ক্রাইসিস থেকে নির্বাক টিভি কমেডি!

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

শুধু দেশের না, উপমহাদেশের প্রথম নির্বাক টিভি কমেডি। বানানো হয়েছিল এই বাংলাদেশেই। ১৯৯৮-৯৯ সালে। একটা ক্রাইসিস থেকেই তার শুরু। ক্রাইসিসটা ছিল মজার। বন্ধুর প্রডাকশন হাউজ আছে। কমেডিতে আমার ওপর তার মহাসাগরের আস্থা। তখন ডিরেকশন দেব দেব করছি। নাট্যকার হিসেবে বেশ নাম কুড়িয়েছি। তখনই লোভনীয় প্রস্তাবটা দিল বন্ধু।

লন্ডনি এক উৎসাহী ছেলের খুব শখ, অভিনয় করবে। কমেডি। ইনভেস্ট করবে। নায়ক হবে, দেশের নামকরা কোনো অভিনেত্রী হবে নায়িকা। বন্ধু বলল, ‘পারবে না?’ বললাম, ‘নো প্রবলেম, ঢাকায় আসতে বলো।’

ঢাকায় এল ইনভেস্টর-অভিনেতা। বসে ছিলাম বন্ধুর চেম্বারে। লন্ডনি স্বপ্নবাজ ঢুকল হাঁপাতে হাঁপাতে। দুই হাতে টাকার বান্ডিল। টেবিলের ওপর বান্ডিল রাখল, বসল, পরিচিত হলো, সালাম দিল। কোনো সংকোচ না করে টাকা ঠেলে দিয়ে বলল, ‘লউক্কা!’ মানে, ‘নেন।’ তার দৃঢ় বিশ্বাস, টাকায়-ই কমেডি বেরুবে। তার আচরণে ট্র্যাজেডির ছোঁয়া পেলাম। চার্লি চ্যাপলিনের বলা কথাটা মনে পড়ল, ‘জীবনকে লং শটে দেখলে কমেডি, ক্লোজ শটে দেখলে ট্র্যাজেডি।’ স্ক্রিপ্টের আউটলাইন আগেই করা ছিল। স্বপ্নবাজ হাবাগোবা ছেলেটির আচরণে তখনই নাটকের নাম মনে মনে ঠিক করে ফেললাম, ‘হাবার স্বপ্ন!’

সমস্যায় পড়লাম তার কো-আর্টিস্ট ঠিক করতে গিয়ে। তার আবদার একটাই। কোনো স্টার-সুপার স্টার অভিনেত্রী আমাদের নাটকে অভিনয় করুক। আমার অভিধানে ‘না’ নাই। তখন বেশ কয়েকজন স্টার অভিনেত্রী টিভি কাঁপিয়ে বেড়ায়। এদের অনেকে আমার লেখা নাটকে অভিনয়ও করেছে। তাদের নামের আদ্যাক্ষর মাথায় তবলার বোলের মতো ঘুরতে লাগল—জ, বি, তা, বি, তা, সু, তা-! কল করলাম ‘বি’কে। খুশিতে লাফ দিয়ে উঠেই বিশেষ কারণে বলল, ‘উমম।’ মানে-না। নক করলাম ‘সু’ কে। বলল, ‘ওকে!’ শুটিং ডেট ফেললাম।

রিহার্সালে পড়লাম বিপদে। আমার কমেডির মূল অভিনেতা লন্ডনি আমির খান সিলেটিতে চোস্ত, বাংলায় সমস্যা। লাজুকও। অভিনয় করতেই লজ্জা পায়। কিন্তু আমার অভিধানে ‘না’ নাই। লজ্জা ভাঙানোর উদ্যোগ নিলাম।

এক চেনা দস্যু সুন্দরীকে রিহার্সালে ডেকে পাঠালাম। সবার সঙ্গে সুন্দরীও বসা। এবার অভিনেতাকে বললাম পরনের শার্ট খুলে ছুড়ে মারতে। শুনে লজ্জায় তার চোখ কপালে। শার্ট সে কোনোভাবেই খুলবে না। আগেই ডিকটেশন দেওয়া ছিল। সুন্দরী সো-জা গিয়ে তার শার্টের বোতামে হাত লাগল। মোটামুটি একটা মিনি ধস্তাধস্তি। সুন্দরী জিতল। খালি গায়ে পেছন ফিরে দাঁড়িয়ে আছে মূল অভিনেতা। বললাম, ‘এ রকম লজ্জা পেলে তো অভিনয় হবে না।’ ভয়ে এবার সোজা হয়ে দাঁড়াল শখের অভিনেতা। গম্ভীর গলায় বললাম, ‘এবার প্যান্ট খুলেন।’ সবার ফিসফিসানো হাসিতে সুন্দরীর মুখ দিয়ে ‘ফুহ’ জাতীয় শব্দ বেরিয়ে এল। মুখ চেপে হাসি আটকাতে পারেনি। হাঁটু কাঁপতে লাগল লন্ডনি অভিনেতার। আমার হাত চেপে ধরে বলল, ‘আমারে মাফ করি দেউক্কা!’ চিন্তিত ভাবে প্যান্টে ছাড় দিয়ে অন্য চিন্তায় চলে গেলাম। এই সরল অভিনেতাকে দিয়ে সবাক না, নির্বাক কিছু বানাতে হবে।

