গাইবান্ধায় পানি কমলেও দুর্ভোগ বেড়েছে

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

গাইবান্ধার সব নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। কিন্তু সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে জেলার চার উপজেলার বানভাসী কয়েক লাখ মানুষ। বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র-বাঁধে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

সরেজমিন জেলা সদরের বাদিয়াখালি সোনাইল বাঁধ পরিদর্শনে দিয়ে দেখা যায়, হাজার হাজার পরিবার তাদের শেষ সহায়-সম্বল নিয়ে অবস্থান নিয়েছে সাত কিমি দীর্ঘ এ বাঁধটিতে।

কোনো রকমে ছোট ছোট ঘর তৈরি করে একই ঘরে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি ও শিশুদের নিয়ে বসবাস করছেন বাবা-মা। রান্নার কাজও চলছে সেখানে।

স্থান সংকুলান না হওয়ায় ১২-১৩ ফুট প্রস্থের ছোট্ট বাঁধে দু’পাশ দিয়ে ঘর তুলেছে বানভাসী মানুষগুলো। যাতায়াতের জন্য রয়েছে সরু একটি পথ।

অসহায় মানুষগুলোর জন্য সরকারি-বেসরকারিভাবে টিউবওয়েল ও  টয়লেটের ব্যবস্থা করা হলেও কোনো ত্রাণসামগ্রী সেখানে পৌঁছেনি বলে অভিযোগ করেন তারা।

সরেজমিন পরিদর্শনে বানভাসী মানুষের দুর্ভোগের আরো চিত্র চোখে পড়ে গাইবান্ধা সদরের বাদিয়াখালি-ফুলছড়ি উপজেলার কালিরবাজার সড়কে। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি এখনো পানিতে তলিয়ে আছে। জীবনের প্রয়োজনে সে পথ দিয়েই ছুটতে বাধ্য হচ্ছে বানভাসী মানুষগুলো।


সড়কের অনেক স্থান স্রোতে ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। রিকশা-ভ্যান ও  পায়ে হেঁটে যাতায়াতে সীমাহীন কষ্টের শিকার হচ্ছেন পথচারীরা। চলাচলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।

একই অবস্থা বিরাজ করছে বন্যাকবলিত সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নের ২৪৫টি গ্রামে।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, জেলা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ২ লাখ ৭৬ হাজার ৩০৫ জন। এছাড়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫ হাজার ১৯১টি বাড়িঘর।

বন্যাদুর্গত এলাকায় ৩ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমির আউশ, আমন, সবজিসহ বিভিন্ন ফসল নিমজ্জিত অবস্থায় থাকায় সেগুলো এখন বিনষ্ট হওয়ার পথে।

এছাড়া  ১৯৯ কি.মি. কাঁচা রাস্তা, ৩৪ কি.মি. পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত এবং ৩০০ মিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ধসে গেছে। পানিতে নিমজ্জিত থাকায় ২৪০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ২০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
সূত্র: রাইজিংবিডি