ক্যাসিনো-দুর্নীতি: অবৈধ অর্থ উপার্জনের অভিযোগে ১৫ থেকে ২০ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুদ

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন জানিয়েছে যে অবৈধ ‌উপায়ে অর্থ উপার্জনের অভিযোগ রয়েছে এমন ১৫ থেকে ২০ জনের একটা তালিকা তৈরি করে তারা তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করছে

কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, চলমান অভিযানে ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলেও ক্যাসিনোর বিষয়টি দুদকের তফসিলভুক্ত নয়, তবে অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জনের বিষয়ে তারা ব্যবস্থা নিতে পারেন।

দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ  জানিয়েছেন, চলতি মাসের ২ তারিখে তালিকা ধরে অনুসন্ধানের আদেশ দেয়া হয়, আর এই অনুসন্ধান চলবে ৪৫ দিন ধরে।

যাদের ব্যাপারে অনুসন্ধান করা হচ্ছে তারা সরকারি প্রশাসনের, নাকি কোন একক ব্যক্তি অথবা এদের কারো সাথে কোন রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা, সে ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে মি. মাহমুদ কোন মন্তব্য করেননি।

তবে চলমান অভিযানে সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া একজন ঠিকাদার জি কে শামীমের নাম এই তালিকায় আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

দুদকের চেয়ারম্যান বলেন, “জি কে শামীমের বিষয়টি আমাদের আওতাধীন, কারণ পিডাব্লিউডি’র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীকে ঘুষ প্রদান করা হয়েছে”।

র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট  জানিয়েছিলেন যে ‘টেণ্ডারবাজি ও চাঁদাবাজির’ অভিযোগে জি কে শামীমকে আটক করা হয়েছে এবং তিনি যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায় সম্পাদক।

দুর্নীতি বিরোধী চলমান অভিযানে মূল ভূমিকা পালন করছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র‍্যাব। ক্যাসিনো ব্যবসায়ী কিংবা দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আয়কারীদের বিরুদ্ধে দুদক আগে কেন অনুসন্ধান করেনি, এমন প্রশ্ন উঠে।

দুর্নীতি বিরোধী চলমান অভিযানে দুদকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে
             দুর্নীতি বিরোধী চলমান অভিযানে দুদকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠে

মি. মাহমুদ এ ব্যাপারে বলেন, “আপনি দুদক আইনে হঠাৎ করে একজনের নামে মামলা করতে পারবেন না। এর আগে আপনাকে প্রমাণ করতে হবে যে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। এজন্য অনুসন্ধানের একটা বিষয় আমাদের আছে, যেটা অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নেই”।

“যেকোন মামলা করতে গেলে আমরা জাম্প করতে পারি না। যেটা অনেকেই পারে” – বলছিলেন তিনি।

কবে নাগাদ এই অনুসন্ধানের ফলাফলে জানা যাবে সে সম্পর্কে দুদুক চেয়ারম্যান বলেন, “১৫-২০ জনের ব্যাপারে আমাদের লোকজন অনুসন্ধান করছে। একটা নির্দিষ্ট সময় দেয়া আছে এই সময়ের মধ্যে তারা রিপোর্ট দেবে। রিপোর্টে যদি দেখা যায় অভিযোগ আছে, তাহলেই আমরা মামলা করবো”।

দুদক বলছে, একেকটি বিষয় দেখার জন্য সরকারের বিভিন্ন সংস্থা রয়েছে। তারা যখন একটা জিনিস দেখে, দুদক তখন সেটা ডুপ্লিকেট করতে পারে না।

“যখন এসব সংস্থা দেখছে যে অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন করা হয়েছে, তখন আমরা বিষয়টি হাতে নিয়েছি,” বলছিলেন মি. মাহমুদ।

দুদকের লোকবল সংকটের কথাও তিনি বলেন।

“আমাদের ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এই বছর চালু করা হয়েছে। তারা এখন ‘শিশু পর্যায়ে’ আছে। এমন অবস্থায় ক্যাসিনো ব্যবসা বা অবৈধ সম্পদ অর্জিত হলো কি হলো না, এই পর্যায়ে আমাদের দেখা সম্ভব না”।

ক্যাসিনোতে খেলা, মদ খাওয়া বা বিক্রি করা – এসব দুদকের তফসিলভুক্ত নয় বলে জানাচ্ছে দুদক।