কিম মারা গেলে উত্তর কোরিয়ার নেতৃত্ব দেবে কে?

উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং-উন অসুস্থ। চলতি মাসের শুরুতে তার হার্টে অস্ত্রোপচারের পর থেকে নিজ বাড়িতে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।

এরপর থেকে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের পাশাপাশি নেটদুনিয়ার আগ্রহের কেন্দ্রে এখন উত্তর কোরিয়ার এই শাসক।

এদিকে কিমের শারীরিক অবস্থা সংকাপন্ন- এ তথ্য প্রকাশের পর থেকেই তার পরবর্তী উত্তরাধিকারী খোঁজাখুঁজি শুরু হয়েছে।

তবে কিমের পর তার বোন বা ভাই রাজবংশের দায়িত্ব নেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু কিমের বোন হিসেবে নয়, উত্তর কোরিয়ার রাজনীতিতে এক সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে কিম ইউ-জং। কোরিয়ার রুলিং ওয়ার্কার পার্টির একজন সিনিয়র সদস্য তিনি। সেই সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে ক্ষমতাশীল নারী হিসেবে পরিচিত কিম ইউ-জং।

রাজনীতিতে আগ্রহের জের ধরে গত মাসে কিম ইউ-জং জানান, ভাইয়ের সঙ্গে এখন থেকে মূল সম্মেলনগুলোতে যোগ দেবেন তিনি।

কিম ২০১৭ সালের অক্টোবরে বোন ইউ-জংকে ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য করেন। শুধু তা-ই নয়, চীন সফরেও বোনকে পাশে রেখেছিলেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই ভাই-বোনের সুসম্পর্ক। কৈশোরে তারা পরিবার থেকে দূরে সুইজারল্যান্ডের বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতেন।

অন্যদিকে কিম জং উনের ভাই কিম জং চলের রাজনীতিতে তেমন কোনো আগ্রহ নেই। গানই তার জীবনের অন্যতম আগ্রহের জায়গা। সে হিসেবে কিমের পর রাজবংশের দায়িত্ব আসছে তার বোন কিম ইয়ো জং এর ওপর।

তবে সবকিছু শেষে কিম জং উন কেমন আছেন। তিনি আসলেই কাজে ফিরতে পারবেন কিনা এই নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।

প্রসঙ্গত, গত ১২ এপ্রিল উত্তর কোরিয়ার পূর্ব উপকূলীয় হায়াংসান কাউন্টিতে একটি হাসপাতালে কিমের অস্ত্রোপচার হয়েছে। সিউলভিত্তিক ডেইলি এনকে নামের যে ওয়েবসাইট এমন খবর দিয়েছে, সেটি উত্তর কোরিয়ার পক্ষত্যাগীরা চালাচ্ছে।

খবরে বলা হয়, বর্তমানে মাউন্ট কুমগ্যাং রিসোর্টের একটি বাড়িতে ৩৬ বছর বয়সী এই রাষ্ট্রপ্রধান চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রতিবেদনে অজ্ঞাতনামা সূত্রের বরাত দেয়া হয়েছে।

এছাড়া এতে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য নেই এতে।

আন্তঃসীমান্ত বিষয়াদি নিয়ে কাজ করা দক্ষিণ কোরিয়ার একত্রীকরণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ও এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে।

আর মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএনের খবরে এ বিষয়ে সরাসরি অবগত মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাতের উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনও বিষয়টি নজরদারিতে রেখেছে। অস্ত্রোপচারের পর মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে কিম জং-উন।

তবে কিমের গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম যে খবর দিয়েছে, তা সঠিক নয় বলে মনে করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়েছে কিনা; তা নিয়ে কথা বলতে অস্বীকার করেছেন তিনি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে এমন তথ্য মিলেছে। হোয়াইট হাউসের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প বলেন, আমি মনে করি, ওই খবর অসত্য। পুরনো নথির ওপর ভিত্তি করে ওই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।