গাড়ির চাকার মধ্যে লুকানো ছিল ৪৬ সোনার বার!

এবার চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রানওয়ের একপাশে ফেলে রাখা গাড়ির চাকার মধ্য থেকে অবৈধ সোনার বার উদ্ধার করা হয়েছে। চাকাগুলো ছিল রানওয়ের পাশে থাকা বাংলাদেশ বিমানের একটি ওয়ার্কশপে। সেখানে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা অনেকগুলো চাকা তল্লাশি করে একটি গাড়ি চাকার মধ্যে থেকে ৪৬টি সোনার বার উদ্ধার করেছে একটি সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার দল। সেগুলোর ওজন পাঁজ কেজির বেশি এবং বাজারমূল্য সাড়ে তিন কোটি টাকা।

আজ মঙ্গলবার এই ঘটনা ঘটে। তবে ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি গোয়েন্দা দল। এতদিন বিমানের সিটের নীচে, লাগেজ রাখার স্থানে অবৈধ সোনার বার আটকের ঘটনা জানা গিয়েছিল কিন্তু চাকার মধ্যে লুকিয়ে সোনার বার আটকের ঘটনা এটিই প্রথম।

ধারনা করা হচ্ছে, পরিত্যক্ত চাকাটি মূলত রানওয়ের মধ্যে লাগেজ পরিবহনকারী গাড়ির এবং সেটি বাংলাদেশ বিমানেরই। সেই গাড়ির চাকার মধ্যে কেন সোনার বার লুকানো ছিল কিংবা না নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। তবে ধারনা করা হচ্ছে, বিমানে আনা সোনার বার এনে কাস্টমস পার হয়ে ছাড় করার সুযোগ না পেয়ে সাময়িক সময়ের জন্য পরিত্যক্ত চাকার ভিতর লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। পরে সুযোগ বুঝে সেগুলো বন্দর থেকে বের করা হতো।

জানতে চাইলে গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মী বলেন, ‘বিকালের দিকে খবর আসে রানওয়েতে সোনার বারের একটি চালান আছে। কিন্তু কোথায় আছে সেটি জানা যায়নি। পরে সবাই মিলে রানওয়ের পাশে থাকা বাংলাদেশ বিমানের একটি ওয়ার্কশপে অসংখ্য গাড়ির চাকা দেখতে পাই। সেই চাকা একের পর এক তল্লাশি করে শেষ পর্যন্ত একটি চাকার মধ্যে কালো রঙের পলিথিনে মোড়ানো একটি জিনিস পাই। প্রথমে সেটি স্ক্যান করে নিশ্চিত হই। পরে বাংলাদেশ বিমানের লোকজন ডেকে এনে চাকা খুলে ৪৬টি অবৈধ সোনার বার পাই, যেগুলোর ওজন ৫ কেজি ৩৩৩ গ্রাম। আর বাজারমূল্য ৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। ’

এ ঘটনায় বিমানের কর্মীর সংশ্লিষ্টতা কোনোভাবেই সোনা চোরাচালান সম্ভব নয় মনে করছেন গোয়েন্দারা। বাস্তবেও তাই। কারণ গাড়ির চাকার মধ্যে এভাবে সোনার বার লুকানো সত্যিই বিস্মিত হওয়ার মতো। এই ঘটনায় চট্টগ্রাম বিমানের কারো সম্পৃক্ততা রয়েছে এটা নিশ্চিত গোয়েন্দারা। কিন্তু সেই ব্যক্তি কে তা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জানার সুযোগ আছে বলে জানান তারা।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের পরিচালক উইং কমান্ডার ফরহাদ হোসেন খান বলেন, রানওয়ের পাশে হলেও ওই এলাকা বাংলাদেশ বিমান ব্যবহার করে। সেটি সিসিটিভি ফুটেজের আওতায় নেই। তবে ধারনা করা হচ্ছে, একটি পক্ষ ওইখানে সোনার বার রেখে গেছে। আরেক পক্ষ এসে সেখান থেকে হাতবদল করে নিয়ে যেত। তবে কারা এই কাজটি করেছে পুলিশি তদন্ত সাপেক্ষে জানা সম্ভব। এ ব্যাপারে পতেঙ্গা থানায় একটি মামলা করছে শুল্ক গোয়েন্দা দল।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