কীভাবে পাবেন অবচেতন মনের নিয়ন্ত্রণ?

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্ক:

ধরুন, আপনি খুব সচেতনভাবেই চাইছেন কোনো একটি কাজ করতে। আপনার বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের সদস্যরাও আপনাকে প্রণোদনা যোগাচ্ছে কাজটি করার জন্য। কিন্তু বাস্তবে কাজটি করতে গিয়ে বারবার ব্যর্থ হচ্ছেন আপনি। থেমে যাচ্ছেন, কিছুতেই এগোতে পারছেন না।

এর কারণ কী? কারণ হলো, আপনার অবচেতন মন আপনাকে কাজটি করতে দিচ্ছে না। আপনার সচেতন মন আপনাকে কাজটি করার ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করলেও, অবচেতন মনের অবস্থান এর বিরুদ্ধে, এবং শেষ পর্যন্ত সচেতন মন ও অবচেতন মনের লড়াইয়ে জয় হচ্ছে অবচেতন মনেরই।

সুতরাং একটি বিষয় পরিষ্কার যে, আমাদের সচেতন মনের থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী হলো আমাদের অবচেতন মন। এর পেছনে মূলত তিনটি কারণ রয়েছে।

সচেতন ও অবচেতন মনের লড়াইয়ে জয়ী হয় অবচেতন মন

প্রথমত, অবচেতন মন আমাদের পূর্বের সকল অভিজ্ঞতা, মূল্যবোধ, জ্ঞান, আবেগ, বিশ্বাস ও দক্ষতাকে ধারণ করে। আমরা অতীতে যা যা করেছি, ভেবেছি, বা অর্জন করেছি, সেই সকল তথ্যই মজুদ থাকে অবচেতন মনের কাছে। তাই যদি দেখা যায় যে আমরা নতুন এমন কিছু করতে যাচ্ছি যা আমাদের অতীত অভিজ্ঞতার সাথে সাংঘর্ষিক, তখনই বেঁকে বসে আমাদের অবচেতন মন। আমরা ইতিমধ্যেই কোনো নির্দিষ্ট আদর্শে বিশ্বাসী হলে সহজে যেমন নতুন কোনো আদর্শকে গ্রহণ করতে পারি না, অবচেতন মনও তেমনই তার নিজস্ব আদর্শ হতে বিচ্যুত হতে চায় না। ফলে আমরা খুব সচেতনভাবে কোনো নতুন ধরনের কাজ করতে চাইলেও, অবচেতন মন আমাদের টেনে ধরে রাখে।

দ্বিতীয়ত, অবচেতন মনের কাছেই থাকে আমাদের আবেগের নিয়ন্ত্রণ। এবং কে না জানে, আমরা মানুষরা খুবই আবেগী প্রাণী। নিজেদের জীবনের অধিকাংশ সিদ্ধান্ত গ্রহণেই আমরা যতটা না প্রাধান্য দিয়ে থাকি যুক্তিকে, তার থেকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি আমাদের আবেগকে। যেহেতু অবচেতন মনেই অবস্থান করে আমাদের আবেগ, তাই অবচেতন মন চাইলে খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে আমাদের ব্যবহার ও সিদ্ধান্ত গ্রহণকেও। একবার যদি আমরা কোনো কাজের বিরুদ্ধে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি, তখন আবেগকে চাপা দিয়ে ওই কাজ অব্যহত রাখা হয়ে পড়ে অসম্ভব।

তৃতীয়ত, অবচেতন মনের থাকে তথ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের অসীম ক্ষমতা। আমাদের সচেতন মন একবারে একটির বেশি বিষয়ে ফোকাস ধরে রাখতে পারে না। একসাথে একাধিক বিষয়ে চিন্তা করতে গেলেই সচেতন মনের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। অথচ অবচেতন মনের সেরকম কোনো সমস্যাই নেই। বরং সে চাইলেই একসাথে অনেক বিষয় নিয়ে ভেবে চলতে পারে। তাই যদি আমরা কোনো কাজ করার পেছনে সচেতনভাবে একটি যুক্তি সাজাতে চাই, দেখা যাবে ওই সময়ের মধ্যে আমাদের অবচেতন মন সাজিয়ে ফেলেছে বিপক্ষ অবস্থানের দশটি যুক্তি।

এভাবে অবচেতন মন আমাদের যুক্তি-বুদ্ধি, আবেগ, দৃষ্টিভঙ্গি, আচরণ, মেজাজ সবকিছুতেই কলকাঠি নাড়তে পারে। ফলে তার কাছে প্রায়শই হার মানতে বাধ্য হয় আমাদের সচেতন মন।

