গানে শ্রোতাদের মাতিয়ে রাখা সেই ছেলেটি

সিল্কসিটিনিউজ বিনোদন ডেস্ক:

‘বর্ণে গন্ধে ছন্দে গীতিতে হৃদয়ে দিয়েছ দোলা’- শচীন দেব বর্মণের এই গানটি নতুন সংগীতায়োজনে গেয়ে লাখো হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন তিনি। স্টেজ শো বা অ্যালবামে নয়; স্রেফ ইউটিউবের সুবাদে ছেলেটি এখন চেনামুখ। একনাগারে কয়েক ঘণ্টা বুদ হয়ে এই গান শুনেছেন এমন অসংখ্য শ্রোতা আছে।

 

পুরনো গানকে সামনে এনে শ্রোতাদের বুদ বানানো ছেলেটির নাম মেহরাব চৌধুরী। তার গানে মজেছিলেন খ্যাতিমান নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, রেদওয়ান রনিসহ অনেকেই। কে এই ছেলে?

 

এমন রসের ধারায় গলা ছেড়ে গাওয়া মেহরাব সিলেটের বাসিন্দা। তার নিজের ধারণাই ছিলো না গানটি এতোটা সাড়া জাগাবে। এরই মধ্যে সোয়া লাখবার এটি দেখা হয়েছে ইউটিউবে।

 

এরপর তার ব্যান্ড ঐরাবতের পরিবেশনায় ‘আমি বাংলায় গান’ গানটি আসে ইউটিউবে। শহীদ মিনারে এর মিউজিক ভিডিও ধারণের সুবাদে সবমহলে প্রশংসিত হন তারা। সুপরিচিত গানটি অভিন্ন সুরে ভিন্ন ধাঁচে গেয়েছেন মেহরাব। কেউ কেউ বলেছেন, গানটি তার গলায় দারুণ মানিয়েছে। ঐরাবতের পরিবেশনায় ‘মাটির পিঞ্জিরার মাঝে’ গানটি ইউটিউবে আসার পর থেকে দর্শক মাতাচ্ছে।

আগামীতেও পুরনো গানগুলো নতুন আঙ্গিকে উপস্থাপনের চেষ্টা করবেন বলে জানালেন মেহরাব। তাদের ব্যান্ডের লক্ষ্য, পুরনো গানগুলো আবার নতুন করে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। ব্যান্ডের নাম নির্বাচনেই আছে সেই বার্তা। ঐ-তে ঐরাবত, শিশুদের প্রথম পাঠের সেই ‘ঐরাবত’ থেকেই বেছে নেওয়া হয়েছে ব্যান্ডের নাম। বর্ণটি হারিয়েই যাচ্ছে প্রায়!

 

মেহরাবের ব্যান্ড ঐরাবত এ বছরের শেষ দিকে নিয়ে আসবে তাদের আ্যলবাম। মেহরাব বললেন, ‘অ্যালবামের সব গান মৌলিক। এ পর্যন্ত যে ৭-৮টি গান প্রস্তুত করেছি তার সবই আমার লেখা।’ বছর শেষের আগেই আ্যলবামটি আসার আগে মেহরাবের গলায় শ্রোতা-দর্শকরা আর দু’একটি হারানো দিনের গান পেতে পারেন ইউটিউবে।

নতুন গানগুলো প্রসঙ্গে মেহরাব জানান, মিউজিক সর্বস্ব গানে তিনি বিশ্বাসী নন। তার সব গানে একটা বক্তব্য থাকা চাই। কারণ বক্তব্য না থাকলে গান টেকসই হয় না। ‘গানে যখন গল্প থাকবে তখন মানুষের মনে টিকবে’-বললেন মেহরাব।

 

বাংলানিউজকে মেহরাব বললেন, ‘ছোট শহরে থেকে ব্যান্ড করে অতো বড় স্বপ্ন দেখতাম না। তবে ইউটিউবে দেওয়ার পর দেখি সেটি ছড়িয়ে পড়েছে। তখনই বিশ্বাস জন্মেছে। এই প্রেরণায় এগোচ্ছি আমরা।’ যোগ করে তিনি বলেন, ‘মানুষকে একটা উপলক্ষ্য দিতে হবে গান শোনার। এটা আমরা বিশ্বাস করি। আমাদের গানে সেটা থাকবে। ব্যান্ডে আমাদের সবার ভূমিকা সমান। একেকটা গান আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা। আর আমরা বন্ধুর মতোই।’

 

মেহরাবের গানে হাতেখড়ি ছোটবেলায়। তবে সেটা প্রাতিষ্ঠানিক নয়। গাইতে গাইতে গায়েন আর কি! বাবা বাহাউদ্দিন চৌধুরী গান খুব পছন্দ করতেন। বিশেষ করে রাধারমণের গান। সিলেটের জগন্নাথপুরের রাধরমণের পাশেই মেহরাবের বাড়ি। এখন তাদের বাসা সিলেট নগরীর আম্বরখানার বড়বাজারে।

 

মেহরাবের মা রাবেয়া খানম চৌধুরী স্কুল শিক্ষিকা। তিনিও গান পছন্দ করেন। বরাবরই ছেলেকে গানে উৎসাহ দেন বাবা-মা। সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ এবং নর্থ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেছেন মেহরাব। এখন সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নভোএয়ার এয়ালাইন্সের গ্রাউন্ড ফিল্ডে কর্মরত আছেন তিনি।

 

বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দর্শক-শ্রোতা মাতিয়েছেন মেহরাব। তার ব্যান্ডের প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটে তাহসানের সঙ্গে যৌথভাবে একটি কনসার্টে। ঐরাবত ব্যান্ডের লাইনআপ : মেহরাব (কণ্ঠ), সায়মন খান (বেজ গিটার), অমিক বেদ (লিড গিটার), লিটন দেব (কিবোর্ড)।

* ‘বর্ণে গন্ধে ছন্দে গীতিতে হৃদয়ে দিয়েছ দোলা’ গানের ভিডিও : 

* ঐরাবত ব্যান্ডের ‘মাটির পিঞ্জিরার মাঝে’ গানের ভিডিও : 

সূত্র: বাংলা নিউজ