ক্যানসার আক্রান্ত মায়ের করোনা পরীক্ষা করাতে এসে মার খেলেন ছেলে

ক্যানসার আক্রান্ত মায়ের কেমোথেরাপির আগে প্রয়োজন করোনা পরীক্ষা করা। সে জন্য শুক্রবার ভোরেই মুগদা জেনারেল হাসপাতালে গিয়েছিলেন মাকে নিয়ে। ভোর ৫টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়েও করোনা পরীক্ষার অনুমতি পাননি তিনি। এ নিয়ে কর্তব্যরত আনসার সদস্যদের সঙ্গে তার বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে আনসার সদস্যরা তাকে হেনস্তা করেন। এ ঘটনার ছবি তুলতে গেলে আনসার সদস্যরা লাঞ্ছিত করেন দুই ফটোসাংবাদিককেও।

এই ঘটনায় হামলার শিকার দুই ফটোসাংবাদিক হলেন ‘দেশ রূপান্তর’ এর রুবেল রশীদ এবং ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’ এর জয়িতা রায়। আনসার সদস্যদের হামলায় রুবেল রশীদের ক্যামেরার লেন্সের ফিল্টার ভেঙে গেছে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় এ ঘটনা ঘটে।

রাজধানীর মুগদার দক্ষিণ মান্ডা এলাকার বাসিন্দা শাওন হোসেন জানান, তার মা ক্যানসারের রোগী। কেমোথেরাপি দিতে হলে করোনা শনাক্তের পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে। লাইনের ক্রম অনুযায়ী তার শুক্রবারই তার মায়ের করোনা পরীক্ষা করানোর কথা। অথচ অসুস্থ মাকে নিয়ে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও তাকে না করে দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, অনেক্ষণ অপেক্ষার পরও করোনা পরীক্ষার টোকেন না দেওয়ার কারণ জানতে তিনি এগিয়ে যান। যারা টোকেন দিচ্ছিলেন তারা কোনো জবাব না দিয়েই সেখান থেকে চলে যান। তখন আনসার সদস্যদের কাছে তিনি কারণ জানতে চান। তাদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তার কলার ধরে ভেতরের আনসার ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে লাঠি দিয়ে বাড়ি দেওয়া হয়। পরে মুগদা থানা থেকে পুলিশ তার পূর্ণাঙ্গ নাম–ঠিকানা লিখে নিয়ে যায়।

রুবেল রশীদ জানান, শাওন হোসেনকে কলার ধরে নিয়ে যাচ্ছিলেন আনসার সদস্যরা। সেই ছবি তুলতে গেলে এক আনসার সদস্য তাকে মারতে আসেন। এ সময় একটি চড় ক্যামেরায় লাগলে লেন্সের প্রটেক্টর ভেঙে যায়। এ সময় আনসার সদস্যরা খুব বাজে আচরণ করছিলেন বলেও জানান তিনি।

মুগদা জেনারেল হাসপাতাল আনসার ক্যাম্পের সহকারী কমান্ডার রফিকুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষা করাতে না পেরে শাওন হোসেন অকথ্য ভাষায় কথা বলছিলেন। ছেলেটিকে কোনো মারধর করা হয়নি।

মুগদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রলয় কুমার সাহা বলেন, অকথ্য ভাষায় কথা বলায় আনসার সদস্যরা একটি ছেলেকে টানাহেঁচড়া করেছে  তবে কোনো সাংবাদিককে মারধর করা হয়নি। গালমন্দ করে থাকতে পারে। সূত্র: দেশ রুপান্ত