অবচেতন মনের দ্বারাই পরিচালিত হয় মানুষ

এখন প্রশ্ন হলো, অবচেতন মনকে বশে আনা, এবং সচেতন মন ও অবচেতন মনকে এক সুতোয় গাঁথার মাধ্যমে জীবনটাকে আরো সহজ ও সাফল্যমণ্ডিত করে তোলা কি সম্ভব নয়? নিশ্চয়ই সম্ভব। কীভাবে তা সম্ভব, তা ব্যাখ্যার জন্য আমরা আমাদের অবচেতন মনকে তুলনা করতে পারি একটি খ্যাপা বানরের সাথে।

একটি খ্যাপা বানরের পক্ষে সারাদিনই হুলস্থূল কাণ্ড ঘটিয়ে চলা সম্ভব, কেননা সহজে সে ক্লান্ত হয়ে যায় না। এবং এভাবে হুলস্থূল কাণ্ড ঘটিয়ে সে অন্যদের বিরক্তির কারণই হয়। অথচ কে না জানে, বানর অনুকরণপ্রিয় প্রাণী। তাকে যদি কোনো গঠনমূলক কাজ দেখিয়ে দেয়া হয়, তাহলে কিন্তু সে ওই কাজটিই করতে থাকবে, এবং নিজের অজান্তেই আপনার বিরক্তির কারণ না হয়ে আপনার উপকারের কারণে পরিণত হবে।

অবচেতন মনকে তুলনা করা যেতে পারে খ্যাপা বানরের সাথে

এবার খ্যাপা বানরের জায়গায় কল্পনা করা যাক আমাদের অবচেতন মনকে। সে-ও কিন্তু সারাটা দিনই মাথার মধ্যে হুলস্থূল কাণ্ড ঘটিয়ে চলেছে। আপনি এমন একটি সেকেন্ড খুঁজে পাবেন না, যখন আপনার মাথার মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই কোনো না কোনো চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে না। এবং বেশিরভাগ সময়েই সেসব চিন্তার চাবিকাঠি থাকে অবচেতন মনের হাতে। কিন্তু এভাবে সারাক্ষণ চিন্তাভাবনা করে কি কোনো লাভ হয়? হয় না। বরং এলোমেলো, অগোছালো চিন্তার বদলে অবচেতন মনকে যদি কোনো নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে ভাবতে দেয়া হয়, তাহলে তার অস্থিরতা কমে যাবে, এবং ভাবতে ভাবতে সে বস্তুনিষ্ঠ কোনো একটি ধারণা সৃষ্টি করতে পারবে।

এবার চলুন জেনে নেয়া যাক কার্যকরী কিছু উপায় সম্পর্কে, যার মাধ্যমে আপনি আপনার অবচেতন মনের নিয়ন্ত্রণ নিজের দখলে নিয়ে নিতে পারবেন, এবং অগোছালো চিন্তার বদলে তাকে সুবিন্যস্ত চিন্তার পথে চালিত করতে পারবেন।

মেডিটেশন

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দেখেছেন, মেডিটেশনের মাধ্যমে হিপোক্যাম্পাসের কর্টিকাল পুরুত্ব বৃদ্ধি পায়। আর এই হিপোক্যাম্পাসের মাধ্যমেই মানুষ নতুন কিছু শিখতে ও তা স্মরণে রাখতে পারে। ফলে মেডিটেশন করলে আপনি নতুন কোনো দক্ষতা যেমন সহজেই শিখতে পারবেন, তেমনই কোনো কিছু পড়ার পর তার অধিকাংশ মনে রাখতেও পারবেন। আবার মেডিটেশনের মাধ্যমে আপনার মনের অযাচিত ভয়-শঙ্কা, উদ্বেগ-অস্বস্তিও দূর হবে।

মেডিটেশনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব অবচেতন মনকে

তবে মেডিটেশনের সবচেয়ে বড় উপকারিতা হলো অবচেতন মনকে বশ করা, অর্থাৎ একাগ্রতা ও অবধারণগত দক্ষতা বৃদ্ধি। আপনি যখন মেডিটেশন করবেন, তখন শুরুতে আপনি সচেতনভাবেই আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসকে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করবেন, যা সাধারণ অবস্থায় অবচেতন মন করে থাকে। এরপর আপনি সচেতনভাবে কিছুক্ষণ নির্দিষ্ট মাত্রায় শ্বাস-প্রশ্বাস চালানোর পর আপনার অবচেতন মনও সেটির সাথে অভ্যস্ত হয়ে যাবে, এবং সে নিজেও ওই একই মাথায় শ্বাস-প্রশ্বাস চালাতে থাকবে। এটি কেবলই একটি উদাহরণ মাত্র। মেডিটেশনের মাধ্যমে এভাবে আপনি আপনার অবচেতন মনের সকল চিন্তাকেই সচেতন মনে নিয়ে আসতে পারবেন, এবং সচেতনভাবে সেটির উন্নতিসাধনের পর আবার অবচেতন মনের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারবেন।

