রাজশাহীতে কারাগারে বড় ভাইয়ের বদলে ছোট ভাই: অবশেষে পেলেন মুক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের একটি মামলায় বড় ভাই ফজলের বদলে গ্রেপ্তার হওয়া ছোট ভাই সজলকে (৩৫) দায় থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। প্রায় দেড় মাস কারাভোগের পর তাকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

একইসঙ্গে আসামি না হয়েও সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে কেন সজলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল সেজন্য নগরীর শাহমখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদ পারভেজকে শোকজ করা হয়েছে। আগামী সাতদিনের মধ্যে ওসিকে আদালতে হাজির হয়ে জবাব দিতে হবে।

বুধবার (১২ জুন) রাজশাহী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মনসুর আলম এ আদেশ দেন।

রায়ে বলা হয়, সজলের জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্মতারিখ ২৭ মে ১৯৮৪ ও পিতার নাম তোফাজ উদ্দিন রয়েছে। ২০০১ সালে আসামি ফজলের বয়স ছিল ২৭ বছর। বর্তমানে তার বয়স হবে ৪৫ বছর। কিন্তু সজলের জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী তার বর্তমান বয়স ৩৫ বছর।

এ ছাড়া আসামি ফজল মামলার রায়ের আগে একবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তখন তার শারীরিক গঠন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে কারাগারে সংরক্ষণ করা হয়।

সজলের ছয় ভাই-বোন আদালতে এফিডেফিট করে জানায়, দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ফজল দীর্ঘদিন ধরেই নিখোঁজ রয়েছেন। তারা ফজলের কোনো খোঁজ জানেন না। ফজল হিসেবে যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সে আসলে সজল।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোজাফফর হোসেন বলেন, শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হলে ওসির বিরুদ্ধে মামলা হবে। এখানে দু’জন সাক্ষী ওসিকে এফিডেফিট করে দিয়ে বলেছিলেন, এটাই আসামি। তাই ওসির জবাবের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তারপর আদালতই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন।

সজলের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহন কুমার সাহা বলেন, বিনা অপরাধে জেল খাটানোর জন্য ক্ষতিপূরণ আদায়ে মানবাধিকার সংগঠনের মাধ্যমে আদালতে আবেদন করা হবে।

সজল রাজশাহীর ছোট বনগ্রাম পশ্চিমপাড়া মহল্লার তোফাজ উদ্দিনের ছেলে। তার বড় ভাই সেলিম ওরফে ফজল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের একটি মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তার অনুপস্থিতিতে ২০০৯ সালের ২৮ আগস্ট মামলার রায় হয়। এরপর থেকেই সে পলাতক।

ফজলকে ধরতে গত ৩০ এপ্রিল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে সজলদের বাড়িতে অভিযান চালায় শাহমখদুম থানা পুলিশ। ফজলের পরিবর্তে সজলকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ২৬ মে সজল তার আইনজীবীর মাধ্যমে নিজের মুক্তি চেয়ে আদালতে আবেদন করেন।

স/বি