গোমস্তাপুরে ঋণ পরিশোধ করেও জেলে কৃষক

গোমস্তাপুর প্রতিনিধি:

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার গোমস্তাপুর ইউনিয়নের বালুগ্রামের কৃষক আফজাল হোসেন ব্যাংক ঋণের পুরো টাকাই পরিশোধ করেও গত ২দিন ধরে তিনি জেলহাজতে রয়েছেন। তার বন্ধকি দায়মুক্তি দলিল সম্পাদনও করে দিয়েছে ব্যাংক। তারপরও ব্যাংকের মামলায় এখন তিনি জেলহাজতে রয়েছেন। যদিও ব্যাংক ম্যানেজার বলেছিলেন টাকা পরিশোধ করলেই মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তা করেনি।

গোমস্তাপুর থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, কৃষক আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারি থাকায় তাকে বৃহস্পতিবার নাচোল থেকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়। এর পর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

জানা গেছে, আফজাল হোসেন ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের রহনপুর শাখা থেকে তার এবি কৃষি খামারের ওপর ২০ লাখ টাকা ঋণ নেন। ওই টাকায় তিনি জমিতে আম, পেয়ারা ও পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন।

 

কিন্তু বৈরী আবহাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে ঋণের কিস্তি সঠিকভাবে পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়ে তিনি। বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষকেও জানান। তারপরও তার নামে ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত চারটি মামলা করা হয়। তখন ব্যাংকের মোট দাবি ছিল ২২ লাখ টাকা। এদিকে মামলার পর আফজাল ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

এ সময় ব্যবস্থাপক আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, ঋণ পরিশোধ করলে মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। ওই আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বন্ধকি সম্পত্তি বিক্রি করে ও বিভিন্নভাবে টাকা সংগ্রহ করে ব্যাংকের সব পাওনা পরিশোধ করেন। সুদ ও মামলার খরচসহ তার কাছ থেকে ২৯ লাখ ৯১ হাজার টাকা আদায় করা হয়। যদিও ব্যাংক ২২ লাখ টাকার দাবিতে মামলা করেছিল। ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ওই টাকা আদালতের মাধ্যমে না নিয়ে সরাসরি ব্যাংকে জমা নেন।

এর পর গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ রহনপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে তাকে বন্ধকি দায়মুক্তি দলিল নিবন্ধন করে দেয়। কিন্তু এখনো মামলা প্রত্যাহার করেনি। বিষয়টি গত নভেম্বর মাসে জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খান ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের উদ্যোগ নেন। তবে তিনি সফল হতে পারেননি।

কৃষক আফজাল হোসেনের গ্রেফতারের বিষয়টি জানার পর জেলা প্রশাসক একেএম গালিভ খাঁন বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি আগেই ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে বলার পরও সমাধান হয়নি। তিনি বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য শুক্রবারও ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে বলেছেন বলে জানান। স/আর