নেতিবাচক আবেগের অবমুক্তি

আপনার অবচেতন মন যে আপনার সচেতন মনের ইতিবাচক উদ্যোগকে সহ্য করতে পারে না, এর কারণ হলো আপনার অবচেতন মন বিভিন্ন নেতিবাচক আবেগ দ্বারা পরিপূর্ণ। অতীতে আপনার সাথে যদি খারাপ কিছু হয়ে থাকে, সেই স্মৃতি আপনার অবচেতন মনে খুব ভালোভাবে সংরক্ষিত থাকে। যখনই আবার আপনি ওই একই ধরনের কিছু একটা করতে উদ্যত হন, অবচেতন মনে ফের ওইসব স্মৃতি উঁকি দিয়ে যায়, ফলে আপনার পক্ষে আর খুশিমনে কাজটি শুরু করা সম্ভব হয় না।

প্রয়োজনে এড়িয়ে চলতে হবে নেতিবাচক মানসিকতার মানুষদের সংসর্গ

কিন্তু আপনি চাইলে এসব নেতিবাচক স্মৃতি থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারেন। সেজন্য আপনার প্রয়োজন সচেতনভাবেও নেতিবাচক চিন্তাভাবনা করা থেকে বিরত থাকা, এবং কখনো নেতিবাচক কোনো সম্ভাবনার কথা মুখ ফুটে না বলা। কেননা কারো কাছে যদি আপনি আপনার নেতিবাচক চিন্তার কথা বলেন, এবং সে যদি আপনার মন থেকে ওই নেতিবাচক চিন্তা দূর করতে না পারে বরং আরো বাড়িয়ে দেয়, তাহলে পরবর্তীতে আপনার পক্ষে নিজে নিজে ওই নেতিবাচক চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসা আরো কঠিন হয়ে পড়বে। সুতরাং নেতিবাচক চিন্তা না করা ও নেতিবাচক কথা না বলার পাশাপাশি আপনার আরো প্রয়োজন নেতিবাচক মানসিকতার মানুষদের সংসর্গ ত্যাগ করা, কেননা তাদের সাথে মিশলে আপনার পক্ষে কখনোই নিজের অবচেতন মনের নেতিবাচক আবেগ থেকে মুক্তিলাভ সম্ভব হবে না।

আকাঙ্ক্ষার মাত্রা বৃদ্ধি

অনেক সময়ই হয়তো দেখা যায় যে আপনি কোনো কাজ করতে ইচ্ছুক, কিন্তু অবচেতন মনের বিভিন্ন নেতিবাচক আবেগের কারণে আপনি কাজটিতে হাত দিতে ভয় পাচ্ছেন। অর্থাৎ এক্ষেত্রে আপনার মনের আকাঙ্ক্ষার চেয়ে অবচেতন মন বেশি শক্তিশালী রূপে আবির্ভূত হচ্ছে, যার ফলে আপনার আকাঙ্ক্ষাটি অবদমিতই থেকে যাচ্ছে। কিন্তু যদি আপনার আকাঙ্ক্ষার মাত্রা অনেক বেশি থাকে? আপনার মানসিকতা যদি এমন হয় যে কাজটি আপনাকে করতেই হবে? তাহলেও কি অবচেতন মনের নেতিবাচক আবেগ আপনাকে পিছু টানতে পারবে? পারবে না।

আকাঙ্ক্ষা হতে হবে এতটাই তীব্র

পাউলো কোয়েলহো লিখেছিলেন, “যখন তুমি কিছু চাও, গোটা দুনিয়া যোগসাজশে লিপ্ত হয় সেটি তোমাকে পাইয়ে দিতে।” এখন কথা হলো, শুধু চাইলেই কি হবে? প্রতিদিন কত ছোটখাট চাওয়াই তো আপনার মনের কোণে উঁকি দিয়ে যায়, আবার পরমুহূর্তে আপনি সেগুলোর কথা ভুলেও যান। সুতরাং, শুধু চাইলেই হবে না, মন থেকে চাইতে হবে। চাওয়ার মাত্রা যদি অনেক বেশি হয়, অর্থাৎ আকাঙ্ক্ষা যদি খুব তীব্র হয়, তাহলেই অবচেতন মনকে থামানো যাবে কু-ডাক ডাকা থেকে। তাছাড়া আপনার আকাঙ্ক্ষার মাত্রা যখন অনেক বেশি হবে, তখন আপনার অবচেতন মনের কাছেও অন্য সব আবেগের চেয়ে আপনার আকাঙ্ক্ষা পূরণকেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হবে।

