করোনা প্রতিরোধে তাক লাগাল দক্ষিণ আফ্রিকা

সিল্কসিটিনিউজ ডেস্কঃ 

করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারি প্রতিরোধে দক্ষিণ আফ্রিকার পদক্ষেপগুলো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।

লকডাউনের এক সপ্তাহ পার হয়েছে দেশটিতে। যেখানে ঘরের বাইরে কেউ জগিং করতে বের হয়নি, কোনো অ্যালকোহল কিংবা সিগারেট বিক্রি হয়নি, পোষা কুকুর নিয়ে কেউ হাঁটতে বের হননি, আর অতিপ্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হননি। এছাড়া লকডাউন লঙ্ঘন করলে কারাদণ্ড কিংবা বড় অঙ্কের অর্থ জরিমানা গুণতে হয়েছে মানুষকে।

এরমধ্যেই ৪৭ হাজার মানুষকে পরীক্ষার পাশাপাশি ৬৭টি ভ্রাম্যমাণ পরীক্ষা ইউনিটও চালু করা হয়েছে দেশটিতে। শিগগিরই দেশটি দিনে ৩০ হাজার মানুষকে পরীক্ষা করার সক্ষমতা অর্জনের দিকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় এখন পর্যন্ত ৯ জন মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন এক হাজার ৫০৫ জন।

ভাইরাসটির বিস্তার রোধে বিশ্বের বহু দেশের তুলনায় খুবই দ্রুত দক্ষতার সঙ্গে পদক্ষেপ নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাপোসা বেশ সাফল্য অর্জন করেছেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জিউলি এমখিজাও তার ঐকান্তিক ও উদ্যমী কার্যক্রম দিয়ে বৈশ্বিক প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তিনি বলেন, এখন যে পরিস্থিতিতে আছি, তা হচ্ছে বিপর্যয়কর ঝড়ের আগে শান্ত অবস্থা। যদি আমরা দ্রুত পদক্ষেপ না নিই, তবে দলে দলে করোনায় আক্রান্ত হবেন। বিপর্যয় নেমে আসার আগে আর কোনো আগাম সতর্কতা থাকবে না।

তবে করোনারোধের কার্যক্রমে দক্ষিণ আফ্রিকার সবকিছুই যে ইতিবাচক তা বলা যাচ্ছে না। যেমন তিন সপ্তাহের লকডাউন বাস্তবায়নে সেনাবাহিনী হিংস্র হয়ে উঠেছে। বাণিজ্যিক রাজধানী জোহানেসবার্গসহ অন্যান্য এলাকায় সড়কে বেসামরিক লোকজনের অপমান করা ও পেটানো হচ্ছে। এমনকি কোথাও কোথাও লোকজনকে গুলি করার মতো ঘটনাও ঘটেছে।

কিছু কিছু নীতির ক্ষেত্রে বিভ্রান্তিও রয়েছে। দেশটিতে কয়েকজন অদক্ষ মন্ত্রী রয়েছেন, যারা মানুষকে বার্তা দেয়ার ক্ষেত্রে অদক্ষতার পরিচয় দিচ্ছে। অনেক সময় বক্তব্য দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে নিতেও দেখা গেছে।

তবে দক্ষিণ আফ্রিকার দরিদ্র, জনবসতিপূর্ণ গ্রামগুলোতে কার্যকর স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বাস্তবায়নে জোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। অনেকেরই আশঙ্কা, ভাইরাসটি এখনও বিপর্যয় নিয়ে আসতে পারে।

তবে মনে করা হচ্ছে দেশটির স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সত্যিকারের প্রতিকূলতা এখনো শুরু হয়নি। বিশ্বের সবচেয়ে অসম সমাজ ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে। হার-জিত যা-ই হোক না কেন, দরিদ্র লোকজনকেই লড়াইটা করে যেতে হবে।