চাঁপাইনবাবগঞ্জে কমেনি চালের দাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
সারা দেশে চালের বাজারে অস্থিরতার পর সরকারের সাথে চালকল মালিকদের বৈঠকে কেজিতে দুই টাকা করে চালের কমানোর সিদ্ধান্ত হলেও এখনও চাঁপাইনবাবগঞ্জের চালের বাজারে তা কার্যকর হয়নি। আর খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, চালকল মালিক ও মজুদকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারলেই চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে। যদিও মিল মালিক ও ব্যবসায়ী নেতাদের দাবি-আস্তে আস্তে চালের দাম কমে আসবে। সেই সঙ্গে সরকারের চালের মজুদ বাড়াতে ও বেশি পরিমাণ চাল রপ্তানি করতে পারলেই চালের বাজার স্থিতিশীল হয়ে আসবে বলে তারা জানান।

এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রশাসন বলছে, চাল মজুদকারীদের বিরুদ্ধে মজুদের অভিযোগ পেলেই নেয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা। সংশ্লিষ্টদের তথ্য মতে, খাদ্য উদ্বৃত্ত অঞ্চল ও দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চাল উৎপাদনকারী জেলা হিসেবে পরিচিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ। অথচ পর্যাপ্ত সরবরাহ ও উৎপাদন হলেও অস্থির হয়ে উঠেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের চালের বাজার। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সব ধরনের চালের কেজি প্রতি দাম বেড়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা। এতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিপাকে পড়েছেন মধ্যবিত্তরাও।

কোরবানির ঈদের আগে চালের বাজার স্থিতিশীল হয়ে আসছিল। গত এক সপ্তাহে চালের বাজার কেজি প্রতি ৮-১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর চালের বাজার স্থিতিশীল করতে গত ১৯ সেপ্টেম্বও ঢাকায় সরকারের একাধীক মন্ত্রীর সাথে চালকল মালিক ও ব্যবসায়ীদের বৈঠকে চালের দাম কেজিতে ২ টাকা করে কমানোর সিদ্ধান্ত হয়। তবে, জেলার চাল বাজারে দুই টাকা তো দূরের কথা এক টাকাও কমেনি বলে জানান চাল বিক্রেতারা। একাধিক চাল বিক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, গত সপ্তাহের দরে অর্থাৎ ৫২-৫৮ দরে মোটা জাতীয় চাল বিক্রি হচ্ছে।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসার মো. রিয়াজুর রহমান রাজ সিল্কসিটি নিউজকে জানান, জেলায় চলতি ইরি-বোরো চাল ক্রয়ের জন্য তালিকাভুক্ত ১৯২ জন চাল মিল মালিকের সাথে চুক্তি হয়। তারা ১৬ হাজার মে. টন চাল সরবরাহ করবেন। কিন্তু মাত্র ২৯ জন চাল মিল মালিক ১৪০৬ মে. টন চাল সরবরাহ করেন। চাল সরবরাহ দিতে ব্যর্থ ১৬৩ জন মিল মালিকের বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গের অংশ হিসেবে আগামী ২ বছর তারা সরকারে কাছে আর চাল বিক্রি করতে পারবেন না। তবে, চালের বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে গত সোমবার থেকে জেলা সদরের পৌর এলাকায় ৬ জন ডিলারের মাধ্যমে ৬ মে. টন করে খোলাবাজারে চাল বিক্রি শুরু হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মো. এরশাদ হোসেন খান জানান, চালের বাজার ও মজুদকারীদের ব্যাপারে প্রশাসন খুব সতর্ক রয়েছে। ইতিমধ্যে বাজার মনিটরিং কমিটির জরুরি সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক জেলার বিভিন্ন অটোরাইস মিল ও গোডাউনের চালের ষ্টক পরিদর্শন শেষ করেছেন কমিটির সংশ্লিষ্টরা। প্রতিবেদন পেলেই নেয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা মিল মালিক ও আতব ধান-চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মশিউল করিম বাবু সিল্কসিটি নিউজকে জানান, তারা ধান কেনায় বাজারে ১০০-১৫০ টাকা করে ধানের দর কমে এসেছে। তিনি আরো জানান, এখন চালের দর আস্তে আস্তে কমে আসবে। আর সরকারের চালের মজুদ বাড়াতে, অন্যদেশ থেকে বেশি পরিমাণ চাল রপ্তানি করতে পারলেই চালের বাজার স্থিতিশীল হয়ে আসবে বলে মনে করেন তিনি।

সোনামসজিদ স্থলবন্দরের শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার সাইদুল ইসলাম জানান, সোনামসজিদ বন্দর দিয়ে গত জুলাই থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৮০ হাজার ৯৬৩ মে. টন চাল আমদানি হয়েছে।
স/শ