে দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা গরু ক্রয়-বিক্রয় করছে। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ভাল গরু আসলেও দেশি গরুর দাম বেশি।

রোববার মনাকষা হাটে গিয়ে দেখা যায়, ছোট আকারের গরু ৪০ থেকে ৪৫ হাজার, মাঝারী আকারের ৭০ থেকে ৮০ হাজার, বড় আকারের গরু ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা এবং ছাগল ৯ থেকে ৩০ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

জেলা সদরের বটতরা হাটে গরু কিনতে গিয়েছিলেন পৌর এলাকার ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর অ্যাডভোকেট ময়েজ উদ্দিন জানান, আমি এ বছর কোরবানির জন্য প্রায় ৮০ থেকে ৮৫ কেজি মাংস হবে এমন একটি গরু সাড়ে ৪২ হাজার টাকা দিয়ে কিনলাম।

পৌর এলাকার নতুন ইসলামপুর এলাকার জালাল উদ্দিন জানান, প্রায় আড়াইমন মত মাংস হবে এরকম একটি গরু কিনলাম ৫৩ হাজার টাকায়।

শিবগঞ্জ পৌর এলাকার আবদুল মজিদ জানান, তিনি ২টি খাসি সাড়ে ২৩ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছেন।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আনন্দ কুমার অধিকারী জানান, জেলায় এবার প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়ার কোরবানির জন্য চাহিদা রয়েছে। রোগাক্রান্ত গরু যাতে হাটগুলোতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য ভ্রাম্যমাণ মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।  ৫টি উপজেলায় ৮টি মেডিকেল টিম কাজ করবে।

এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম জানান, এ বছর জেলায় ছোট-বড় ১৮টি কোরবানির পশুর হাট বসেছে। এরমধ্যে একটি অস্থায়ী হাটও রয়েছে। হাটগুলোর ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের টহল নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি জাল টাকার সনাক্তকরণে ৫টি মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। যাতে কেউ প্রতারণা ও অজ্ঞান পার্টিও খপ্পরে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেজন্য সম্প্রতি জেলা পুলিশের সাথে ব্যবসায়ী ও পরিবহন নেতাদের সাথে মিটিং করা হয়েছে।

পাশপাশি জেলা থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন হাটের উদ্দেশ্যে গরু ভর্তি ট্রাক থেকে চাঁদা আদায়ের ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়।

স/অ