স্ক্রিপ্টে রি-ডিজাইন করলাম। লিখলাম নির্বাক কমেডির এক নতুন ধারার স্ক্রিপ্ট!

ডিরেকশনে আমাকে সহায়তা করবে আমারই ভক্তরা, যারা অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর হিসেবে ইতিমধ্যেই হাত পাকিয়েছে।

এটি পারিবারিক কমেডি। মূল চরিত্রে পাঁচজন। বাবা, মা, একমাত্র মেয়ে বোকি, কাজের মেয়ে ময়না ও মূল চরিত্র হাবা। একমাত্র মেয়ে হিসেবেই ‘সু’ কে কাস্ট করেছি। বাবা চরিত্রে উত্তম গুহ, মা চিত্রলেখা গুহ। বাস্তব জীবনেও তাঁরা স্বামী-স্ত্রী। সুবিধা হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, সবাই মজা পাচ্ছে। একদম নতুন ধরনের কাজ।

প্রথম দিন শুটিং ধানমন্ডির এক শুটিং হাউজে। ওটা এখন ক্লাব। কষ্টে পড়েছি আমি। নতুন ধরনের কাজ, ডিরেকশনের প্যাটার্নটাও নতুন। এটা সিচ্যুয়েশনাল কমেডি। তার ওপর ডায়লগ নেই। স্ক্রিপ্টে যদিও আউটলাইন এঁকে রেখেছি, কিন্তু আসল স্ক্রিপ্ট আমার মাথায়। ‘অ্যাকশন’ বলেই মেগাফোনে (হাতের মাইক) নন স্টপ চিৎকার করে লাইন বাই লাইন বলে যাচ্ছি কাকে কী করতে হবে। অভিনেতা-অভিনেত্রীরা সেই নির্দেশনামতো অভিনয় করে যাচ্ছে। না হলেই ‘কাট’ বলে থামিয়ে, দেখিয়ে দিয়ে আবার শট নিচ্ছি। সাধারণ নাটকের চেয়ে আমার চারগুণ বেশি কষ্ট করতে হচ্ছে এই নাটকের ডিরেকশনে। আগেই কানে কানে বলে দিয়েছিলাম, তাই উত্তমদা আর চিত্রাদি লন্ডনি ‘হাবা’কে সহজ করে নিয়েছেন। নাটকের চরিত্র ‘হাবা’ নামেই তাকে ডাকছে সবাই। সে-ও খুশি। হাবার লজ্জা চলে গেছে। খুশিতে এখন এত উচ্ছল যে প্যান্ট কেন, খুলতে বললে চামড়া খুলে আকাশে উড়িয়ে দেবে। সরল হলেও একটা ক্রিয়েটিভ মন আছে তার।

নির্বাক সিচ্যুয়েশনাল কমেডিতে প্রতিটি শটে শটে মজা রাখতে হবে। তাই আগেভাগেই এর ডিজাইন মাথায় এঁকে রাখতে হয়। একটা মজার দৃশ্যে চিত্রাদি আর উত্তমদাকে দৌড়াতে হবে। অনেকক্ষণ। চিত্রলেখা গুহ এমনিতেই একটু ভারী গড়নের। তাঁকে দৌড়াতে হচ্ছে শাড়ি কোমরে গুঁজে, রান্নার খুন্তি খাড়া করে তলোয়ারের মতো হাতে ধরে। খিঁচে দৌড়াচ্ছেন। মেসি-নেইমারের মতো। নির্দিষ্ট গোল বা লক্ষ্যে! শটটা তিনবার টেক করার পর তাঁর অবস্থা দেখার মতো হলো। হাঁপাতে হাঁপাতে তিন গ্লাস পানি খেয়ে বললেন, ‘ছোটকালে ছি বুড়ি খেলার সময় এত দৌড়িয়েছি, আর এই দৌড়ালাম!’

