সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:
পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কোয়েটার হাসপাতালে বোমা বিস্ফোরণে অন্তত ৭০ জন নিহতের পর হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানি তালেবানের একটি অংশ।
বিবিসি বলছে, হামলার দায় স্বীকার করা জামাত-উল-আহরার দুই বছর আগে পাকিস্তানি তালেবান থেকে বের হয়ে আলাদাভাবে কার্যক্রম চালাতে শুরু করে।
চলতি বছরে ইস্টার উদযাপনের সময়ে পাকিস্তানের এক পার্কে আত্মঘাতী বোমা হামলায় শিশুসহ ৭০ জনের বেশি নিহত হওয়াসহ বড় ধরনের বেশ কয়েকটি হামলায় এই সংগঠনটি দায় স্বীকার করে বলে তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়।
এদিকে বেলুচিস্তান রাজ্যের রাজধানী কোয়েটার সিভিল হাসপাতালে সোমবার সকালের বিস্ফোরণে প্রায় ১২০ জন আহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসির খবরে বলা হয়।
সকালে কোয়েটাতে অজ্ঞাত বন্দুকধারীর গুলিতে বেলুচিস্তান বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিলাল আনওয়ার কাসি নিহত হওয়ার পর হাসপাতালে আইনজীবী ও সাংবাদিকরাসহ শোকাহতরা জড়ো হওয়ার সময় ওই বিস্ফোরণ ঘটে।
ফরিদুল্লাহ নামে ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক সাংবাদিক রয়টার্সকে বলেন, বোমাটি যখন বিস্ফোরিত হয় তখন শতাধিক মানুষ কাসির লাশ নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ঢুকছিলেন।
এই হামলায় তালেবান গোষ্ঠীর দায় স্বীকারের আগে কোয়েটায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাগুলোর পেছনে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের (আরডব্লিউ) হাত রয়েছে বলে স্থানীয় টিভি জিও নিওজে মন্তব্য করেন বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী সানাউল্লাহ জেহরি।
এটি আত্মঘাতী হামলা বলে ধারণার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, তবে পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।
জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা জহুর আহমেদ আফ্রিদির ভাষ্য, নিহতদের বেশিরভাগ আইনজীবী। আহতদের মধ্যেও বেলুচিস্তান বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট বাজ মোহাম্মদ কাকারসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী রয়েছেন।
স্থানীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, হামলার সময় ঘটনাস্থলে গুলির আওয়াজও শোনা গেছে। হুড়োহুড়ি ও চিৎকার-চেচামেচির মধ্যে লোকজনকে হাসপাতাল থেকে বের হতে দেখা যায়।
হাসপাতাল প্রাঙ্গণে উপস্থিত সাংবাদিকরাও গুলির মুখে পড়েন এবং ডননিউজের এক আলোকচিত্রী বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন।
শাহজাদ খান নামে আজ টিভির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক আলোকচিত্রীর বিস্ফোরণে নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ডন।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জিও টিভিকে উদ্ধৃত করে বিবিসির খবরে বলা হয়, কোয়েটায় আদালত প্রাঙ্গণে যাওয়ার পথে কাসিকে গুলি করা হয়।
এই হামলার নিন্দা জানিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বলেন, “কাউকেই ওই অঞ্চলে শান্তি বিঘ্নিত করতে দেওয়া হবে না।
বেলুচিস্তানের জনগণ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের জন্য অনেক আত্মত্যাগ করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কোয়েটায় বেশ অনেকগুলো লক্ষ্যভিত্তিক হামলার ঘটনা ঘটেছে, যেগুলো গোষ্ঠীগত উত্তেজনা ও অপরাধের পাশাপাশি বিচ্ছিন্নতাবাদী হামলার সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করা হয়।
সূত্র: বিডি নিউজ