গোদাগাড়ীতে মাঠ জুড়ে সরিষা ফুলের সমারোহ, বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

আব্দুল বাতেন, গোদাগাড়ী:

রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলাসহ বরেন্দ্র অঞ্চলের মাঠে মাঠে হলুদ রঙের আভায় সরিষার ফুলে মাঠে এক অনন্য আকর্ষণ দেখা দিয়েছে। বরেন্দ্র অঞ্চলের মাঠগুলোতে যেদিকে তাকানো যায় সেদিকেই সরিষার ফুলের দেখা মিলে। দুচোখ মেলতেই চোখ জুড়িয়ে আসে।

 

এবার উপজেলার বিলচড়ই মাঠেই ৪৫০ হেক্টর জমিতে এ সরিষার আবাদ হয়েছে। এ বিলচড়ই মাঠে মধু সংগ্রহকারীরা খাচায় মধু সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। সরিষার ফুলগুলোতে মৌমাছির ব্যাপক আহরণ দেখা মিলেছে। আর এ উপজেলায় সরিষার সমারোহে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত মৌ মাছিরা। মৌ মৌ শব্দে পুরো মাঠ মুখরিত। কম খরচে বেশি লাভের আশায় কৃষকরা এবার বোরো ধানের জমিতে আগাম এই ফসলের চাষ করেছেন।

 

এবারে কৃষকরা সরিষার উচ্চ ফলনশীল জাত হিসাবে উফশী, টলি-৭ ও সম্পদ এই তিন জাতের সরিষা চাষ করেছেন।

 

গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, এ উপজেলাতে প্রায় ৬ হাজার ২’শ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছে। আর এখন পর্যন্ত চলতি রবি মৌসুমে উফশী জাতের ৫ হাজার ৭’শ হেক্টর জমিতে সরিয়ার চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন এলাকার সরিষা চাষিরা।

 

এ বিষয়ে বাসুদেবপুর গ্রামের কৃষক হেলাল উদ্দিন সিল্কসিটি নিউজকে জানান, মূল্য কম হওয়ায় ধানের চাষ করে প্রতি বছরই তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। গত বছরের বোরো ধান এখনো অনেক কৃষকের ঘরে মজুত রয়েছে। তাই বিকল্প হিসেবে অন্যান্য ফসলের মধ্যে তিনি সরিষা চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এবার আমি বাসুদেবপুর ইউনিয়নের বিল চড়ই মাঠে ৬ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছি, সেচ খরচসহ প্রতিবিঘা সরিষার আবাদে প্রায় ৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিঘা প্রতি ৪ মন করে ফলন পাবো বলে আশা করছি। সব খরচ বাদে ৬ বিঘায় ৩০ হাজার টাকা আয় হবে বলে আশা করেন। সরিষা তুলে নিয়ে ওই সব জমিতে তিনি ধান রোপন করবেন। সরিষার ফসল থেকে উপার্জিত আয় বোরো ধান উৎপাদনে সহায়তা পাবেন বলে তিনি আশা করছেন।

 

লালবাগ গ্রামের কৃষক মেহেদী হাসান জানান, ধান চাষ করে কৃষকরা লোকসান হওয়ায় এলাকার কৃষকরা আগাম জাতের সরিষা চাষের দিকে বেশি ঝুঁকেছেন। এছাড়াও সরিষা উৎপাদনে সার কম প্রয়োগ করতে হয়, সেচ, কীটনাশক ও নিড়ানীর প্রয়োজন হয় না। খরচ কম ও স্বল্প সময়ে এ ফসল হয়ে থাকে।

 

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিকুর রহমান সিল্কসিটি নিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সরিষার চাষ হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার আবাদ থেকে কৃষকরা বাড়তি মুনাফা পাবেন বলে তিনি আশা করছেন।

 

তিনি আরও জানান, এবারে প্রতি বিঘায় সরিষার পরিমাণ ৭ মণ হারে ধরা হয়েছে। সরিষার বিভিন্ন রোগ-বালায় কৃষকদের করণীয় ও তা থেকে সরিষার আবাদ রক্ষার কৌশল সম্পর্কে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

স/অ