ধারালো রসবোধে ভরিয়ে রাখতে হবে নির্বাক এই সিচ্যুয়েশনাল কমেডি। আরেকটি দৃশ্য। অনেকক্ষণ তাড়া করে হাবাকে উত্তম গুহ সোফায় চিত করে ফেলে বুকে বন্দুক ধরেছেন। কিন্তু উত্তেজনায় নলের দিক না ঠেকিয়ে হাতল ঠেকিয়েছেন বুকে। নল বেরিয়ে আছে উত্তমদার পেছন দিকে। হাবা দিল ট্রিগার টিপে। গুলি গুড়ুম শব্দে পেছন দিক দিয়ে বেরিয়ে দেয়ালের পেইন্টিংসে আঘাত করল! পেইন্টিংস দেয়াল থেকে পড়ে মাটিতে চিত!

এভাবে প্রত্যেক শটে শটে, ফ্রেমে ফ্রেমে মজা রেখে যেতে হচ্ছে। অবিরত মেগাফোনে এগুলো বলে যাচ্ছি, ঘামছি, পানি খাচ্ছি, স্যালাইন-শরবত খাচ্ছি!

শায়ের খান

বিকেল শিফটে পড়লাম বিপদে। নায়িকা ‘সু’র আসার কথা। এল না। ওর বদলে ওর ফোন কল এল। জন্ডিস ধরা পড়েছে। আজই। মুড অফ হয়ে গেল। বিকেলে তার দৃশ্যগুলো শুট হবে। শুটিং বন্ধ করে বসে থাকলাম। হই হল্লার শুটিং হাউজ হয়ে গেল মৃত্যুপুরী। আমার মুড অফে সবাই ফিসফিস করে কথা বলছে। উত্তমদা আস্তে করে পাশে এসে বললেন, ‘নায়িকা বদলাবেন?’ বললাম, ‘তাইলে কি আপনার-আমার জন্ডিস বাঁধাব? ভাবেন তো, আর কে হতে পারে?’ একটু সংকোচ করে বললেন, ‘তাজিনকে নেবেন?’ বললাম, ‘নেব মানে? আমি তো ওর কথাও ভেবেছিলাম।’ উত্তম গুহের সঙ্গে তাজিন আহমেদের পারিবারিক সম্পর্ক, সম্ভবত ব্যবসায়িক সম্পর্কও আছে তাজিনের মায়ের সঙ্গে। শুটিং প্যাক আপ করলাম। গেলাম তাজিনদের বাসায়।

হ্যাঁ। তাজিন আহমেদ। এই তো সেদিন যে আমাদের ছেড়ে চলে গেছে। যে নাকি মৃত্যুর আগে ৫০০ টাকার জন্য তার মাকে জেলে দেখতে যেতে পারেনি। তার মা নাকি চেক বাউন্সের জন্য সাজা খাটছেন। গেলাম তাঁদের বাসায়।

আন্টি (তাজিনের মা) চায়ের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। তাজিন এসে সালাম দিল। ভুবনমোহিনী হাসিটা দিয়ে বলল, ‘আমি নাটকটা করব। কারণ, এটা শায়ের ভাইয়ের নাটক আর বিষয়টা ইন্টারেস্টিং।’

নায়ক হাবাও ভীষণ খুশি। নতুন শুটিং ডেট ফেললাম। এডিটিং প্যানেলে নানান এক্সপেরিমেন্ট করলাম। কীভাবে এগোতে পারে নতুন এই কমেডি, সে গবেষণা করছি। নতুন উদ্যমে শুটিং হতে লাগল, অভিনয় করতে লাগল সবাই মজা করে। ক্যামেরা-লাইট ক্রুরা বলতে লাগল, ‘এই নাটক দেইখ্যা সবাই হাইস্যা গড়াগড়ি যাইব!’

স্পিডের এক্সপেরিমেন্ট, মিউজিক, ব্যাকগ্রাউন্ড ধারা বর্ণনা, ব্যাকগ্রাউন্ড হাসি, সাউন্ড ইফেক্টসহ সব মজার গাঁথুনিতে তৈরি হলো সেই মজার হাসির নির্বাক টিভি কমেডি ‘হাবার স্বপ্ন!’ কিন্তু ক্যাসেট পড়ে থাকল কেবিনেটে। গার্মেন্টসের স্টক লটের মতো। কেউ নেয় না।

