চাঁপাইনবাবগঞ্জে জন্মগত বিরল রোগে আক্রান্ত শিশু সাকিবা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
জন্মগত এক বিরল রোগে আক্রান্ত হয়ে দুঃসহ জীবন যাপন করছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিষন গ্রামের দুই বছর বয়সী সাকিবা। আর মেয়ের অনিশ্চিত জীবন নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে বাবা আব্দুস সাত্তার ও মা সাবনিা খাতুনের। মেয়েকে সুস্থ করতে ইতোমধ্যেই ব্যয় করেছেন বহু টাকা। কিন্তু সঠিক চিকিৎসার খোঁজ ও অর্থাভাবে বন্ধ সে পথও।
মেয়ের সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন ও ভবিষৎত নিশ্চিতে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সাকিবার পরিবারের পাশাপাশি প্রতিবেশিরাও।
সাকিবা, দুই বছরের এই নিষ্পাপ শিশুটি জানে না কি অসুখ হয়েছে তার। জন্মগত অজানা এক রোগ বাসা বেঁধেছে তার শরীরে। দিন দিন ফুলে উঠছে তার ডান হাতের পুরোটাই। বয়স বাড়ার সাথে সাথে ক্রমেই তা বাড়ছে হাতের ফোলা অংশ।
হাতের সাথে সাথে ফুলে উঠছে বুকের ডান অংশও। সেই সাথে বড় হচ্ছে সাকিবার অনিশ্চিত জীবনও। জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার বিভিষন গ্রামের সাত্তার-সাবিনা দম্পতির একমাত্র সন্তান সাকিবা। সন্তানের চিকিৎসায় এখন পর্যন্ত বহু চেষ্টা করেছেন তারা। শেষ পর্যন্ত সঠিক চিকিৎসার খোঁজ ও অর্থাভাবে বন্ধ রয়েছে সে পথও। সাকিবার বাবা আব্দুস সাত্তার জানান, জন্মের পর থেকে এই রোগটি তার হাতে দেখা দেয়। আর জন্মের পর থেকেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে দেখিয়েছি কিন্তু ডাক্তারা কোন রোগ ধরতে পারেনি। অবশেষে বাড়িতে ফিরে আসতে হয়। তিনি আরো জানান তার সন্তানের জন্য অনেক টাকা-পয়সা খরচ হওয়ায় নিস্ব হয়ে পড়েছি।
সাকিবার মা সাবিনা খাতুন বলেন, এ ধরনের বড় একটা রোগ কিভাবে সারাবো। আমার স্বামী একজন কৃষক। তারপরও সন্তান সাকিবা জন্মের পর থেকে মেয়ের পেছনে অনেক টাকা খরচে রোগের চিকিৎসা করাতে। এখন আমাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
মেয়ের ভবিষ্যতের কথা বলতেই কেঁদে ফেলের মা সাবিনা। তিনি বলেন, আমরা অনেক চিন্তত মেয়েকে নিয়ে। বাংলাদেশে যদি এই রোগের কোন চিকিৎসা থাকে, তাহলে সরকার ও বিত্তবানরা যেন আমার মেয়ের চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসে।
বিভিশন গ্রামের (প্রতিবেশ) নেফাউর রহমান জানান, এমন দুরাবস্থায় পড়া পরিবারটির সম্পদ বলতে রয়েছে কেবল বসতভিটে। দু’বেলা খাবার জোগাতেই হিমশিম খান দিনমজুর আব্দুস সাত্তার। আবার মেয়ের ডান হাতে অজানা এক রোগ। কিভাবে সম্ভব সংসার ও মেয়েকে সামলানো।
একই গ্রামের (প্রতিবেশী) সানজিদা জানান, এ অবস্থায় সাকিবার ভবিষৎত জীবন নিশ্চিতে সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়ানোর আবেদন করি। যাতে সাকিবা আমাদের মতো স্বাভাবিক জীবনে আসতে পারে। সবেমাত্র তার জীবন শুরু।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতাল শিশু কনসালটেন্ট ডা. মোঃ আবুল কাশেম জানান, চিকিৎসকরা রোগ সর্ম্পকে নিশ্চিত না হতে পারলেও, প্রাথমিকভাবে ধারনা করছেন এটি হেমানজিউমা। তার ডান দিক ডান হাত ও বুক-পিঠের ডাক দিক অসম্ভবভাবে ফুলা। শিশুটির চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন, উচ্চতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার। এ অবস্থায় স্বাভাবিক জীবন-যাপন ফিরে পেতে, সমাজের বিত্তবানদের একটু সহানুভুতি কি পেতে পারেনা নিষ্পাপ সাকিবা!
স/আর