চাঁদপুরের মসজিদটি অবশেষে গেজেটভুক্ত

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

চাঁদপুরের জঙ্গলে পাওয়া সুলতানি আমলের মসজিদটি অবশেষে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের গেজেটভুক্ত হয়েছে।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে সদর উপজেলার ছোটসুন্দর মসজিদটি পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষণযোগ্য বিবেচিত হওয়ায় সরকার এটি সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মসজিদটি সংরক্ষণের বিষয়ে চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী যথেষ্ট আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং আমাদের তাগিদ দিয়েছেন।সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব অসীম কুমার দে স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এ বিষয়ে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব অসীম কুমার দে জানান, গত মাসেই আমরা প্রত্নতত্ত্ব অধিফতরের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে মসজিদটিকে পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি বলেন, সেখানে খুব শিগগিরই একটি সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দেয়ার জন্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক যিনি এটি নিয়ে কাজ করেছেন এবং করবেন তাকে বলা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব একটি প্রকল্প তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে।

এদিকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক ড. আতাউর রহমান বলেন, আজকালের মধ্যেই ওই মসজিদ এলাকায় যাব। প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে সেখানে সাইনবোর্ড সাঁটানো হবে।

প্রসঙ্গত, মসজিদটি সংরক্ষণ এবং ওই এলাকাকে একটি পর্যটনকেন্দ্র রূপ দেয়ার জন্য এলাকাবাসী এমনকি চাঁদপুরবাসীও অধীর আগ্রহে রয়েছে। কারণ, এটি উদ্ধার করার দিনকয়েক পরই এলাকার সন্তান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি মসজিদটি পরিদর্শন করেন এবং এটিকে সংরক্ষণ করে পর্যটন অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলার ব্যবস্থা নেবেন বলেন জানান।

এ ছাড়া চাঁদপুর প্রশাসনের কর্মকর্তারা একাধিকবার মসজিদটি পরিদর্শন করেন। মসজিদ ও এর আশপাশের এলাকা নিরাপদ রাখার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়া হয়।

সুলতানি আমলের গম্বুজ মসজিদটি গত বছর সংরক্ষণের জন্য উদ্ধার করা হয়। স্থানীয় প্রশাসন ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের লোকজন এটি পরিদর্শন করেন। এর মধ্যে প্রথমেই আসেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক রাখী রায় ও তার প্রতিনিধিদল।

পরে প্রত্নতাত্ত্বিকরা যাচাই করে নিশ্চিত হয়েছেন এটি প্রায় ৫০০ বছর আগে নির্মিত মসজিদ।

প্রায় ৫০০ বছর আগে সুলতানি আমলে মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। মসজিদের ভেতর গম্বুজবিশিষ্ট। মসজিদটির দেয়ালঘেঁষে চারপাশে ৪টি ছোট মিম্বার রয়েছে, বাইরের দৈর্ঘ্য (উত্তর-দক্ষিণ) মিম্বারসহ ১৬ ফুট এবং বাইরের প্রস্থ (পূর্ব- পশ্চিম) ১৫ ফুট।

মসজিদটির ভেতরের দৈর্ঘ্য ৮ ফুট ১০ ইঞ্চি এবং প্রস্থ ৭ ফুট ৩ ইঞ্চি। মসজিদটির ১টি মেহরাব রয়েছে এবং দেয়ালে ছোট ছোট কয়েকটি খোপ রয়েছে। মসজিদের দেয়ালের পুরুত্ব প্রায় ৩৩ ইঞ্চি। পুরো মসজিদটি পোড়া ইট, বালি, চুনা ও সুরকি দিয়ে নির্মিত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের ধারণা।