একটা নতুন টিভি চ্যানেল আসবে বাংলাদেশে। সবাই বলছে টিভি স্টেশন। ব্রিটিশরা নাকি এর ম্যানেজমেন্টে আছে। ইটিভি নাম। বাংলায় একুশে টেলিভিশন। অস্থায়ী অফিস বনানীতে। হেড অব প্রোগ্রাম হিসেবে আছেন সদ্য বিটিভি থেকে অবসর নেওয়া নওয়াজীশ আলী খান। গেলাম ওনার টেবিলে। প্রথম পরিচয়েই আমাকে পছন্দ করলেন। লাঞ্চে সেদ্ধ সবজি খাচ্ছেন। আমাকে কাঁটা চামচে একটা সেদ্ধ ঢ্যাঁড়স দিয়ে গল্প জুড়লেন। আমি ঢ্যাঁড়স চাবাতে চাবাতে গল্প শুনতে লাগলাম। নাটক-সিনেমা সম্পর্কে। বললেন উন্নত ছবি আর নাটকের কথা, মুম্বাইয়ের কমল হাসানের কথা। বললেন, ‘আমরা ধরেই নিই যে নাটক কেবল ডায়লগের ওপর যাবে। বডি মুভমেন্ট, অ্যাকটিং লাইনও যে বিশাল বিষয়, তা আমরা ভাবি না। কমল হাসানের “পুষ্পক” ছবিটা দেখেছো?’ বললাম, ‘না, দেখিনি।’ বললেন, ‘ভালো জিনিস না দেখলে ভালো জিনিস বানাবে কীভাবে? “পুষ্পক” এমন এক ছবি, যে ছবিতে কোনো ডায়লগ নেই।’ বললাম, ‘আমি তো এমন এক নাটক অলরেডি বানিয়ে ফেলে রেখেছি।’ চমকে উঠলেন তিনি। যেন ৯ রিখটার স্কেলের ভূমিকম্প ঝাঁকি দিয়েছে। থেমে গেল তাঁর ভেজিটেবল চিবানো। দীর্ঘ পেশাগত জীবনে তিনি বহু ধরন-চলন-বলনের চাপাবাজ দেখেছেন, কিন্তু এমন ‘বাঘাইড় মাছ’ মার্কা বড়সড় চাপাবাজ হয়তো দেখেননি। সরাসরি বললেন, ‘যাও তো, কালকে ক্যাসেট নিয়ে আসো তো!’ সম্ভবত তিনি নিশ্চিত, আগামীকাল থেকে আর এই চাপাবাজের টিকিটাও দেখা যাবে না।

পরদিন ক্যাসেট নিয়ে যাওয়ায় তিনি অবাকই হলেন মনে হলো। ক্যাসেট দিয়ে চা-টা খেয়ে বেরিয়ে এলাম। আর তার পরদিন বিকেলে বাসায় ফিরলে আম্মা বললেন, ‘তোকে এক বিদেশি ফোন করেছিল। ফোন করতে বলেছে। এই যে নাম্বার।’ দেখি ইটিভির ল্যান্ডফোন নম্বর। বুঝলাম, সায়মন ড্রিং কল করেছেন। বাতাসে বেলিফুলের ঘ্রাণ পেলাম।

সায়মন ড্রিং। ইটিভির ম্যানেজিং ডিরেক্টর। সাদা ব্রিটিশ। বিবিসির হয়ে পৃথিবীর ২২টা যুদ্ধ সরাসরি কভার করেছেন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধও তার মধ্যে একটি। বনানীতে তাঁর অফিসে আমাকে জড়িয়ে ধরলেন। আমি ২২টি যুদ্ধে জড়িয়ে গেলাম। বললেন, ‘তুমি এটা কী করেছো! এ তো মহাযজ্ঞ। আমি এ পর্যন্ত এ অঞ্চলে এটি দেখিনি। আমি তোমার এটা দিয়ে আমার টিভি স্টেশনের বিনোদন অনুষ্ঠান শুরু করতে চাই। কত টাকায় বিক্রি করবে তুমি এই কমেডি?’ বললাম, ‘আমি আমার কনসেপ্ট, রচনা ও পরিচালনার জন্য অলরেডি পেমেন্ট পেয়ে গেছি। তুমি এটা কেনাবেচার জন্য ইনভেস্টর প্রডিউসারের সঙ্গে ডিল করো। এই যে তার নাম্বার।’

বেরিয়ে যাচ্ছি। পেছন থেকে কে যেন নিঃশব্দে কলার টেনে ধরলেন। দেখি এক ২২ যোদ্ধার হাত। কানে কানে ইংলিশে বলছেন, ‘আমাকে কথা দিয়ে যাও, তুমি আমার জন্য এই ফরম্যাটে একটা কমেডি সিরিয়াল করে দেবে। টাকা আমি দেব। সেটা কাঁপিয়ে দেবে বাংলাদেশ! টাকার জন্য চিন্তা করবে না। মানি ডাজ নট ম্যাটার!’

দৃশ্যটি চিন্তা করেন। ঢাকাইয়া নাট্যকার-ডিরেক্টরকে ব্রিটিশ মিডিয়া জায়ান্ট হলুদ কার্ড পাওয়ার স্টাইলে কলার টেনে ধরে আছেন আর সেই অবস্থায়ই আমি বাঁকা হয়ে হেসে বলছি, ‘কথা দিলাম। আই উইল কল ইউ অ্যান্ড উইল ওয়ার্ক টুগেদার!’

শুরু হলো উপমহাদেশের প্রথম নির্বাক টিভি কমেডির যাত্রা!