গোমস্তাপুরের দরিদ্র ঘরের মেধাবী ছাত্রী তামিমার লেখাপড়া হুমকির মুখে

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি:

এসএসসিতে জিপিএ-৫। এইচএসসিতে পা পিছলে জিপিএ-৪। তাতে কি? রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হয়ে সেই আক্ষেপ আর নেই। তবে এখন আছে সামনের দিনগুলোর চিন্তা হতদরিদ্র পরিবারের সদস্য তামিমা খাতুন পড়াশোনা শেষ করবেন তো?

 
পিতৃহারা হওয়া এই অদম্য মেধাবীর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার খোসালপাড়ায়। ২০১৪ সালে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পান তামিমা। এইচএসসি পর্যন্ত তিনি প্রথম আলো ট্রাস্টের বৃত্তি পেয়েছিলেন।

 
তামিমারা চার ভাইবোন। অভাবের সংসারে খেয়ে না-খেয়েই লেখাপড়াটা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। তামিমার বড় বোন পড়েন স্নাতক শেষ বর্ষে। ছোট বোন পড়ে উচ্চ মাধ্যমিকে। আর ছোট ভাই ষষ্ঠ শ্রেণিতে। বড় ও ছোট বোন দুটো প্রাইভেট পড়িয়েই মোটামুটি লেখাপড়ার খরচটা চালিয়ে নিতে পারে। কিন্তু তামিমা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর প্রাইভেট পড়ানোর আয় কমে গেছে। তেমনি আগের চেয়ে এখন পড়ার খরচও বেড়েছে।

 

মা সোনাভান বানু বলেন, ‘তামিমাকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখি। খেয়ে না-খেয়েই মেয়েটা এত দূর পর্যন্ত আসল। জানি না বাকি পথটা পাড়ি দিতে পারব কি না।’
তামিমার বাবা মাইনুল ইসলাম মারা গেছেন আট বছর আগে। মা সোনাভান বানু কখনো ক্ষেত মজুর, কখনো গৃহকর্মীর কাজ করে এখনো পাঁচ সদস্যের সংসার চালান। এসএসসি পরীক্ষার আগে তামিমাও গ্রামের পাশের একটি বাগান পাহারার কাজ করতেন।

 
গোমস্তাপুর সোলেমান মিয়া ডিগ্রি কলেজ থেকে এসএসসি পাস করেন তামিমা। এ কলেজের গণিতের শিক্ষক লুৎফর রহমান বলেন, ‘তামিমা কখনো ক্লাস বাদ দেয়নি। এ জন্য প্রাইভেটও পড়তে হয়নি। এইচএসসিতে সে জিপিএ-৫ পায়নি বলে অবাক হয়েছি। কিন্তু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার খবরে খুবই আনন্দিত হয়েছি। আমিসহ কলেজের অনেক শিক্ষকেরই বিশ্বাস, তামিমা লেখাপড়ায় ভালো ফল করবে। ওর লেখাপড়ায় সহায়তার জন্য কেউ এগিয়ে আসুক এই আহ্বান জানাই।’

স/অ