কাটা-ছেঁড়াসহ নানা চিকিৎসা দেন হাসপাতালের নৈশপ্রহরী

হাসপাতালে ইনজেকশন পুশ, কাটা-ছেঁড়াসহ নানা ধরনের চিকিৎসা প্রদান করেন নৈশপ্রহরী আ. রশিদ। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পাগলা বাজারে মঙ্গলবার বিকালে ব্যবসায়ীদের হামলায় স্থানীয় অনলাইন পত্রিকার দুই সাংবাদিক আহত হলে তাদের চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল ১০০ শয্যা হাসপাতালে। তখনই ঘটে এ ঘটনা।

সেখানে জরুরি বিভাগে ফয়সাল নামে এক সাংবাদিককে ইনজেকশন পুশ করার সময় ছবি তুলেন অন্য সাংবাদিকরা। তখন কেউ বুঝতে পারেননি ইনজেকশন পুশ করা ব্যক্তিটি ডাক্তার নয়। ওই ছবিটি বুধবার যখন বিভিন্ন স্থানীয় প্রিন্ট ও অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশ হয় তখন প্রথমে হাসপাতালে শুরু হয় সমালোচনা।

সেখান থেকে পুরো নারায়ণগঞ্জে ছড়িয়ে পড়ে সমালোচনার ঝড়। নৈশপ্রহরী আ. রশিদ একটি বেসরকারি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন বলে হাসপাতাল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

হাসপাতালের একাধিক সূত্র জানায়, আ. রশিদের দায়িত্ব হলো চিকিৎসকরা ডিউটি শেষে অফিস থেকে বের হলে তাদের কক্ষ তালাবদ্ধ আছে কিনা তা দেখা। হাসপাতালের চারপাশ ঘুরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কিন্তু আ. রশিদ তা না করে জরুরি বিভাগে চিকিৎসকদের সঙ্গে বসে আড্ডা দেন।

এতে তিনি ইনজেকশন পুশ করা এবং কাটা-ছেঁড়া সেলাই করা শিখেছেন। সম্প্রতি হাসপাতালের অনেকের চোখেই পড়েছে রশিদ জরুরি বিভাগে গুরুত্বপূর্ণ রোগীদের ইনজেকশন পুশ ও কাটা-ছেঁড়া সেলাই করছেন এবং রোগীদের কাছ থেকে চা-পানের খরচের নামে টাকা নিচ্ছেন।

হাসপাতাল সূত্র আরও জানায়, নৈশপ্রহরীদের অনিয়মের কারণে সম্প্রতি হাসপাতালের একাধিক থাই জানালা চুরি হয়েছে। এতে অনেক জানালা না থাকায় বৃষ্টির পানি ও ধুলোবালি ভিতরে প্রবেশ করে হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে জানালা চুরি হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এ বিষয়ে নৈশপ্রহরী আ. রশিদ  বলেন, পিনা অ্যাসোসিয়েট নামে একটি বেসরকারি কোম্পানির মাধ্যমে ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে ওয়ার্ড বয়, ওটি বয় ও ৪ জন নৈশপ্রহরীসহ আমরা ৩০ জন চাকরি করি। ৬-৭ মাস পরপর আমাদের বেতন আসে। এজন্য হাসপাতালের ব্রাদারদের মাধ্যমে জরুরি বিভাগে চিকিৎসাসেবা দিতাম। ২০-২৫ দিন আগে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিষেধ করায় এখন জরুরি বিভাগে আর চিকিৎসা দেই না।

ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আসাদুজ্জামান বলেন, মঙ্গলবার বিকালে জরুরি বিভাগে কোন চিকিৎসক ছিলেন তা রেজিস্টার দেখে বলতে হবে, নাম মনে নেই। তবে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

সূত্রঃ যুগান্তর