কোলে আটমাসের নিথর মেয়ে, আঁকড়ে ধর্ষিতা মা! সাক্ষী থাকল ভিড়ে ঠাসা মেট্রো

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক: ভিড়ে ঠাসা দিল্লি মেট্রো। কেউ অফিসে যাচ্ছেন, কেউ যাচ্ছেন ব্যবসার কাজে। কারও ঠিকানা স্কুল বা কলেজ। তার মধ্যেই নিজের আট মাসের মৃত শিশুকন্যাকে কোলে আকড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন এক মা। তখনও তিনি বিশ্বাস করেন, তাঁর ফুটফুটে শিশুটি বেঁচে আছে। একরত্তি মেয়েকে হারানোর ভয়, উৎকন্ঠায় ওই মা তখন গণধর্ষিতা হওয়ার যন্ত্রণাও ভুলে গিয়েছেন।

মেট্রোতে থাকা ওই নির্যাতিতার সহযাত্রীরাও হয়তো জানতে পারেননি, আগের দিন রাত থেকে কী ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হতে হয়েছে ওই হতভাগ্য মাকে। অবশ্য তাঁর সঙ্গে যা ঘটেছে, তাকে ভয়াবহ বললেও বোধহয় কম বলা হয়।

মঙ্গলবারই হরিয়ানার গুরুগ্রামে হাড় হিম করে দেওয়া এক গণধর্ষণের ঘটনায় শিউরে উঠেছিল গোটা দেশ। জানা যায়, গত ২৯ মে রাতে একটি অটোর মধ্যে এক তরুণীকে ধর্ষণ করার সময় চলন্ত অটো থেকেই তরুণীর কোলে থাকা আট মাসের শিশুকন্যাকে ছুড়ে বাইরে ফেলে দেয় তিন ধর্ষক। এর ফলে মৃত্যু হয় শিশুটির। যদিও পরবর্তী সময়ে গোটা ঘটনা সামনে আসায় স্পষ্ট, প্রাথমকিভাবে যেটুকু জানা গিয়েছিল, তার থেকেও আরও ভয়ঙ্কর এই গণধর্ষণ কাণ্ড।

নির্যাতিতার স্বামী এবং পুলিশকে উদ্ধৃত করে একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকের দাবি, ঘটনার দিন রাতে হাইওয়ের পাশে একটি নির্জন জায়গায় ১৯ বছর বয়সি তরুণীকে গণধর্ষণ করে তিন দুষ্কৃতী। এর পরে চলে যাওয়ার সময় ধর্ষকদের মধ্যে একজন হাইওয়ের ডিভাইডারের উপরে ছুড়ে ফেলে দেয় ছোট্ট শিশুটিকে। সিমেন্টের স্ল্যাবে ধাক্কা খায় ছোট্ট শিশুটির মাথা। সন্তানের নিথর দেহ নিয়ে কোনওক্রমে প্রথমে কাছের একটি কারখানায় পৌঁছন ওই তরুণী। রাত প্রায় দু’টোর সময় কোনও গাড়ি পাননি তিনি। ওই কারখানার এক নিরাপত্তরক্ষী ভোরবেলা একটি অটোয় করে তরুণীকে ওল্ড গুরুগ্রামে তাঁর আত্মীয়দের বাড়িতে পৌঁছে দেন। আট মাসের মেয়েকে নিয়ে উৎকন্ঠার মধ্যে গণধর্ষণের কথাও প্রথমে কাউকে জানাতে পারেননি নির্যাতিতা। সেখানেই এক চিকিৎসক তাঁকে জানিয়ে দেন, তাঁর মেয়ে আর বেঁচে নেই।

কিন্তু চিকিৎসকের কথা বিশ্বাস হয়নি তরুণীর। নিজের শ্বশুরকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লির তুঘলকাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তরুণী। সেখানেই তাঁর বাবা-মা থাকেন। মেট্রোয় করে মৃত শিশুটিকে কোলে নিয়ে রওনা দেন ওই মা। কিন্তু দিল্লির চিকিৎসকও তরুণীকে একই কথা বলেন। এবার পুলিশে অভিযোগ জানানোর জন্য ফের মেট্রো ধরে গুরুগ্রামে ফেরেন তরুণী এবং তাঁর শ্বশুর। ততক্ষণে অবশ্য খবর পেয়ে এম জি রোড স্টেশনে পুলিশ এসে তরুণীর জন্য অপেক্ষা করছিল। সূত্র: এবেলা