চবির ১৩ শিক্ষার্থী বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ১৩ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি সাবেক দুই শিক্ষার্থীর সনদ স্থগিত এবং এক শিক্ষার্থীর ছাত্রত্বও স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী।

সংবাদ সম্মেলনে প্রক্টর জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বোর্ড অব রেসিডেন্স, হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিন কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠিত বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বহিষ্কৃতদের ক্যাম্পাসে অবস্থান নিষিদ্ধ ও একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বছরের ১ মার্চ নগরীর সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শিভু দাশগুপ্তের হয়ে পরীক্ষা দেওয়ার কারণে চবির শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের সৈয়দ ফাহিম জাফরিকে এক বছরের জন্য, জালিয়াতি মাধ্যমে ভর্তির বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মো. মাঈন নেওয়াজের ছাত্রত্ব স্থায়ীভাবে বাতিল, আমানত হলের দুই শিক্ষার্থীকে মারধর করে ছিনতাইয়ের ঘটনায় রসায়ন বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের মিজানুর রহমান ফকিরকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার, ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় উসকানির দায়ে পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ইমরান নাজির ইমন ও নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের জিয়াউল হক মজুমদারকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

অন্যদিকে, গত ১ ফেব্রুয়ারি এ এফ রহমান হলে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও অর্থনীতি বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের এমদাদুল হক এবং যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের ফাহিম হাসানকে মারধরের ঘটনায় চার শিক্ষার্থীকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা হলেন- লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের দ্বীপায়ন দেব ও সাব্বিরুল ইসলাম, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের অর্ণব বড়ুয়া ও আরবি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের জুবায়ের আহমেদ।

পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুল্যান্সের অবৈধ ব্যবহার ও মেডিক্যাল কর্মচারীদের হুমকির কারণে অর্থনীতি বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের এইচ এম হাসানুজ্জামানকে এক বছরের জন্য, বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনিস্টিউটে দুই শিক্ষার্থীকে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ইতিহাস বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সাব্বির হোসেনকে এক বছর এবং অর্থনীতি বিভাগের মামুনুর রশিদকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

এদিকে গত বছর ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির কারণে বাংলা বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের মো. জামশেদুল কবির ও ইতিহাস বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের আনোয়ার হোসেনের সনদ স্থগিত ও আইন বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের মোশাররফ হোসেন শিকদারকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্মেলনে আরো জানানো হয় জঙ্গিবাদে সম্পৃক্তার অভিযোগে গত বছর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের মো. আজফার হোসেনকে আটক করেছিল পুলিশ। পরবর্তীতে আজফারকে সাময়িক বহিষ্কার করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ওই শিক্ষার্থী চিঠির জবাব না দেওয়ায় তার ওই বহিষ্কারাদেশ বহাল রাখা হয়েছে।