কৃতজ্ঞ হওয়া

আপনি খুব করে সুখী হতে চাইলেও, অবচেতন মন যে আপনাকে সুখী হতে দেয় না, এর কারণ হলো আপনার অবচেতন মন আপনার জীবনধারা নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয়। আপনি নিজে যে কাজে নিয়োজিত আছেন, সেই কাজে হয়তো আপনি সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ফলটিই লাভ করছেন। কিন্তু তারপরও অবচেতন মনে আপনি অসুখী, কারণ আপনি নিজেকে কেবল নিজের মাপকাঠিতে বিচার করছেন না, নিজেকে তুলনা করছেন আশেপাশের অন্য আরো অনেকের সাথেও। আপনার আশেপাশে যারা আপনার চেয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি সফল, তাদের দেখে আপনি হীনম্মন্যতায় ভুগছেন। এই হীনম্মন্যতাবোধ আপনার অবচেতন মনে স্থায়ীভাবে জায়গা করে নিচ্ছে। ফলে আপনি নিজের ব্যক্তিজীবনে পূর্ণতা পেলেও, অবচেতন মন ভাবছে এখনো আপনার অনেক কিছু পাওয়াই বাকি, এবং সেগুলো না পাওয়া পর্যন্ত সে সুখী হবে না।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হবে সৃষ্টিকর্তার কাছে

এই সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য সর্বপ্রথম প্রয়োজন নিজের সাফল্য ও সুখকে স্বীকার করা। বিষয়টি এমন নয় যে সবার সামনে আপনাকে অহংকার করে বেড়াতে হবে। স্রেফ নিজের অবচেতন মনকে এটি বোঝাতে হবে যে আপনি আসলেই সফল ও সুখী। এজন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে বারবার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা যেতে পারে। প্রার্থনার মাধ্যমে এই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারেন আপনি। তাছাড়া আরো একটি কার্যকর উপায় হলো একটি নোটবুকে নিজের সাফল্যের খতিয়ান টুকে রাখা। প্রতিদিন আপনার সাথে যা যা ভালো হয়েছে, সেগুলো আপনি ওই নোটবুকে লিখে রাখতে পারেন, এবং মাঝেমাঝেই নোটবুকটির পাতা উল্টাতে পারেন। এই কাজটি নিয়মিত করতে থাকলে একপর্যায়ে আপনার অবচেতন মনও বুঝে যাবে যে আপনি আসলেই সুখে আছেন। তখন আর আপনাকে অহেতুক মনগড়া দুঃখবোধে পীড়িত হতে হবে না।

কল্পনা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

কথায় আছে, অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা। আসলেই তা-ই। আপনি যখন কোনো কাজে ব্যস্ত থাকেন, তখন কিন্তু অবচেতন মন এসে আপনাকে বিরক্ত করার সুযোগ কম পায়। কেননা, তখন সচেতনভাবেই আপনি কাজটিতে পরিপূর্ণ একাগ্রতা দান করতে পারছেন। কিন্তু যখন আপনি অলস সময় কাটান, তখনই আপনার অবচেতন মন বিভিন্ন নেতিবাচক চিন্তার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা পরবর্তীতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়ে উপস্থিত হয়ে আপনাকে জ্বালাতন করতে শুরু করে।

করতে হবে সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় ভবিষ্যতের পরিকল্পনা

তাহলে অবসর সময়ে আপনার কী করা উচিৎ? অবশ্যই নেতিবাচক চিন্তা নয়। বরং আপনার উচিৎ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করা। ভবিষ্যতে কোন কাজটি কীভাবে করবেন তা ভেবে রাখতে পারেন, এবং অবশ্যই সেখানে ব্যর্থতার কথা কল্পনা করবেন না। বরং আপনি ভবিষ্যতে যে কাজগুলো ঠিকভাবে করতে সক্ষম হচ্ছেন, সেই বিষয়টিই আপনাকে কল্পনা করতে হবে। এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই যে আগে থেকে ভালো কিছু ভেবে রাখলে তা কখনো বাস্তবায়িত হবে না। এগুলো নিছকই কুসংস্কার। বরং আপনি যদি আগে থেকেই ভালো কিছু কল্পনা করতে থাকেন, তা নিঃসন্দেহে আপনার আত্মবিশ্বাসকে বহুগুণে বাড়িয়ে দেবে, এবং আপনার অবচেতন মনও তখন উপলব্ধি করতে শুরু করবে যে কাজটি আসলেই আপনার পক্ষে করা সম্ভব। আর এ কথা তো বলাই বাহুল্য, অবচেতন মন যখন সঙ্গে থাকে, সাফল্য লাভের সম্ভাবনাও যায় বেড়ে।