বাঘা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাঘায় পদ্মার ভাঙনে ৫ বার সরিয়ে নেওয়া চকরাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভ্রাম্যমান শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারী) সকালে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা শ্রদ্ধা জানান।
একটি বেঞ্চের সাথে লোহার পাত দিয়ে শহীদ মিনারটি তৈরী করা হয়েছে। তৈরী করা শহীদ মিনারে নিচে ৫টি সিট বেঞ্চ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় তৈরী করা এই শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।
জানা যায়, বিদ্যালয়টি ১৯৭৩ সালে স্থাপন করা হয়। নদী ভাঙ্গনের কারনে ১৯৭৯ সালে, ১৯৮৬ সালে, ১৯৯৮ সালে, ২০১৬ সালে ও সর্বশেষ ২০২২ সালে স্থানান্তর করা হয়। বিদ্যালয়টি পদ্মার ভাঙন থেকে এক কিলোমিটার পূর্ব-উত্তর দিকে নতুনভাবে নির্মান করা হয়েছে। বারবার নদী ভঙনের কারনে বেঞ্চের সাথে লোহার পাত দিয়ে শহীদ মিনারটি তৈরী করা হয়েছে। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে ১২৬ জন শিক্ষার্থী ও ৫ জন শিক্ষক রয়েছে।
পরে বিদ্যালয়ের কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুস সাত্তার। চকরাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল আযম, চকরাজাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম, শিক্ষক হাসিবুজ্জামান মিলন, আসমাউল হোসেন রাসেল, তারেক হাসনাত প্রমুখ। পরে চিত্রাংকন প্রতিযোগীতায় বিজয়ীদের মধ্যে প্ররুস্কার বিতরণ করা হয়।
চকরাজাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান বলেন, আমি এই স্কুলে যোগদানের পর তিনবার ভাঙনের কারনে স্থানান্তর করা হয়েছে। এর আগেও দুইবার স্থানান্তর করা হয়েছে। বারবার ভাঙনের কারনে বেঞ্চের সাথে লোহার পাত দিয়ে শহীদ মিনার তৈরী করা হয়েছে। নির্মান করা শহীদ মিনারের ৫টি সিট বেঞ্চ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় তৈরী করা শহীদ মিনারের শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান হয়েছে।
চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল আযম বলেন, পদ্মার ভাঙ্গনে আমি নিজেই আশ্রয়হীণ হয়ে পড়েছি। আমার পরিবারের প্রায় দুই শতাধিক বিঘা জমি কয়েক বছরের ব্যবধানে পদ্মা গর্ভে চলে গেছে।
এছাড়া কয়েক বছরের ব্যবধানে কমিউনিইট ক্লিনিক, বিজিব ক্যাম্প, মসজিদ, হাজার হাজার একর ফসলি জমি, গাছপালা, স্কুল পদ্মা গর্ভে চলে গেছে। বর্তমানে চকরাজাপুর উচ্চ বিদ্যালয়টি অসময়ে ভাঙন থেকে মাত্র ৫ মিটার দুরে রয়েছে।